হাক্কানির বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা নমনীয় কেন? by হামিদ মির
ইসলামাবাদের সঙ্গে তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) একটি শান্তিচুক্তি করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে আলোচিত হাক্কানি নেটওয়ার্ক। এ উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের উপজাতিদের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি খলিল হাক্কানির সঙ্গে দেখাও করেছে। খলিল হাক্কানি উত্তর আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশের প্রভাবশালী নেতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানির ভাই। উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তানপন্থী ও বিরোধী জঙ্গিদের মধ্যে শান্তি আনতে উপজাতি প্রতিনিধিরা খলিল হাক্কানিকে তাঁর প্রভাব কাজে লাগানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এই জ্যেষ্ঠ উপজাতি নেতারা পাকিস্তানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বৃদ্ধির বিষয়ে বেশ চিন্তিত। তাঁদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অভিযান শুরু করতে পারে।
খলিল হাক্কানি এ বিষয়ে তাঁর ভাই সিরাজুদ্দিন হাক্কানির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এরপর তিনি পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার জন্য টিটিপির কিছু নেতাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন। প্রতিনিধিদল জানতে পেরেছে, টিটিপি নেতারা এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
টিটিপির প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ ওরাকজাইয়ের কোথাও লুকিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর প্রতি যথেষ্ট আস্থাশীল না হওয়া সত্ত্বেও হাকিমুল্লাহ মেহসুদ সম্প্রতি জামিয়েত-ই উলেমা ইসলামের নেতা মাওলানা ফজলুর রেহমানের কাছে পাঠানো এক বার্তায় জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণ ছাড়া তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে শান্তির কথা বিবেচনা করতে পারেন।
মাওলানা ফজলুর রহমান এ বিষয়টি সরকারের কাছে জানিয়েছেন। কিন্তু টিটিপির সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য সরকারবিরোধীদের কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাশা করে।
টিটিপির কিছু অংশ পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ করে আইএসআইকে বিশ্বাস করে না। এই সন্দেহপ্রবণ নেতারা আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশে লুকিয়ে আছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এ অংশের নেতারা আফগানিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।
কাবুলের সূত্র দাবি করেছে, হাকিমুল্লাহ মেহসুদের দলের উপপ্রধান মৌলবি ফকির মুহাম্মদ কুনার প্রদেশের আসাদাবাদের কাছে কোনো এলাকায় আছেন। তিনি সম্প্রতি কাবুল থেকে দিল্লি সফর করেছেন। ২০০৬ সালে বাজুরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চলে যান। তিনি সোয়াতের মাওলানা ফায়জুল্লার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এখন তিনি সোয়াত ও বাজুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
মৌলবি ফকিরের অনুগতরা সম্প্রতি বাজুর থেকে বেশ কিছু পাকিস্তানি শিশুকে অপহরণ করে আফগান গোয়েন্দাদের তত্ত্বাবধানে কুনারে বন্দী করে রেখেছে। দিরের পাকিস্তানি সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশ কিছু হামলায় মৌলবি ফকির জড়িত ছিলেন। তিনি কুনার থেকে বেশ কিছু হামলা পরিচালনা করেছেন। যদিও সেখানে মার্কিন সেনাদের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে।
মৌলবি ফকির পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি প্রয়াসের বিরোধী। তবে টিটিপির দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের নেতা মৌলানা ওয়ালিউর রেহমান মেহসুদ সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সমর্থন করেন।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের কুরামে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে শান্তিচুক্তিকেও ওয়ালিউর রেহমান সমর্থন করেন। হাক্কানি নেটওয়ার্কের কারণেই ওই শান্তি উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল। প্রাথমিকভাবে টিটিপি খলিল হাক্কানির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিল। কারণ, টিটিপির কিছু স্থানীয় কমান্ডার কুরামে টাকার জন্য অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। মূলত এ কারণে তাঁরা শান্তিচুক্তিতে আগ্রহী ছিল না। তবে তিনি এ অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা ফজল সাঈদ হাক্কানির মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের একটা পথ বের করেন। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষও শান্তিচুক্তি করার ব্যাপারে ফজলকে সহায়তা করছে।
সিরাজুদ্দিন হাক্কানির ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে, আফগান গোয়েন্দারা পাকিস্তানের কুরামে হস্তক্ষেপ করছেন। একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তাঁরা বিভিন্ন উপজাতিদের অস্ত্র সরবরাহ করছেন।
খবর বেরিয়েছে, সিরাজুদ্দিন হাক্কানিকে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই পাকতিয়া প্রদেশের গভর্নর করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, আফগান ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছে।
