নিয়ম ভেঙে পানির দরে জমি বরাদ্দ দিয়েছে আরডিএ by আনু মোস্তফা
নীতিমালা লংঘন করে নামমাত্র মূল্যে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলকে ৪০ কাঠা জমি বরাদ্দ দিয়েছেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। সরকারি এসব জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। সাম্প্র্রতিক সময়ে এক অনুসন্ধানে আরডিএর দুর্নীতির এই তথ্য জানা গেছে। বরাদ্দ দেয়া এ জমির বর্তমান মূল্য কয়েক কোটি টাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আরডিএর ২০০৭ সালের ৭ ফেব্র“য়ারির সাধারণ সভায় চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় একটি ইংলিশ ও বাংলা মিডিয়াম স্কুল এবং কলেজ (প্লে থেকে দ্বাদশ) প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ কাঠা জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। জমি বরাদ্দে বিদ্যমান সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে এ পরিমাণ জমি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ওই বছরের ২১ মে দৈনিক নিউজ লাইন নামের একটি পত্রিকায় আরডিএর এস্টেট বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। একই বছরের ৩১ মে প্যারামাউন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামের একটিমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরপত্র জমা পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কাঠা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দর উল্লেখ করে। আরডিএ ঠিক একই মূল্য নির্ধারণ করে। যদিও জমির বাজারমূল্য প্রতি কাঠা ১৫ লাখ টাকারও বেশি।
ওই বছরের ১৭ জুন আরডিএর জমি বরাদ্দসংক্রান্ত টেন্ডার কমিটির সভায় দরপত্র নিয়ে আলোচনা হয়। নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সভায় টেন্ডার কমিটির সদস্য আরডিএর টাউন প্ল্যানার আজমেরী আশরফী একটিমাত্র দরপত্র হলেও প্যারামাউন্টকে অনুমোদনের জন্য জোর মত দেন। কমিটির আরেক সদস্য আরডিএর তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা আবদুর রব জোয়ার্দ্দার সভায় বলেন, যেহেতু স্কুল নির্মাণের মতো অর্থ আরডিএর হাতে নেই তাই একটিমাত্র দরপত্র হলেও প্যারামাউন্টকে জমি বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। এভাবেই প্যারামাউন্টের প্রস্তাবটি গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ৩০ কাঠা জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।
জানা যায়, আরডিএর জমি বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী একটিমাত্র দরপত্র গ্রহণ না করে প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়ার জন্য আবার দরপত্র আহ্বানের প্রয়োজন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা করেননি। জমি বরাদ্দের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি স্থানীয় ও দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে হবে। কিন্তু সে নীতিমালাও অনুসরণ করা হয়নি।
স্কুলের জমি বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির কার্যক্রম সেখানেই থেমে থাকেনি। ৩০ কাঠা জমি পাওয়ার কিছু দিন পর প্যারামাউন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ আরও ১০ কাঠা জমি একই মূল্যে পাওয়ার জন্য সাদা কাগজে আবেদন করে আরডিএর চেয়ারম্যান বরাবর। জমি চেয়ে সাদা কাগজে করা আবেদন বরাদ্দ নীতিমালার সুস্পষ্ট লংঘন হলেও আরডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার (যুগ্ম-সচিব এবং বর্তমানে ওএসডি) তাতে সম্মতি দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেন। এই অনিয়মের প্রক্রিয়ায় ২০০৮ সালের ৭ মে আরডিএর সভায় প্যারামাউন্টকে ৩০ কাঠার অতিরিক্ত আরও ১০ কাঠা জমি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দরে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। প্যারামাউন্ট কর্তৃপক্ষ এককালীন টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। জমি বরাদ্দের পরপরই প্যারামাউন্ট সেখানে তৈরি করে বহুতল স্কুল ভবন।
আরডিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সাদা কাগজের আবেদনের ভিত্তিতে কাউকে সরকারি জমি বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম নেই প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালায়। প্যারামাউন্টকে জমি দেয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি অবৈধ এবং দুর্নীতি-অনিয়মে ভরা। বিপুল অর্থের বিনিময়ে চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক অর্থ উপদেষ্টা আবদুর রব জোয়ার্দ্দার, ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত এস্টেট অফিসার শেখ কামরুজ্জামান (বর্তমানে সহকারী প্রকৌশলী), টাউন প্ল্যানার আজমেরী আশরাফী নীতিমালা লংঘন করে প্যারামাউন্ট নামের স্কুলটিকে এই জমি বরাদ্দ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্যারামাউন্ট স্কুলটি ইংলিশ ও বাংলা মিডিয়ামে পরিচালিত হয়। এই স্কুলে ছাত্রছাত্রী ভর্তিতে অভিভাবকদের গুণতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। মাসে মাসে দিতে হয় মোটা বেতন। এই স্কুলে সাধারণ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পায় না। বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারি জমি নিয়ম ভেঙে পানির দামে দেয়ার সাধারণ যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। কয়েকজন বাসিন্দা যুগান্তরকে বলেন, প্যারামাউন্টে সাধারণ নাগরিকদের ছেলে-মেয়ের কোনো প্রবেশাধিকার নেই। প্যারামাউন্টকে ৪০ কাঠা জমি দেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরডিএর এস্টেট অফিসার বদরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টির বিস্তারিত তার জানা নেই। এটি আগের