নিঃসন্তান দম্পতি হঠাৎ ৫১ সন্তানের মা–বাবা
ভারতের
উত্তরপ্রদেশের কৃষক দম্পতি। নিঃসন্তান। ১৯৯০ সালে দত্তক নিয়েছিলেন এক
প্রতিবন্ধী শিশুকে। কিন্তু ৫ বছর পর মারা যায় শিশুটি। ভেঙে পড়েননি ওই
দম্পতি। বরং অনেক বেশি করে শিশুদের প্রতি তাদের ভালোবাসাকে উজাড় করে দিতে
চেয়েছেন। একটি, দু’টি নয়, এখন এই দম্পতি মোট ৫১ সন্তানের অভিভাবক।
কীভাবে? সেই গল্প অবাক করার মতো। ১৯৮১ সালে বীরেন্দর রানা বিয়ে করেছিলেন
মীনাকে। বিয়ের প্রায় ১০ বছর কেটে গেলেও কোনো সন্তান হয়নি ওই দম্পতির। জানা
যায়, মীনার জরায়ুতে একটি টিউমার রয়েছে। যার ফলে সন্তানধারণে অক্ষম মীনা।
১৯৯০ সালে তারা শুকতালে ছোট্ট জমি কেনেন। ১ বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে দত্তকও
নিয়েছিলেন। যার নাম রাখা হয়েছিল মাঙ্গেরাম। কিন্তু ৫ বছর পর সেও মারা যায়।
কষ্ট পেলেও এই ঘটনাতেও হতাশ হননি ওই দম্পতি। নতুন করে শিশুদের দত্তক নিয়ে
নিজের কাছে এনে রাখতে শুরু করেন তারা। মীনা বলছিলেন, ‘দত্তক নেওয়ার সময়
একবারও ভেবে দেখিনি শিশুরা হিন্দু না মুসলিম।
ওরা আমার সন্তান। ওদের
শিক্ষিত করে তোলাই আমাদের প্রধান কাজ।’ মহৎ কাজে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে
গোটা শুকতাল। ৮ বিঘা জমির উপর বর্তমানে গড়ে উঠেছে বীরেন্দর–মীনার অনাথ
আশ্রম। যেখানে বর্তমানে ৪৬ জন অনাথ রয়েছেন। যার মধ্যে ১৯ জন বালিকা।
শারীরিক প্রতিবন্ধীও রয়েছেন। শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে বড় মাঠ। অনাথ
আশ্রমের গোটা খরচটাই চলে অনুদানের ওপর। একদম ছোট্ট বেলায় মা–বাবাকে হারিয়ে
এই অনাথ আশ্রমে এসেছিলেন মমতা। আজ তিনি পোস্ট গ্রাজুয়েট করছেন। বলেন,
‘এখানে না এলে আমার ভবিষ্যৎ কী হতো তা জানতাম না। ওদের প্রতি চিরকাল
কৃতজ্ঞ থাকব।’ শুকতাল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুশীল শর্মা বলছিলেন, ‘আমরা
তো সামান্য একটু জমি দিয়েছি মাত্র। কিন্তু বীরেন্দর ও মীনা যা করেছে তা
অকল্পনীয়।’
No comments