শিল্পঋণে খেলাপি হার কমেনি
শিল্পঋণের আদায় বাড়লেও খেলাপির হার কমেনি। ২০১০-১১ অর্থবছর শেষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিল্পঋণের ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। যা এ খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ। আগের অর্থবছরের তুলনায় খেলাপি বেড়েছে সাড়ে তিন শতাংশ। গত অর্থবছরে শিল্পখাতে আদায় হয়েছে ৮১ হাজার ৭১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।
মূলত সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপির হার বৃদ্ধির কারণে সামগ্রিকভাবে খেলাপিঋণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গত অর্থবছর শিল্পখাতে এক লাখ ৩ হাজার ৪৬৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৫ হাজার ৪৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ১৮ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা বা ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি ঋণ বিতরণ হয়েছে। এসব ঋণের মধ্যে চলতি মূলধনে ৭১ হাজার ৩০০ কোটি ও মেয়াদি ঋণ দেওয়া হয়েছে ৩২ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। যার ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, বৈদেশিক ব্যাংক ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণ করেছে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ ঋণ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই বিভাগের মহাব্যবস্থাপক সুকোমল সিংহ চৌধুরী বলেন, শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ বাড়ায় খেলাপি কিছুটা বেড়েছে। তবে এ হার উদ্বেগজনক নয়। তারপরও খেলাপি ঋণের হার কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
শিল্পখাতে মোট খেলাপি ঋণ :২০১০-১১ অর্থবছর শিল্পখাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। তার আগের বছর যা ৮ হাজার ৩২০ কোটি টাকা ছিল। সে হিসেবে গত অর্থবছর খেলাপির হার ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। খেলাপি থাকা এসব ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৪৯ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ১১ দশমিক ২১ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকে ২৯ দশমিক ৯১ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ :গত অর্থবছর মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ব্যাংকে ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে, বিদেশিক ব্যাংকে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ রয়েছে।
ঋণ আদায় :শিল্পখাতে আদায়কৃত ৮১ হাজার ৭১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের আদায় হয়েছে ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকের ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকের ৭৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকের ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আদায় করেছে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
শিল্পখাতে মোট খেলাপি ঋণ :২০১০-১১ অর্থবছর শিল্পখাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। তার আগের বছর যা ৮ হাজার ৩২০ কোটি টাকা ছিল। সে হিসেবে গত অর্থবছর খেলাপির হার ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। খেলাপি থাকা এসব ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৪৯ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ১১ দশমিক ২১ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকে ২৯ দশমিক ৯১ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ :গত অর্থবছর মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন ব্যাংকে ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে, বিদেশিক ব্যাংকে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ রয়েছে।
ঋণ আদায় :শিল্পখাতে আদায়কৃত ৮১ হাজার ৭১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের আদায় হয়েছে ৪ দশমিক ০৫ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকের ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, বেসরকারি ব্যাংকের ৭৭ দশমিক ৩০ শতাংশ, বিদেশি ব্যাংকের ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আদায় করেছে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
No comments