ঘটনা। যারা এই বরাদ্দ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের অনেকেই এখন নেই। তবে তিনি বলেন, প্যারামাউন্টকে জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে নীতিমালা লংঘিত হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আরডিএর ২০০৭ সালের ৭ ফেব্র“য়ারির সাধারণ সভায় চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় একটি ইংলিশ ও বাংলা মিডিয়াম স্কুল এবং কলেজ (প্লে থেকে দ্বাদশ) প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ কাঠা জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। জমি বরাদ্দে বিদ্যমান সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে এ পরিমাণ জমি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ওই বছরের ২১ মে দৈনিক নিউজ লাইন নামের একটি পত্রিকায় আরডিএর এস্টেট বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। একই বছরের ৩১ মে প্যারামাউন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামের একটিমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরপত্র জমা পড়ে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কাঠা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দর উল্লেখ করে। আরডিএ ঠিক একই মূল্য নির্ধারণ করে। যদিও জমির বাজারমূল্য প্রতি কাঠা ১৫ লাখ টাকারও বেশি।
ওই বছরের ১৭ জুন আরডিএর জমি বরাদ্দসংক্রান্ত টেন্ডার কমিটির সভায় দরপত্র নিয়ে আলোচনা হয়। নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সভায় টেন্ডার কমিটির সদস্য আরডিএর টাউন প্ল্যানার আজমেরী আশরফী একটিমাত্র দরপত্র হলেও প্যারামাউন্টকে অনুমোদনের জন্য জোর মত দেন। কমিটির আরেক সদস্য আরডিএর তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা আবদুর রব জোয়ার্দ্দার সভায় বলেন, যেহেতু স্কুল নির্মাণের মতো অর্থ আরডিএর হাতে নেই তাই একটিমাত্র দরপত্র হলেও প্যারামাউন্টকে জমি বরাদ্দ দেয়া যেতে পারে। এভাবেই প্যারামাউন্টের প্রস্তাবটি গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ৩০ কাঠা জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।
জানা যায়, আরডিএর জমি বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী একটিমাত্র দরপত্র গ্রহণ না করে প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়ার জন্য আবার দরপত্র আহ্বানের প্রয়োজন থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা করেননি। জমি বরাদ্দের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার নীতিমালায় বলা হয়েছে, একটি স্থানীয় ও দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে হবে। কিন্তু সে নীতিমালাও অনুসরণ করা হয়নি।
স্কুলের জমি বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির কার্যক্রম সেখানেই থেমে থাকেনি। ৩০ কাঠা জমি পাওয়ার কিছু দিন পর প্যারামাউন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ আরও ১০ কাঠা জমি একই মূল্যে পাওয়ার জন্য সাদা কাগজে আবেদন করে আরডিএর চেয়ারম্যান বরাবর। জমি চেয়ে সাদা কাগজে করা আবেদন বরাদ্দ নীতিমালার সুস্পষ্ট লংঘন হলেও আরডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার (যুগ্ম-সচিব এবং বর্তমানে ওএসডি) তাতে সম্মতি দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেন। এই অনিয়মের প্রক্রিয়ায় ২০০৮ সালের ৭ মে আরডিএর সভায় প্যারামাউন্টকে ৩০ কাঠার অতিরিক্ত আরও ১০ কাঠা জমি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দরে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। প্যারামাউন্ট কর্তৃপক্ষ এককালীন টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। জমি বরাদ্দের পরপরই প্যারামাউন্ট সেখানে তৈরি করে বহুতল স্কুল ভবন।
আরডিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সাদা কাগজের আবেদনের ভিত্তিতে কাউকে সরকারি জমি বরাদ্দ দেয়ার নিয়ম নেই প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালায়। প্যারামাউন্টকে জমি দেয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি অবৈধ এবং দুর্নীতি-অনিয়মে ভরা। বিপুল অর্থের বিনিময়ে চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক অর্থ উপদেষ্টা আবদুর রব জোয়ার্দ্দার, ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত এস্টেট অফিসার শেখ কামরুজ্জামান (বর্তমানে সহকারী প্রকৌশলী), টাউন প্ল্যানার আজমেরী আশরাফী নীতিমালা লংঘন করে প্যারামাউন্ট নামের স্কুলটিকে এই জমি বরাদ্দ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্যারামাউন্ট স্কুলটি ইংলিশ ও বাংলা মিডিয়ামে পরিচালিত হয়। এই স্কুলে ছাত্রছাত্রী ভর্তিতে অভিভাবকদের গুণতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। মাসে মাসে দিতে হয় মোটা বেতন। এই স্কুলে সাধারণ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পায় না। বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারি জমি নিয়ম ভেঙে পানির দামে দেয়ার সাধারণ যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। কয়েকজন বাসিন্দা যুগান্তরকে বলেন, প্যারামাউন্টে সাধারণ নাগরিকদের ছেলে-মেয়ের কোনো প্রবেশাধিকার নেই। প্যারামাউন্টকে ৪০ কাঠা জমি দেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরডিএর এস্টেট অফিসার বদরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টির বিস্তারিত তার জানা নেই। এটি আগের ঘটনা। যারা এই বরাদ্দ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের অনেকেই এখন নেই। তবে তিনি বলেন, প্যারামাউন্টকে জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে নীতিমালা লংঘিত হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে।
No comments