রাজনৈতিক ঋণে ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করেছে সরকার: বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করেছে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার নিজেদের লোকদের সরকারি ব্যাংকগুলোতে বড় পদে বসিয়ে লুটপাট করছে। এর মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা তারা লোপাট করেছে। তারা রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ দিয়ে দেশের ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি হয়েছে সরকারের মদদে। এ কারণেই এফবিআই বলেছে ব্যাংকের অর্থ চুরি করা লোকজন ব্যাংকের ভেতরেই অবস্থান করছে।
তিনি আরও বলেন, লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলো এখন তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে। আমানতকারীরা তাদের টাকা ফেরত নিতে চাইছে কিন্তু তাদের আমানত ফেরত দেয়া যাচ্ছে না। চেক দিলেও সময় মতো টাকা পাচ্ছে না গ্রাহকরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু ব্যাংকিং খাতে লোপাট নয়, বড় বড় মেগা প্রজেক্ট দুর্নীতি, শেয়ার বাজার দুর্নীতি করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আর্থিক খাতের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদের বিচার জনতার আদালতে অবশ্যই হবে।
এ সময়, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ব্যাংকখাতকে ধ্বংস করতে সরকার একের পর এক নতুন নিয়ম করছে। যাতে করে বড় বড় পুকুর চুরি করতে পারে। দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে একটি বিশেষ গ্রুপের হাতে দিয়ে শেষ করে দেয়া হয়েছে। বেসিক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে।
'কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়ার কারণ সালমান'
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ‘২০১৫ সনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে এমন ১১ বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের ১৫ হাজার কোটি টাকা পুনর্গঠনের নামে ঋণ নিয়মিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ খেলাপির তালিকা থেকে বাদ যায় আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট কয়েকটি বড় গ্রুপ। যার মধ্যে একটি গ্রুপের কর্ণধার বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন।'
সাংবাদিকরা জানতে চান ব্যাংকিং খাত দেউলিয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘সেই ব্যক্তির নাম আপনারাও জানেন অবশ্য। তিনি আর কেউ নন ধনকুবের সালমান এফ রহমান। তিনি শুরু থেকেই সরকারি ব্যাংকই নয়, কয়েকটা বেসরকারি ব্যাংকককেও দেউলিয়ার পথে নিয়ে গিয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.