আবার আসছে গণমুখী বাজেট-প্রয়োজন আধুনিকায়ন
জাতির পরতে পরতে ‘বাজেট’ জড়িয়ে আছে। যেখানেই যান, এই শব্দটা আপনাকে শুনতেই হবে। তরমুজ থেকে শুরু করে কম্পিউটার, যেটাই কিনতে যাবেন, দোকানদার হাসিমুখে একটা প্রশ্ন করবেই—‘ভাই, আপনার বাজেট কত?’ দোকানদারকে বাজেট বলতেই সে তরমুজটা আগের জায়গায় রেখে বিরক্তমুখে বলবে, ‘এত কমে হইব না, বাজেট
বাড়াইলে আইসেন।’ স্ত্রীকে নিয়ে হানিমুনে যাবেন? সেখানেও আসে বাজেটের প্রশ্ন। এমনকি বাংলা সিনেমা তৈরির আগেও আসে বাজেটের চিন্তা। কম বাজেটে কত বাজে ছবি বানানো যায়, সেটা নিয়ে নাকি একটা প্রতিযোগিতাও হয় পরিচালকদের মধ্যে। তবে ব্যক্তিগত বাজেট নিয়ে কারও মাথাব্যথা থাক আর না থাক, দেশের বাজেটের কথা উঠলেই সবার মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। এটা এমন এক বাজেট, যা ঘোষণার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব জিনিসপত্রের দাম জেট প্লেনের গতিতে বেড়ে যায়। আমি বুঝি না, যে বাজেট ঘোষণা করলে সবকিছুর দাম বেড়ে যাবে, সেই বাজেট ঘোষণা করার কী দরকার? এ জন্যই অনেকে বাজেটকে ভালোভাবে নিতে পারে না। কর্তৃপক্ষ গণমুখী বাজেট বললেও ঘোষণার পরপরই কেউ কেউ সেটাকে ‘গরিব মারা বাজেট’ উপাধি দিতে তৎপর হয়ে ওঠে। তবে কর্তৃপক্ষের তাতে কিছু যায়-আসে না। আর এ জন্যই বাজেটের আধুনিকায়ন নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাই নেই। সেই পুরোনো কায়দায় অর্থমন্ত্রী কালো ব্রিফকেস নিয়ে বাজেট ঘোষণা করতে আসবেন। অথচ চাইলেই ব্রিফকেস-পদ্ধতির অবসান ঘটানো যায়। এখন মোবাইলের যুগ, সে ক্ষেত্রে মোবাইল কোম্পানিগুলো দুই-তিন লাফ দিয়ে এগিয়ে আসবে। যে কেউ তার হ্যান্ডসেট থেকে নির্দিষ্ট নম্বরে ডায়াল করলেই ভেসে আসবে নারীকণ্ঠ—বাংলায় বাজেট শুনতে চাইলে এক চাপুন, ফর ইংলিশ প্রেস টু। কোনগুলোর দাম বেড়েছে শুনতে এক চাপুন, কোনগুলোর দাম কমেছে শুনতে দুই চাপুন, শিক্ষা ক্ষেত্রের বাজেট শুনতে তিন চাপুন...আহা, কী চমৎকার পদ্ধতি! এখনো কদিন সময় আছে। কর্তৃপক্ষ চাইলেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে কর্তৃপক্ষের সমস্যা হলো, তারা ভালো জিনিসের দাম দেয় না। হয়তো তাদের বাজেট কম। যা-ই হোক, তার পরও সংসদ মিলনায়তন এবং সংসদ মিলনায়তনের বাইরে যে যেখানে যে অবস্থায় বাজেট অধিবেশন উপভোগ করবেন, তাঁদের সবাইকে জানাই সাদর সম্ভাষণ। হ্যাপি বাজেট টু ইউ!
No comments