সেরা' দল গড়ার ঝক্কি
রাজপথে প্রাণপণ ছোটা প্রায় সব ট্রাকের পেছনেই লেখা থাকে, 'আল্লাহর নামে চলিলাম।' নিরাপদে গন্তব্যে পেঁৗছানোয় সৃষ্টিকর্তার কৃপা তাঁদের সত্যি সত্যিই ভীষণ দরকার। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জাতীয় নির্বাচকদের যেন একই হাল! একটা দল ঘোষণার পর থেকেই স্নুায়ুচাপে ভুগতে দেখা যায় তাঁদের; যেন সিরিজটা ভালোভাবে শেষ হয়। যেন দলটা বেসামাল ট্রাকের মতো উল্টে না পড়ে। বর্তমান নির্বাচক আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন এবং হাবিবুল বাশারের প্রার্থনাজুড়ে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ।
তবে আগামী তিন মাসে তাঁদের এ অবস্থা পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। এ কারণে নতুন অফিস কক্ষে প্রতিদিনই আসেন ঝরঝরে আকরাম খানরা। ফেরার পথে ক্লান্তির পাশে কপালে চিন্তার ভাঁজ সবার। নির্বাচকদের দিনকাল আর আগের মতো নেই। অতীতে স্রেফ সম্মানের কথা ভেবে সাবেক ক্রিকেটাররা নির্বাচক হতেন। বেতন-ভাতা বলে কিচ্ছু ছিল না। সে কারণে তাঁদের ওপর নজরদারিও ছিল না। কিন্তু ফারুক আহমেদ যুগে বিসিবির পে-রোলে নির্বাচকদের নামও ওঠে। বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। দায়বদ্ধতাও। এখন যেমন শুধু জাতীয় দল নয়, 'এ', একাডেমী দল গঠনের পাশাপাশি মহিলা ক্রিকেট এবং বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নির্বাচক থাকা সত্ত্বেও যুব দল গঠনে হাত বাড়াতে হয় আকরাম খানদের। অন্যান্য কর্মচারীর মতো তাঁরাও অফিস করছেন ৯-৫টা। এর সঙ্গে যুক্ত আছে প্রত্যাশার চাপ।
নতুন নির্বাচক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ পর্যন্ত মোট কটা দল গঠন করেছেন, তা ঝট করে মনে করতে পারেননি আকরাম খান। পারার কথাও না। শুরুতে উল্লেখ করা দলগুলোর বাইরে বিসিবি কাপ, চার দিনের ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ট্যুর ম্যাচ; অন্তহীন অ্যাসাইনমেন্ট! সে সবে খুব একটা আপত্তি নেই প্রধান নির্বাচক আকরামের, 'কাজ করতে হবে জেনেই এসেছি। তাই এটা নিয়ে অনুযোগের কোনো সুযোগ নেই।' কিন্তু সফর এবং ঘরোয়া সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দল গঠন যে ঝক্কিপূর্ণ, তা অস্বীকার করেননি তিনি, 'দল গড়ার কাজটা তখনই কঠিন হয়ে যায়, যখন একসঙ্গে অনেক খেলা পড়ে।'
যেমন এবার। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হবে ২ নভেম্বর। আর বাংলাদেশ 'এ' দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশে যাত্রা করবে ৩০ অক্টোবর। তা ছাড়া বাংলাদেশ যখন টেস্ট খেলবে, তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে চার দিনের ম্যাচ রয়েছে 'এ' দলের। এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ১৫ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াডের কাউকে 'এ' দলের সঙ্গে জুড়ে দিতে পারছেন না নির্বাচকরা। সমস্যার এখানেই শেষ নয়। 