সিরিয়ায় আরব পর্যবেক্ষকেরা-সংঘাতবিক্ষুব্ধ শহর পরিদর্শন শুরু


শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সিরিয়া সরকারের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে আরব লিগের পর্যবেক্ষকেরা সিরিয়া সফর শুরু করেছেন। গত সোমবার রাতে পর্যবেক্ষকদের একটি দল সিরিয়ায় পৌঁছায়। পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা গতকাল মঙ্গলবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল হোমস নগর পরিদর্শন করেছেন। পর্যায়ক্রমে সংঘাতবিক্ষুব্ধ অপর দুই নগর হামা ও ইদলিবও তাঁরা পরিদর্শন করবেন। এদিকে গতকালও হোমসে সরকারবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।


বিক্ষোভে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। আরব লিগের পর্যবেক্ষক দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুদানের সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জেনারেল মোহাম্মেদ আহমেদ মুস্তাফা আল-দাবি। সিরিয়া কর্তৃপক্ষ পর্যবেক্ষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন বলে মন্তব্য করে তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সিরীয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে খুবই সহযোগিতামূলক আচরণ করছে।’
সিরিয়ার দুনিয়া টেলিভিশন বলেছে, পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা হোমসের গভর্নর ঘাসান আবদেল আলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে হামা ও ইদলিব নগর কবে নাগাদ তাঁরা পরিদর্শন করবেন, সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, হোমসে আরব লিগের শান্তি পর্যবেক্ষক দলের আগমনকে সামনে রেখে পার্শ্ববর্তী শহর বাবা আমরো থেকে সিরিয়ার সেনাবাহিনী তাদের ভারী অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নিয়েছে। কিছু অস্ত্র রেখেছে লুকিয়ে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, সকাল সাতটা নাগাদ বাবা আমরো থেকে ১১টি ট্যাংক প্রত্যাহার করা হয়।
আরব লিগের শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিরিয়ার সংঘাতবিক্ষুব্ধ নগরগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সিরীয় সরকার ২ নভেম্বর আরব লিগের পর্যবেক্ষক দলকে এ পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়।
শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী, সিরিয়ার বিভিন্ন শহর ও আবাসিক এলাকা থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার, বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন বন্ধ ও রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কিন্তু আরব লিগের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সইয়ের পরও প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকার বিক্ষোভ দমনে আরও সহিংস হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সারা দেশে ৩৪ জন বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, এর মধ্যে বাবা আমরোতে ভারী মেশিনগান ও রকেট হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত তিন দিনে বিভিন্ন শহরে রকেট হামলা বেড়ে গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ থেকে শুরু সরকারবিরোধী এ আন্দোলনে এ পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি লোক মারা গেছে।
বিক্ষোভ দমনে আসাদ সরকার সবচেয়ে বেশি দমনপীড়ন চালিয়েছে হোমসে। বিরোধীরা সরকারের এ দমনপীড়ন বন্ধে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
সরকারবিরোধী জোট সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের প্রধান বুরহান ঘালিউম এ ট্র্যাজেডি বন্ধে জাতিসংঘ ও আরব লিগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আরব লিগের শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের দাবি করছেন। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.