রাষ্ট্রপতির সংলাপই হোক সমঝোতার সূচনা-বিএনপির সঠিক সিদ্ধান্ত
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সংলাপের আমন্ত্রণে প্রধান বিরোধী দলের ইতিবাচক সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে কেবল নিয়মরক্ষার জন্য নয়, সংলাপকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে সংশ্লিষ্ট সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন, এটাই প্রত্যাশিত। গত সোমবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে চারদলীয় জোটের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সংলাপে যোগদানের সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংলাপে তারা মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিষয়টি তুলে ধরবে। এ ছাড়া নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও বিরোধী দলের ওপর সরকারের দমনপীড়ন বন্ধে তাঁর হস্তক্ষেপ কামনা করা হবে। আমরা পুরো বিষয়টি ইতিবাচক বলে মনে করি। সংলাপের উদ্যোগে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার ছিল কি না, সেই প্রশ্ন তুলে বিএনপি ভুল করেছিল। কারণ, সংবিধানেই লেখা আছে, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে স্থান লাভ করবেন। এর অর্থ হলো, সংসদীয় গণতন্ত্রের ঐতিহ্য অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক-প্রধান। বিরোধী দল যদি সংসদীয় গণতন্ত্র মানে, তাহলে তাদের ‘হার ম্যাজেস্টি’স লয়াল অপোজিশন’ কথাটিও বিবেচনায় নিতে হবে। রাষ্ট্রপতিরই সবচেয়ে বেশি এখতিয়ার আছে এ ধরনের সংলাপ আহ্বানের। বিএনপির একজন মুখপাত্র রাষ্ট্রপতিকে ‘সর্বজনশ্রদ্ধেয়’ হিসেবে উল্লেখ করায় আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি। খাদের কিনারে যাওয়ার আগেই আমাদের একটা মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে। তবে দুই বড় দলকে ‘কৌশলগত’ লড়াইয়ে মত্ত থাকলে চলবে না।
রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, সব দলের মতামতের ভিত্তিতে তিনি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চান। তিনি বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও বিভিন্ন দলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক হলে এ ব্যাপারে একটি সমঝোতায় পৌঁছা অসম্ভব নয়। অতীতে ক্ষমতাসীনেরা নানাভাবে রাষ্ট্রপতি পদটির অবমূল্যায়ন করেছে। ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কীভাবে আরও ত্রুটিমুক্ত করা যায়, কীভাবে পারস্পরিক সংশয় ও অবিশ্বাস দূর করা যায়—সেসব দিকেই সবার মনোযোগ দিতে হবে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ ক্ষেত্রে দুটি বড় দলের কেউ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের সংলাপে যোগ দিলেও মতামত দেয়নি। আর বিএনপি সংলাপেই যায়নি।
আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হলে নির্বাচনকালে কোন সরকার ক্ষমতায় থাকবে, আলোচনার মাধ্যমে সেই বিতর্কেরও অবসান হতে পারে। দেশবাসী চায়, সংলাপ তথা আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হোক। গণতন্ত্রের মূল কথাও তা-ই। রাজপথের সমাধান কাউকে সাময়িকভাবে বিজয়ী করলেও শেষ বিচারে তা কারও জন্যই কল্যাণকর হয় না। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল—উভয়কে ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করতে বলব।
রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, সব দলের মতামতের ভিত্তিতে তিনি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চান। তিনি বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও বিভিন্ন দলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনেরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক হলে এ ব্যাপারে একটি সমঝোতায় পৌঁছা অসম্ভব নয়। অতীতে ক্ষমতাসীনেরা নানাভাবে রাষ্ট্রপতি পদটির অবমূল্যায়ন করেছে। ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কীভাবে আরও ত্রুটিমুক্ত করা যায়, কীভাবে পারস্পরিক সংশয় ও অবিশ্বাস দূর করা যায়—সেসব দিকেই সবার মনোযোগ দিতে হবে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ ক্ষেত্রে দুটি বড় দলের কেউ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের সংলাপে যোগ দিলেও মতামত দেয়নি। আর বিএনপি সংলাপেই যায়নি।
আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে একটা মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হলে নির্বাচনকালে কোন সরকার ক্ষমতায় থাকবে, আলোচনার মাধ্যমে সেই বিতর্কেরও অবসান হতে পারে। দেশবাসী চায়, সংলাপ তথা আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হোক। গণতন্ত্রের মূল কথাও তা-ই। রাজপথের সমাধান কাউকে সাময়িকভাবে বিজয়ী করলেও শেষ বিচারে তা কারও জন্যই কল্যাণকর হয় না। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল—উভয়কে ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করতে বলব।
No comments