ত্রিপুরাকে পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে রাখতে চেয়েছিল রাজপরিবার -মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের তথ্য
দেশভাগের সময় ত্রিপুরাকে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) সঙ্গে রাখার পক্ষে ছিল তৎকালীন ত্রিপুরার রাজপরিবারের একটি অংশ। গতকাল এ কথা বলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। আগরতলায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ওই সময়ের রাজপরিবারের একটি অংশ চেয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গেই যুক্ত হোক ত্রিপুরা। একই সঙ্গে ত্রিপুরাকে আসাম অথবা পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেও রাখার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। গতকাল এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা আইএএনএস। তিনি বলেন, ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও উপজাতি নেতা দশরথ দেব তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, আসাম বা কলকাতার সঙ্গে ত্রিপুরাকে একীভূত করার বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালিয়েছিলেন। তার মূর্তি উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ইতিহাসবিদদের মতে- ত্রিপুরার রাজপরিবারের একটি অংশ রাজ্যটিকে পাকিস্তানের ভাগে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ত্রিপুরার শেষ রাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য নিজের মৃত্যুর আগে ভারতের সঙ্গে ত্রিপুরাকে রাখার ইচ্ছার কথাই ব্যক্ত করেছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি বলেন, ত্রিপুরার বামপন্থি সরকার কখনওই রাজ্যটিকে ভাগ করতে দেবে না। ত্রিপুরাকে ভেঙে আলাদা রাজ্য গঠনের চেষ্টাও ছিল। তিনি বলেন, একটি ছোট রাজনৈতিক দল ত্রিপুরা ভাগ করতে চাইছে এখন। এমনকি আগরতলাতে নিজেদের দাবির পক্ষে সমাবেশও করেছে তারা। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের (টিটিএএডিসি) আধুনিকায়নের মাধ্যমে ত্রিপুরা ভেঙে নতুন একটি রাজ্য সৃষ্টির দাবি জানিয়ে আসছে ত্রিপুরার উপজাতি সংগঠন দ্য ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফটি)। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার ৩৭ লাখ মানুষের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ উপজাতি। এদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য ১৯৮৫ সালে টিটিএডিসি গঠন করা হয়েছিল ভারতীয় সংবিধানের একটি সংশোধনীর মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রায় সাড়ে চার দশক ধরে ত্রিপুরায় চলে আসা সন্ত্রাস অনেকটাই আয়ত্তে আনা গেছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি একে পুনরুজ্জীবিত করতে চান। তিনি আরও বলেন, ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) ও ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ডের (এনএসসিএন) সমর্থনপুষ্ট ত্রিপুরা বিদ্রোহীরা রাজ্যে ঝামেলা সৃষ্টি করতে চায়।
No comments