লতিফ সিদ্দিকীর দেশে ফেরা- সতর্ক থাকার নির্দেশ by দীন ইসলাম
সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি
মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে
সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রত্যাবর্তন
ঠেকাতে নেয়া কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে বলা হয়েছে। সমপ্রতি এ-সংক্রান্ত
একটি চিঠি মহাপুলিশ পরিদর্শককে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকীকে
নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লিখিত কথা বলা হয়েছে। চিঠির
বিষয়বস্তুতে বলা হয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক
মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দেশের প্রত্যাবর্তনের পর সম্ভাব্য আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি এবং তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে। চিঠিতে বলা হয়েছে, এ
বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়ার প্রতিবেদনের প্রতি সদয় দৃষ্টি
আকর্ষণ করা হলো। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে মতামত জানিয়ে বলা
হয়েছে, লতিফ সিদ্দিকী এখন আর মন্ত্রী নন। তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে
বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও বাদ পড়ার বিষয়টি
প্রক্রিয়াধীন। নিজ দলের অনেকেই প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বা সংগঠন ও অন্য
রাজনৈতিক দল বা সংগঠনগুলো তার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অনেকেই তার
ফাঁসি দাবি করে তার ওপর হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। হেফাজতে ইসলাম তার
মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে। এরূপ পরিস্থিতিতে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ
সিদ্দিকী দেশে ফিরলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতাকর্মী ও
সমর্থকরা তার ওপর হামলা চালানোর আশঙ্কা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারবিরোধী
আন্দোলনের কোন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু না থাকায় এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে দেশে
অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবং
স্বার্থান্বেষী মহল জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ওপর যে কোন
ধরনের হামলা বা তার অবস্থানের ওপর নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার
সমূহ-সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ
সিদ্দিকী দেশে প্রত্যাবর্তন করলে তার নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আদালতের নির্দেশানুযায়ী সে
সব আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার
আশঙ্কাসহ ওই এলাকাগুলোতে ধর্মপ্রাণ মানুষের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায়
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এমন অবস্থায় প্রতিবেদনে
বর্ণিত সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গৃহীত কার্যক্রম
সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা
হলো। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সফরে থাকার সময় গত ২৮শে
সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে লতিফ
সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ-জামাত, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও
সাংবাদিকদের সম্পর্কে নানা বেফাঁস মন্তব্য করেন। এরপর তা নিয়ে শুরু হয়
তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। বর্তমানে লতিফ সিদ্দিকী দেশে ঢোকার প্রস্তুতি নিয়ে
এখন তিনি অনেকটা চুপিসারে ভারতের কলকাতায় বসবাস করছেন। যে কোন সময় দেশে
প্রত্যাবর্তন করতে পারেন এমন আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে চিঠি
দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
No comments