'এ' দলের ক্যারিবীয় সফর শুরু হবে চার দিনের ম্যাচ দিয়ে। আর শেষদিকে রয়েছে ওয়ানডে এবং টোয়েন্টি টোয়েন্টি। নভেম্বরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় ওই পর্বে যে জাতীয় দলের ওয়ানডে স্কোয়াড থেকে কাউকে পাঠাবেন, সেটিও সম্ভব নয়। কারণ প্রায় একই সময়ে ঢাকায় চলে আসবে পাকিস্তান। সেই সফর শুরু হবে ওয়ানডে দিয়ে। আবার আকাশপথে প্রায় দুই দিনের পথ ওয়েস্ট ইন্ডিজে হুট করে কাউকে বিমানে তুলে দেওয়াও সম্ভব নয়। অগত্যা সমঝোতা করে নিয়েছেন আকরাম, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সবার আগে।' তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের জন্য নির্বাচিত ১৪ ক্রিকেটারের বাইরে থেকে গঠিত হবে 'এ' দল। যাঁরা টেস্ট একাদশে জায়গা পাবেন না কিংবা অফ ফর্মে থাকবেন, 'এ' দলের সঙ্গে গিয়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ সে সব ক্রিকেটার পাচ্ছেন না। ওয়ানডে পর্বেও একই ঘটনা ঘটবে।
অবশ্য এই ঝালিয়ে নেওয়া কিংবা প্রস্তুতির মর্ম বোঝার ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষেরই যেন অভাব! সোমবার মিরপুর স্টেডিয়ামে লাল এবং সবুজ দলের মধ্যকার টোয়েন্টি টোয়েন্টি দিবারাত্রির ম্যাচটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর-পূর্ব প্রস্তুতি। টোয়েন্টি টোয়েন্টি নিয়ে অন্ধকারে ডুবে থাকা বাংলাদেশ দল সে সুযোগটা নিল কই? ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বর জায়গাটা উন্মুক্ত পড়ে আছে। কেউ যদি ভালো করে তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। কিন্তু জাতীয় দলের সেরা কম্বিনেশন বেছে নেওয়ার চেষ্টা বাদ দিয়ে হার-জিতকে প্রধান এজেন্ডা করে নেয় দুই দলই। লাল দলের মুশফিকুর রহিম তিন নম্বরে নাঈম ইসলামকে খেলিয়ে শুরুতে চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে তিনি সতর্ক। টোয়েন্টি টোয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পাওয়া ইলিয়াস সানিকে বসিয়ে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠান একাডেমীর তানভির হায়দারকে। জেতার ব্যাপারে সবুজ দল আরো মরিয়া! টোয়েন্টি টোয়েন্টি স্কোয়াডের অলক কাপালি এবং শুভাগত হোম থাকা সত্ত্বেও সবুজ দলের ইনিংসে তিন নম্বরে নামেন মমিনুল হক। আগামীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবার হাততালি কুড়িয়েছেন এ তরুণ। জিতেছে সবুজ দলও। কিন্তু এ জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে বাংলাদেশ কী পেল?
সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অতীতে ফিরতে নারাজ আকরাম খান, 'আরেকটা টোয়েন্টি টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। আশা করি সে ম্যাচে আমরা ভালো একটা কম্বিনেশন পেয়ে যাব।' আগামীকাল ফতুল্লা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় সে ম্যাচে ফিরছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। প্রথম ম্যাচে নাঈম ইসলামের ওপর থেকে তিন নম্বরের আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন অনেকেই। আশরাফুল কি পারবেন সে আস্থা দিতে? নাকি শুভাগত হোম অথবা অলক কাপালি?
এ প্রশ্নের উত্তর জানে শুধু অদৃষ্ট!
