আবারও ছাত্র হত্যা-রক্তপাত কি বন্ধ হবে না?
আবারও রক্ত ঝরল ক্যাম্পাসে। রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নিজ সংগঠনের কর্মীদের আঘাতে আহত হয়ে মারা গেলেন মেধাবী ছাত্র আবদুল আজিজ খান সজীব। গত জানুয়ারিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের পর সজীবের মৃত্যুতে আবারও শোকের ছায়া নেমে এলো ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে।
জুবায়ের হত্যার মতো সজীব হত্যাও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফল। উপদলীয় কোন্দলের জের। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে এমন সংঘর্ষ-সংঘাতজনিত মৃত্যু অবশ্যই নিন্দনীয়। কোনো ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে নিজের সংগঠনের সহকর্মী ও সহপাঠীর ওপর এমন নির্মমভাবে চড়াও হতে পারে_ তা অভাবনীয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এমন অভাবনীয় ঘটনাই বারবার ঘটছে। নাগরিকদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে বহু তাগাদা এসেছে। সংগঠনের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ছাত্রলীগকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ফেলে সংগঠন ও ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে আনার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো তাগাদা, সমালোচনাতেই সাড়া মেলেনি। বরং ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের জের ধরেই বন্ধ হয়েছে একের পর এক ক্যাম্পাস। সম্প্রতি এমন বেশ কিছু উদাহরণ অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এবার সহপাঠীদের নির্মম আঘাতে আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হলো সজীবকে। প্রথমে গুরুতর আহত অবস্থায় সজীবকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত মৃত্যুপথযাত্রী এক ব্যক্তিকে কেন চিকিৎসকরা বাড়িতে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন, তা বোধগম্য নয়। তার চেয়েও অবোধ্য ছাত্রলীগের মারমুখী আচরণ। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটি কেন বারবার এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে_ সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। সরকারের ভালো কাজগুলো বারবার এ সংগঠনটির সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও হত্যার ঘটনায় ম্লান হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, একের পর এক ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন তীব্র ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ অবস্থায় সন্ত্রাস সৃষ্টি, হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি ছাত্রলীগের এ প্রবণতা রোধ করা। এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সচেতন হলে ক্যাম্পাসগুলোতে স্বস্তি ফিরে আসতে পারে।
No comments