কাশ্মিরিদের আজাদির স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না: ভারতীয় সেনাপ্রধান

কাশ্মিরি তরুণদের আজাদির স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, কিছু মানুষ ‘আজাদি’র নাম করে তরুণদের প্রতারিত করছে। কিন্তু কাশ্মিরে ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তারা কখনও জয়ী হবে না।
কাশ্মিরি তরুণদের অস্ত্র তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘বন্দুক হাতে তুলে নেওয়া নিরীহ যুবকদের আজাদির নামে যারা মিথ্যা স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তাদের বলতে চাই- এই রাস্তায় কিছুই পাওয়া যাবে না। তরুণদের বলতে চাই এ ধরনের লোকেরা আপনাদের উসকানি দিচ্ছে। কাশ্মিরি তরুণদের বলছি ‘আজাদি’ সম্ভব নয়, এটা হওয়ার নয়। অন্যদের উসকানিতে ভুল পথে যাবেন না।’
জেনারেল রাওয়াত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যারা আজাদির দাবি করছেন তাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই অব্যাহত থাকবে। যারা আজাদি চাচ্ছেন তারা ভালোভাবে জেনে নিন, এটা কখনও সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ওদের ক্রমশ দুর্বল করে দিচ্ছে। আমার মনে হয় একটি সন্ত্রাসী চক্র আছে এবং নয়া সন্ত্রাসীদের ভর্তি করার কাজও চলছে। আমি শুধু লোকদের এটা বলতে চাই যে, আপনারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়তে পারবেন না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে আপনারা কখনও জয়ী হতে পারবেন না।’
জেনারেল রাওয়াত বলেন, কাশ্মিরিদের বলতে চাই, আমরা কাউকে মেরে ফেলার জন্য খুশি নই। আপনারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে সেনাবাহিনীও পাল্টা জবাব দেবে। কাশ্মিরিদের বুঝতে হবে নিরাপত্তা বাহিনী অতটা নিষ্ঠুর নয়। আপনারা সিরিয়া ও পাকিস্তানের দিকে দেখুন। তারা অনুরূপ পরিস্থিতিতে ট্যাংক ও বিমান শক্তি ব্যবহার করে। আমাদের সেনারা বড় উসকানি সত্ত্বেও বেসামরিক লোকজনদের হতাহতের ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায়। তরুণদের ক্ষোভ আছে জানি, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে পাথর নিক্ষেপ করা কোনও পথ নয়।’
এদিকে, জম্মু-কাশ্মিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সব রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে একতরফা যুদ্ধবিরতির পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছি, আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানাবো যে, সীমান্তে যুদ্ধবিরতির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হোক। ২০০০ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, সংঘর্ষে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে রমজান ও অমরনাথ যাত্রা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের উদ্বেগের কথা জানানো হবে বলেও জানান মেহবুবা মুফতি।
এর আগে গত ৭ মে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে কাশ্মির উপত্যকায় সহিংসতা বন্ধ করতে মধ্যমপন্থা খোঁজার আহ্বান জানান মেহবুবা। কাশ্মিরে সংঘর্ষের ফলে গরিব পরিবারের তরুণ ও সেনাসদস্যদের জীবন শেষ হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পার্স টুডে।

No comments

Powered by Blogger.