মিসরে সামরিক অভ্যুত্থান by বদরুদ্দীন উমর
তুর্কি
সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে আরব জাতীয়তাবাদের সূত্রপাত হয় লেবাননে খ্রিস্টানদের
দ্বারা। এরপর উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে
তার বিকাশ ঘটে। এই জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে ইসলামের রাজনৈতিক ব্যবহার শুরু হয়
বিশ শতকের গোড়ার দিকে। এরপর মুসলিম ব্রাদারহুডের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে
রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে দেখা যায় মুসলিম-আরব জাতীয়তাবাদ। পঞ্চাশের দশকের
প্রথমদিকে রাজা ফারুককে উৎখাত করে জেনারেল নগিবের নেতৃত্বে রাজতন্ত্রের
অবসান ঘটানো হলেও নতুন শাসন ব্যবস্থায় গণতন্ত্র বলে কোনো কিছু ছিল না।
রাজতন্ত্রের পর মিসরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সামরিক শাসন, যা কর্নেল নাসের,
সাদাত ও মোবারকের মতো সামরিক বাহিনীর কর্তাদের দ্বারা পরিচালিত ছিল। ২০১১
সালে মিসরে এক ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মোবারকের সরকার উচ্ছেদের এক
বছর পর মিসরের ইতিহাসে প্রথমবার সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি
গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
মিসরে রাজতন্ত্র থাকার সময় সেখানে দুটি রাজনৈতিক দল সংগঠিত ছিল। একটি হল মুসলিম ব্রাদারহুড, অপরটি কমিউনিস্ট পার্টি। সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে মিসর ও ইরানেই কমিউনিস্ট পার্টি বেশ শক্তিশালীভাবে সংগঠিত ছিল। এ দুই পার্টিই সোভিয়েত ইউনিয়নে ক্রুশ্চেভের শাসন শুরু হওয়ার সময়েই তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কর্নেল নাসের এবং ইরানের শাহের ব্যাপক ও নিষ্ঠুর হামলার মাধ্যমে কার্যত ধ্বংস হয়। নাসের মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপরও হামলা চালিয়ে তাকে প্রায় উচ্ছেদের পর্যায়ে নিয়ে যান। তবে পরবর্তীকালে মুসলিম ব্রাদারহুড যেভাবে আবার সংগঠিত হয়েছিল, কমিউনিস্ট পার্টি সেভাবে আর সংগঠিত হতে পারেনি। ইরানেও কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থা দাঁড়িয়েছিল একই রকম।
২০১১ সালে উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে ‘আরব বসন্ত’ নামে কার্যত যে গণজাগরণ ও গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়, তার একটা দিক হল, সেখানে কোনো দেশেই কোনো সংগঠিত পার্টির নেতৃত্বে তা ঘটেনি। ছোট ছোট কিছু গ্রুপ সেই আন্দোলনে কিছু ভূমিকা পালন করলেও তাতে কোনো রাজনৈতিক পার্টির নেতৃত্ব ছিল না। এদিক দিয়ে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল মিসর, যেখানে গণঅভ্যুত্থান সব থেকে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল এবং সব থেকে শক্তিশালী ছিল। ব্যতিক্রম হিসেবে মিসরে ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড, যার ইতিহাস ছিল দীর্ঘদিনের। সামরিক শাসনামলে তাদের দাবিয়ে রাখা হলেও গুপ্ত সংগঠন হিসেবে তাদের অস্তিত্ব ছিল। প্রেসিডেন্ট সাদাতকে তারাই হত্যা করেছিল। ২০১১ সালের দিকে তাদের তৎপরতা শুধু গোপনে নয়, প্রকাশ্যেও ছিল। কাজেই মিসরের গণঅভ্যুত্থানের সময় মুলিম ব্রাদারহুডই ছিল একমাত্র সংগঠিত পার্টি, যার একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এটাই হল অন্যতম প্রধান কারণ ২০১২ সালে তাদের প্রার্থী মোহাম্মদ মুরসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার। লেবাননের হিজবুল্লাহ ছাড়া উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে মুসলমানরা যে ধর্মীয় রাজনীতি করে, তার প্রধান রূপ হল সন্ত্রাসী। এবং এই সন্ত্রাসী মুসলিম রাজনীতির মূল সংগঠন হল আল কায়দা। বর্তমানে আল কায়দার প্রধান নেতা আয়মান জওয়াহেরি নিজে মিসরীয় এবং ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বকালীন অবস্থায়ও তিনি ছিলেন আল কায়দার তাত্ত্বিক নেতা। তারা নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার চিন্তা করেন না। পদ্ধতিগতভাবে সন্ত্রাসই তাদের আশ্রয়। মুসলিম ব্রাদারহুড মিসরে নাসেরের সময় নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে গুপ্ত সংগঠন হিসেবে কাজ করলেও তারা নির্বাচনী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফিরে এসে ২০১২ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। এখন যেভাবে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের দলীয় প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে এবং তাদের ওপর সামরিক বাহনীর হামলা শুরু হয়েছে, তাতে তাদের পক্ষে সন্ত্রাসের পথে ফিরে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্তত তাদের একটা অংশ যে সন্ত্রাসবাদের দিকে চলে যাবে, এতে সন্দেহ নেই।
