‘ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না’
আরব
লীগের এক জরুরি বৈঠকে আমেরিকার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের
আহ্বান জানিয়েছেন লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেবরান বাসিল। মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে জেরুসালেম আল-কুদসকে দখলদার
ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদে তিনি এ আহ্বান জানান।
শনিবার কায়রোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাসিল বলেন, ‘ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে আগাম
ব্যবস্থা নিতে হবে... কূটনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা শুরু করতে
হবে, এরপর রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তারপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করতে হবে।’ সারা বিশ্বের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার জেরুসালেম আল-কুদসকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী
হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি মার্কিন দূতাবাসকে তেল আবিব থেকে
জেরুসালেমে স্থানান্তর করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। এ ঘোষণার প্রতিবাদে
লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের এই বিপর্যয় কি আমাদেরকে (আরব
সরকারগুলোকে) আমাদের ঘুম থেকে জাগাতে পারবে? জেনে রাখুন ইতিহাস কোনোদিনও
আমাদের ক্ষমা করবে না এবং আমরা যা করছি তা নিয়ে আরব জাতিগুলো কোনোদিন গর্ব
করতে পারবে না।’ আরব লীগের জরুরি বৈঠকে সংস্থার মহাসচিব আহমেদ আবুল-গেইত
পূর্ব জেরুসালেম আল-কুদসকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার
জন্য বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের এ ঘোষণা
শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওয়াশিংটনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ
করেছে। মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি
দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বৈঠকে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম
আল-জাফারি ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের উস্কানি’ বলে উল্লেখ করে বলেন,
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রতিহত করার জন্য আরব দেশগুলোকে সর্বশক্তি প্রয়োগ
করতে হবে। বৈঠকে সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম গান্দুর ট্রাম্পের
ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানান এবং এই ঘোষণা বাস্তবায়ন রুখে দিতে মুসলিম
দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিউনিশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খামিস
আল-জাহিনাভি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণার বিপরীতে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয়
ভূমিকা নেয়ার জন্য আরব দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। আলজেরিয়ার
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলকাহের মাসাহিল ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ প্রতিহত করার
ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আরব লীগের জরুরি বৈঠকে জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আয়মান আল-সাফাদি বলেন, জেরুসালেম আল-কুদস মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে না। আরব লীগের জরুরি বৈঠকে
সবচেয়ে নিস্ক্রিয় অবস্থান ঘোষণা করেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল
আল-জুবায়ের। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
করার আহ্বান জানিয়ে নিজের দায়িত্ব শেষ করেন।
ইসরাইলের প্রতি ট্রাম্পের সর্বোচ্চ সেবার নানা রহস্য
মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর বায়তুল মুকাদ্দাস তথা জেরুসালেমকে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বীকৃতি ঘোষণার পর ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ আবারও মুসলিম বিশ্বের প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে গত বুধবার বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শহরে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রক্রিয়াও শুরু করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে মার্কিন ও ইসরাইল বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় এবং ফিলিস্তিন ও মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ ট্রাম্পের ওই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। মার্কিন কংগ্রেস ১৯৯৫ সালের ২৩ অক্টোবর তেলআবিব থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে আমেরিকার দূতাবাস স্থানান্তরের প্রস্তাব পাস করেছিল। কিন্তু সেই থেকে এ পর্যন্ত তথা ২২ বছর পর্যন্ত মার্কিন সরকারগুলো ওই প্রস্তাব বাস্তবায়নের সাহস করেনি। বায়তুল মুকাদ্দাস তথা আলকুদসকে ইসরাইলের দখল করা ভূখণ্ড বলে মনে করে জাতিসংঘ। তাই এ দখলদারিত্ব পুরোপুরি অবৈধ। জাতিসংঘের প্রস্তাবে বায়তুল মুকাদ্দাসসহ ১৯৬৭ সালে ইসরাইলের দখল-করা সব ভূখণ্ড ফিলিস্তিনিদের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আর ইসরাইলের এমন একটি অবৈধ দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে ট্রাম্প আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছেন বলে বিশ্বের বহু নেতা ও বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন। প্রশ্ন হল ট্রাম্প কেনো এমন একটি ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বর্তমান সময়কে বেছে নিলেন? ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন ছিল এর অন্যতম কারণ। এ ছাড়াও পশ্চিম-এশিয়াসহ মুসলিম বিশ্বের পরিস্থিতি এবং মার্কিন ঘরোয়া রাজনীতিও তার এ সিদ্ধান্তে প্রভাব রেখেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠদের গোপন যোগাযোগ ফাঁস হওয়ার কেলেঙ্কারিকে ম্লান করার চিন্তাও ট্রাম্পের এই ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। রাশিয়া বিষয়ক এই কেলেঙ্কারির কারণে ট্রাম্প ঘরোয়া রাজনীতিতে ব্যাপক চাপের শিকার হন এবং এর ফলে অনাস্থার শিকার হয়ে ট্রাম্প ক্ষমতা হারাতে পারেন বলেও বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছিলেন। ট্রাম্প আগামী মার্কিন নির্বাচনেও রিপাবলিকান দলের বিজয় নিশ্চিত করতে এ দলের ভোট-ব্যাংক হিসেবে খ্যাত ইহুদিবাদী খ্রিস্টানদের ভোটও আকৃষ্ট করতে চান।
ইসরাইলের প্রতি ট্রাম্পের সর্বোচ্চ সেবার নানা রহস্য
মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর বায়তুল মুকাদ্দাস তথা জেরুসালেমকে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বীকৃতি ঘোষণার পর ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ আবারও মুসলিম বিশ্বের প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে গত বুধবার বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শহরে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রক্রিয়াও শুরু করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে মার্কিন ও ইসরাইল বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় এবং ফিলিস্তিন ও মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ ট্রাম্পের ওই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। মার্কিন কংগ্রেস ১৯৯৫ সালের ২৩ অক্টোবর তেলআবিব থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে আমেরিকার দূতাবাস স্থানান্তরের প্রস্তাব পাস করেছিল। কিন্তু সেই থেকে এ পর্যন্ত তথা ২২ বছর পর্যন্ত মার্কিন সরকারগুলো ওই প্রস্তাব বাস্তবায়নের সাহস করেনি। বায়তুল মুকাদ্দাস তথা আলকুদসকে ইসরাইলের দখল করা ভূখণ্ড বলে মনে করে জাতিসংঘ। তাই এ দখলদারিত্ব পুরোপুরি অবৈধ। জাতিসংঘের প্রস্তাবে বায়তুল মুকাদ্দাসসহ ১৯৬৭ সালে ইসরাইলের দখল-করা সব ভূখণ্ড ফিলিস্তিনিদের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আর ইসরাইলের এমন একটি অবৈধ দখলদারিত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে ট্রাম্প আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছেন বলে বিশ্বের বহু নেতা ও বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন। প্রশ্ন হল ট্রাম্প কেনো এমন একটি ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বর্তমান সময়কে বেছে নিলেন? ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন ছিল এর অন্যতম কারণ। এ ছাড়াও পশ্চিম-এশিয়াসহ মুসলিম বিশ্বের পরিস্থিতি এবং মার্কিন ঘরোয়া রাজনীতিও তার এ সিদ্ধান্তে প্রভাব রেখেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠদের গোপন যোগাযোগ ফাঁস হওয়ার কেলেঙ্কারিকে ম্লান করার চিন্তাও ট্রাম্পের এই ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। রাশিয়া বিষয়ক এই কেলেঙ্কারির কারণে ট্রাম্প ঘরোয়া রাজনীতিতে ব্যাপক চাপের শিকার হন এবং এর ফলে অনাস্থার শিকার হয়ে ট্রাম্প ক্ষমতা হারাতে পারেন বলেও বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছিলেন। ট্রাম্প আগামী মার্কিন নির্বাচনেও রিপাবলিকান দলের বিজয় নিশ্চিত করতে এ দলের ভোট-ব্যাংক হিসেবে খ্যাত ইহুদিবাদী খ্রিস্টানদের ভোটও আকৃষ্ট করতে চান।
তাই জেরুজালেমকে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি
দিয়ে ইহুদিবাদী খ্রিস্টানদের খুশি করতে চেয়েছেন ট্রাম্প। কোনো কোনো আরব
শাসকের বিশ্বাসঘাতকতাও ট্রাম্পকে মুসলিম-বিদ্বেষী ও ইসরাইল-বান্ধব এই
পদক্ষেপ নিতে উৎসাহ যুগিয়েছে। ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরব সফর করে সৌদি
রাজাসহ এ অঞ্চলের কয়েকজন আরব শাসকের কাছ থেকে এ নিশ্চয়তা পান যে ওয়াশিংটন
পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে এবং এই
পবিত্র শহরে আমেরিকার দূতাবাস স্থানান্তরের উদ্যোগ নিলে এই আরব সরকারগুলো
জোরালো কোনো প্রতিবাদ করবে না। কিন্তু বাস্তব বিষয় হল ইসরাইলি
সম্প্রসারণকামীতার মোকাবেলায় ফিলিস্তিন ও বায়তুল মুকাদ্দাস ইস্যুকে এখন
পর্যন্ত জীবন্ত রেখেছে ফিলিস্তিন এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ আন্দোলন ও
সংগ্রামী দলগুলো। সৌদি সরকারসহ বিশ্বাসঘাতক আরব শাসকদের কোনো ভূমিকা তাতে
নেই। তাই আরব ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প যে আগুন
জ্বালিয়ে দিয়েছেন তা নেভানোর ক্ষমতা তার নেই এবং এ আগুনেই পুড়ে মরবে
নেতানিয়াহু ও তার দলবল। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক আত্মহননের সঙ্গেই
তুলনা করেছেন ইসলামী ইরানের নেতৃবৃন্দ। তার এ পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন
নীতি-অবস্থানকে অতীতের চেয়েও ব্যর্থ করে তুলবে এবং তা শেষ পর্যন্ত
ইসরাইলের পতন-প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে বলেও ইরানি নেতৃবৃন্দ মন্তব্য
করেছেন।
No comments