নতুন নির্বাচক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ পর্যন্ত মোট কটা দল গঠন করেছেন, তা ঝট করে মনে করতে পারেননি আকরাম খান। পারার কথাও না। শুরুতে উল্লেখ করা দলগুলোর বাইরে বিসিবি কাপ, চার দিনের ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ট্যুর ম্যাচ; অন্তহীন অ্যাসাইনমেন্ট! সে সবে খুব একটা আপত্তি নেই প্রধান নির্বাচক আকরামের, 'কাজ করতে হবে জেনেই এসেছি। তাই এটা নিয়ে অনুযোগের কোনো সুযোগ নেই।' কিন্তু সফর এবং ঘরোয়া সূচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দল গঠন যে ঝক্কিপূর্ণ, তা অস্বীকার করেননি তিনি, 'দল গড়ার কাজটা তখনই কঠিন হয়ে যায়, যখন একসঙ্গে অনেক খেলা পড়ে।'
যেমন এবার। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষ হবে ২ নভেম্বর। আর বাংলাদেশ 'এ' দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশে যাত্রা করবে ৩০ অক্টোবর। তা ছাড়া বাংলাদেশ যখন টেস্ট খেলবে, তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে চার দিনের ম্যাচ রয়েছে 'এ' দলের। এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ১৫ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াডের কাউকে 'এ' দলের সঙ্গে জুড়ে দিতে পারছেন না নির্বাচকরা। সমস্যার এখানেই শেষ নয়। 'এ' দলের ক্যারিবীয় সফর শুরু হবে চার দিনের ম্যাচ দিয়ে। আর শেষদিকে রয়েছে ওয়ানডে এবং টোয়েন্টি টোয়েন্টি। নভেম্বরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় ওই পর্বে যে জাতীয় দলের ওয়ানডে স্কোয়াড থেকে কাউকে পাঠাবেন, সেটিও সম্ভব নয়। কারণ প্রায় একই সময়ে ঢাকায় চলে আসবে পাকিস্তান। সেই সফর শুরু হবে ওয়ানডে দিয়ে। আবার আকাশপথে প্রায় দুই দিনের পথ ওয়েস্ট ইন্ডিজে হুট করে কাউকে বিমানে তুলে দেওয়াও সম্ভব নয়। অগত্যা সমঝোতা করে নিয়েছেন আকরাম, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সবার আগে।' তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের জন্য নির্বাচিত ১৪ ক্রিকেটারের বাইরে থেকে গঠিত হবে 'এ' দল। যাঁরা টেস্ট একাদশে জায়গা পাবেন না কিংবা অফ ফর্মে থাকবেন, 'এ' দলের সঙ্গে গিয়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ সে সব ক্রিকেটার পাচ্ছেন না। ওয়ানডে পর্বেও একই ঘটনা ঘটবে।
অবশ্য এই ঝালিয়ে নেওয়া কিংবা প্রস্তুতির মর্ম বোঝার ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষেরই যেন অভাব! সোমবার মিরপুর স্টেডিয়ামে লাল এবং সবুজ দলের মধ্যকার টোয়েন্টি টোয়েন্টি দিবারাত্রির ম্যাচটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর-পূর্ব প্রস্তুতি। টোয়েন্টি টোয়েন্টি নিয়ে অন্ধকারে ডুবে থাকা বাংলাদেশ দল সে সুযোগটা নিল কই? ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বর জায়গাটা উন্মুক্ত পড়ে আছে। কেউ যদি ভালো করে তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। কিন্তু জাতীয় দলের সেরা কম্বিনেশন বেছে নেওয়ার চেষ্টা বাদ দিয়ে হার-জিতকে প্রধান এজেন্ডা করে নেয় দুই দলই। লাল দলের মুশফিকুর রহিম তিন নম্বরে নাঈম ইসলামকে খেলিয়ে শুরুতে চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে তিনি সতর্ক। টোয়েন্টি টোয়েন্টি স্কোয়াডে ডাক পাওয়া ইলিয়াস সানিকে বসিয়ে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে পাঠান একাডেমীর তানভির হায়দারকে। জেতার ব্যাপারে সবুজ দল আরো মরিয়া! টোয়েন্টি টোয়েন্টি স্কোয়াডের অলক কাপালি এবং শুভাগত হোম থাকা সত্ত্বেও সবুজ দলের ইনিংসে তিন নম্বরে নামেন মমিনুল হক। আগামীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবার হাততালি কুড়িয়েছেন এ তরুণ। জিতেছে সবুজ দলও। কিন্তু এ জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে বাংলাদেশ কী পেল?
সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অতীতে ফিরতে নারাজ আকরাম খান, 'আরেকটা টোয়েন্টি টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। আশা করি সে ম্যাচে আমরা ভালো একটা কম্বিনেশন পেয়ে যাব।' আগামীকাল ফতুল্লা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় সে ম্যাচে ফিরছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। প্রথম ম্যাচে নাঈম ইসলামের ওপর থেকে তিন নম্বরের আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন অনেকেই। আশরাফুল কি পারবেন সে আস্থা দিতে? নাকি শুভাগত হোম অথবা অলক কাপালি?
এ প্রশ্নের উত্তর জানে শুধু অদৃষ্ট!
No comments