অন্য কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক দল মিসরে শক্তিশালী না থাকার কারণে মুসলিম ব্রাদারহুড ২০১২ সালে ক্ষমতা দখল করলেও তার বিরুদ্ধে মিসরে ধর্মবিযুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্র“প ও ব্যাপক জনগণের প্রতিরোধও মিসরীয় পরিস্থিতির একটা উল্লেখযোগ্য দিক। মুরসি তার এক বছরের শাসনকালে মিসরে সামরিক শাসন আমলের কোনো সমস্যারই সমাধান করতে সক্ষম না হওয়ায় এবং তার দলের হাতেই ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তার সরকারের এক বছর পূর্তির সময় এই বিক্ষোভ বিরাট আকার ও শক্তি নিয়ে তার পদচ্যুতির জন্য দাঁড়ায়। এই সুযোগ নিয়ে সামরিক বাহিনী গৃহযুদ্ধের আশংকার কথা বলে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রধান বিচারপতিকে প্রেসিডেন্টের আসনে বসিয়ে এখন ক্ষমতা নিজেদের হাতে গ্রহণ করেছে। মিসরের যে সামরিক বাহিনী এভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্ত ঘাঁটছড়ায় বাঁধা। মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিরুদ্ধে মার্কিন সরকার তাদের ভাঁওতাপূর্ণ সমালোচনা করলেও এর পেছনে যে তারা খুব পরিকল্পিতভাবে কলকাঠি নেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই। মোবারকের শাসনকালে তারা সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে যেভাবে মিসর সরকারের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রাখত, এখনও তারা সেভাবেই নতুন সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখবে। তারা মিসরে এক ধরনের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে, যে অবস্থায় নতুন কোনো নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাসীন হওয়া বিলম্বিত এবং আপাতত অসম্ভব হবে। মিসরে কী ধরনের সরকার থাকবে, সেটা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনিদের সর্বপ্রধান মক্কেল রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে খেয়াল রেখেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিসরের রাজনীতি যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে।
একদিকে মার্কিন সরকারের উপরোক্ত স্বার্থ এবং অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক মিসরীয়র ধর্মীয় রাজনীতির বিরোধিতা এবং একটি ধর্মবিযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা মুসলিম ব্রাদারহুডের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পথ বন্ধ করতে সক্ষম হলেও তারা মিসরের রাজনীতিতে নতুনভাবে সন্ত্রাসী তৎপরতা সংগঠিত করতে নিযুক্ত হবে। এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এল বারাদির মতো কোনো লোককে ক্ষমতায় বসিয়ে মিসরে ইরাকের মতো নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার সম্ভাবনা যথেষ্ট।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
মিসরে রাজতন্ত্র থাকার সময় সেখানে দুটি রাজনৈতিক দল সংগঠিত ছিল। একটি হল মুসলিম ব্রাদারহুড, অপরটি কমিউনিস্ট পার্টি। সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে মিসর ও ইরানেই কমিউনিস্ট পার্টি বেশ শক্তিশালীভাবে সংগঠিত ছিল। এ দুই পার্টিই সোভিয়েত ইউনিয়নে ক্রুশ্চেভের শাসন শুরু হওয়ার সময়েই তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কর্নেল নাসের এবং ইরানের শাহের ব্যাপক ও নিষ্ঠুর হামলার মাধ্যমে কার্যত ধ্বংস হয়। নাসের মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপরও হামলা চালিয়ে তাকে প্রায় উচ্ছেদের পর্যায়ে নিয়ে যান। তবে পরবর্তীকালে মুসলিম ব্রাদারহুড যেভাবে আবার সংগঠিত হয়েছিল, কমিউনিস্ট পার্টি সেভাবে আর সংগঠিত হতে পারেনি। ইরানেও কমিউনিস্ট পার্টির অবস্থা দাঁড়িয়েছিল একই রকম।
২০১১ সালে উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে ‘আরব বসন্ত’ নামে কার্যত যে গণজাগরণ ও গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়, তার একটা দিক হল, সেখানে কোনো দেশেই কোনো সংগঠিত পার্টির নেতৃত্বে তা ঘটেনি। ছোট ছোট কিছু গ্রুপ সেই আন্দোলনে কিছু ভূমিকা পালন করলেও তাতে কোনো রাজনৈতিক পার্টির নেতৃত্ব ছিল না। এদিক দিয়ে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল মিসর, যেখানে গণঅভ্যুত্থান সব থেকে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল এবং সব থেকে শক্তিশালী ছিল। ব্যতিক্রম হিসেবে মিসরে ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড, যার ইতিহাস ছিল দীর্ঘদিনের। সামরিক শাসনামলে তাদের দাবিয়ে রাখা হলেও গুপ্ত সংগঠন হিসেবে তাদের অস্তিত্ব