সোহাগপুরের নাম প্রথম শুনেছেন কামারুজ্জামান
সোহাগপুরের যে অভিযোগে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে, সে সব অভিযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা জানতে নতুন প্রজন্মকে আহবান জানিয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। সাক্ষাতের সময় আইনজীবীদের মাধ্যমে কামারুজ্জামান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে নতুন প্রজন্ম ও দেশবাসীকে সত্য অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, “এদেশে ইসলাম বিজয়ী হবেই, হবে।” “পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তিনি তা দেখে ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করবেন” বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাৎ শেষে কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মুনির সাংবাদিকদের একথা বলেন। শিশির মুনির বলেন, “সাক্ষাতে কামারুজ্জামান তাকে বলেছেন- পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা তিনি দেখবেন। এরপর ৩০ দিনের মধ্যে তিনি রিভিউ আবেদন করবেন। এছাড়া রিভিউ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে তিনি আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন।” তিনি বলেন, “কামারুজ্জামান বলেছেন- যে অভিযোগে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দিবেন। আর রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।’ আইনজীবী বলেন, “সোহাগপুরের নাম জীবনে প্রথম শুনেছেন বলেছেন জানিয়েছেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। আর এর সঙ্গে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবি করেছেন।” সাংবাদিকদের কাছে কামারুজ্জামানের বক্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি শিশির মুনির আইনজীবীদের মতামতও জানান। তিনি বলেন, “রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি এবং পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে রায় কার্যকর করা হলে তা হবে আইন কর্তৃত্ববহির্ভূত। কারণ সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী রিভিউ তার সাংবিধানিক অধিকার।” শিশির মুনির বলেন, “কারাগারে মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সুস্থ, স্বাভাবিক এবং অবিচল আছেন। রায় শুনে তিনি বিচলিত নন। আমরা মনে করি তিনি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।” বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কারা কর্তৃপক্ষ চার আইনজীবীকে কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়। এরপর অ্যাডভোকেট শিশির মো. মুনির, মতিউর রহমান আকন্দ, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী ও মসিউল আলম প্রায় এক ঘণ্টা কারাগারে কামারুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন। এর আগে বুধবার সকালে কামারুজ্জামানের স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ১০ সদস্য তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিন। গত সোমবার কামারুজ্জামানের ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। ২০১৩ সালের ৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-২ তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এরপর কামারুজ্জামানকে গত মঙ্গলবার দুপুরে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এখানে তিনি ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে রয়েছেন।
No comments