প্রেসিডেন্ট কারজাই তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিত করেছেন। এরপরই গতকাল মঙ্গলবার তিনি দিল্লি সফরে গেছেন। দিল্লিতে তাঁর এই সফর ইসলামাবাদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। আফগানিস্তানের ওপর দিল্লির প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকিস্তান যথারীতি ক্ষুব্ধ। আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের বর্তমান ভারত সফর এবং দিল্লির সঙ্গে মৌলবি ফকির মুহাম্মদের যোগাযোগ ইসলামাবাদের সঙ্গে কাবুলের ভুল বোঝাবুঝিকে আরও উসকে দেবে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিদেশি চাপে তাঁরা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা করবেন না। কারণ, তা তাঁদের দেশের ভেতরে আরও শত্রুর জন্ম দেবে। আর আফগান গোয়েন্দারা দ্রুতই এই শত্রুদের নিজেদের মতো ব্যবহার করবে।
টিটিপির প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ ওরাকজাইয়ের কোথাও লুকিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর প্রতি যথেষ্ট আস্থাশীল না হওয়া সত্ত্বেও হাকিমুল্লাহ মেহসুদ সম্প্রতি জামিয়েত-ই উলেমা ইসলামের নেতা মাওলানা ফজলুর রেহমানের কাছে পাঠানো এক বার্তায় জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণ ছাড়া তাঁরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে শান্তির কথা বিবেচনা করতে পারেন।
মাওলানা ফজলুর রহমান এ বিষয়টি সরকারের কাছে জানিয়েছেন। কিন্তু টিটিপির সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য সরকারবিরোধীদের কাছ থেকে সমর্থন প্রত্যাশা করে।
টিটিপির কিছু অংশ পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ করে আইএসআইকে বিশ্বাস করে না। এই সন্দেহপ্রবণ নেতারা আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশে লুকিয়ে আছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এ অংশের নেতারা আফগানিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।
কাবুলের সূত্র দাবি করেছে, হাকিমুল্লাহ মেহসুদের দলের উপপ্রধান মৌলবি ফকির মুহাম্মদ কুনার প্রদেশের আসাদাবাদের কাছে কোনো এলাকায় আছেন। তিনি সম্প্রতি কাবুল থেকে দিল্লি সফর করেছেন। ২০০৬ সালে বাজুরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চলে যান। তিনি সোয়াতের মাওলানা ফায়জুল্লার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এখন তিনি সোয়াত ও বাজুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।
মৌলবি ফকিরের অনুগতরা সম্প্রতি বাজুর থেকে বেশ কিছু পাকিস্তানি শিশুকে অপহরণ করে আফগান গোয়েন্দাদের তত্ত্বাবধানে কুনারে বন্দী করে রেখেছে। দিরের পাকিস্তানি সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশ কিছু হামলায় মৌলবি ফকির জড়িত ছিলেন। তিনি কুনার থেকে বেশ কিছু হামলা পরিচালনা করেছেন। যদিও সেখানে মার্কিন সেনাদের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে।
মৌলবি ফকির পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে শান্তি প্রয়াসের বিরোধী। তবে টিটিপির দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের নেতা মৌলানা ওয়ালিউর রেহমান মেহসুদ সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সমর্থন করেন।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের কুরামে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে শান্তিচুক্তিকেও ওয়ালিউর রেহমান সমর্থন করেন। হাক্কানি নেটওয়ার্কের কারণেই ওই শান্তি উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল। প্রাথমিকভাবে টিটিপি খলিল হাক্কানির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিল। কারণ, টিটিপির কিছু স্থানীয় কমান্ডার কুরামে টাকার জন্য অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। মূলত এ কারণে তাঁরা শান্তিচুক্তিতে আগ্রহী ছিল না। তবে তিনি এ অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতা ফজল সাঈদ হাক্কানির মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের একটা পথ বের করেন। পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষও শান্তিচুক্তি করার ব্যাপারে ফজলকে সহায়তা করছে।
সিরাজুদ্দিন হাক্কানির ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে, আফগান গোয়েন্দারা পাকিস্তানের কুরামে হস্তক্ষেপ করছেন। একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তাঁরা বিভিন্ন উপজাতিদের অস্ত্র সরবরাহ করছেন।
খবর বেরিয়েছে, সিরাজুদ্দিন হাক্কানিকে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই পাকতিয়া প্রদেশের গভর্নর করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন, আফগান ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছে।
প্রেসিডেন্ট কারজাই তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিত করেছেন। এরপরই গতকাল মঙ্গলবার তিনি দিল্লি সফরে গেছেন। দিল্লিতে তাঁর এই সফর ইসলামাবাদের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। আফগানিস্তানের ওপর দিল্লির প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় পাকিস্তান যথারীতি ক্ষুব্ধ। আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের বর্তমান ভারত সফর এবং দিল্লির সঙ্গে মৌলবি ফকির মুহাম্মদের যোগাযোগ ইসলামাবাদের সঙ্গে কাবুলের ভুল বোঝাবুঝিকে আরও উসকে দেবে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিদেশি চাপে তাঁরা উত্তর ওয়াজিরিস্তানে কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা করবেন না। কারণ, তা তাঁদের দেশের ভেতরে আরও শত্রুর জন্ম দেবে। আর আফগান গোয়েন্দারা দ্রুতই এই শত্রুদের নিজেদের মতো ব্যবহার করবে।
No comments