ছিল। প্রেসিডেন্ট সাদাতকে তারাই হত্যা করেছিল। ২০১১ সালের দিকে তাদের তৎপরতা শুধু গোপনে নয়, প্রকাশ্যেও ছিল। কাজেই মিসরের গণঅভ্যুত্থানের সময় মুলিম ব্রাদারহুডই ছিল একমাত্র সংগঠিত পার্টি, যার একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এটাই হল অন্যতম প্রধান কারণ ২০১২ সালে তাদের প্রার্থী মোহাম্মদ মুরসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার। লেবাননের হিজবুল্লাহ ছাড়া উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে মুসলমানরা যে ধর্মীয় রাজনীতি করে, তার প্রধান রূপ হল সন্ত্রাসী। এবং এই সন্ত্রাসী মুসলিম রাজনীতির মূল সংগঠন হল আল কায়দা। বর্তমানে আল কায়দার প্রধান নেতা আয়মান জওয়াহেরি নিজে মিসরীয় এবং ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বকালীন অবস্থায়ও তিনি ছিলেন আল কায়দার তাত্ত্বিক নেতা। তারা নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোনো দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার চিন্তা করেন না। পদ্ধতিগতভাবে সন্ত্রাসই তাদের আশ্রয়। মুসলিম ব্রাদারহুড মিসরে নাসেরের সময় নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে গুপ্ত সংগঠন হিসেবে কাজ করলেও তারা নির্বাচনী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ফিরে এসে ২০১২ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। এখন যেভাবে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের দলীয় প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে এবং তাদের ওপর সামরিক বাহনীর হামলা শুরু হয়েছে, তাতে তাদের পক্ষে সন্ত্রাসের পথে ফিরে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্তত তাদের একটা অংশ যে সন্ত্রাসবাদের দিকে চলে যাবে, এতে সন্দেহ নেই।
অন্য কোনো সংগঠিত রাজনৈতিক দল মিসরে শক্তিশালী না থাকার কারণে মুসলিম ব্রাদারহুড ২০১২ সালে ক্ষমতা দখল করলেও তার বিরুদ্ধে মিসরে ধর্মবিযুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্র“প ও ব্যাপক জনগণের প্রতিরোধও মিসরীয় পরিস্থিতির একটা উল্লেখযোগ্য দিক। মুরসি তার এক বছরের শাসনকালে মিসরে সামরিক শাসন আমলের কোনো সমস্যারই সমাধান করতে সক্ষম না হওয়ায় এবং তার দলের হাতেই ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তার সরকারের এক বছর পূর্তির সময় এই বিক্ষোভ বিরাট আকার ও শক্তি নিয়ে তার পদচ্যুতির জন্য দাঁড়ায়। এই সুযোগ নিয়ে সামরিক বাহিনী গৃহযুদ্ধের আশংকার কথা বলে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রধান বিচারপতিকে প্রেসিডেন্টের আসনে বসিয়ে এখন ক্ষমতা নিজেদের হাতে গ্রহণ করেছে। মিসরের যে সামরিক বাহিনী এভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্ত ঘাঁটছড়ায় বাঁধা। মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিরুদ্ধে মার্কিন সরকার তাদের ভাঁওতাপূর্ণ সমালোচনা করলেও এর পেছনে যে তারা খুব পরিকল্পিতভাবে কলকাঠি নেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই। মোবারকের শাসনকালে তারা সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে যেভাবে মিসর সরকারের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রাখত, এখনও তারা সেভাবেই নতুন সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখবে। তারা মিসরে এক ধরনের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবে, যে অবস্থায় নতুন কোনো নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাসীন হওয়া বিলম্বিত এবং আপাতত অসম্ভব হবে। মিসরে কী ধরনের সরকার থাকবে, সেটা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনিদের সর্বপ্রধান মক্কেল রাষ্ট্র ইসরাইলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে খেয়াল রেখেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিসরের রাজনীতি যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে।
একদিকে মার্কিন সরকারের উপরোক্ত স্বার্থ এবং অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক মিসরীয়র ধর্মীয় রাজনীতির বিরোধিতা এবং একটি ধর্মবিযুক্ত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা মুসলিম ব্রাদারহুডের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পথ বন্ধ করতে সক্ষম হলেও তারা মিসরের রাজনীতিতে নতুনভাবে সন্ত্রাসী তৎপরতা সংগঠিত করতে নিযুক্ত হবে। এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এল বারাদির মতো কোনো লোককে ক্ষমতায় বসিয়ে মিসরে ইরাকের মতো নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার সম্ভাবনা যথেষ্ট।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
No comments