আ. লীগের 'দ্বিতীয় দুর্গ'ও বিএনপির by অমিতোষ পাল ও শরীফ আহমেদ শামীম
বড় বড় নাটকীয়তা, সংঘাতের আশঙ্কা আর জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশের
সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুরের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র
পদপ্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান জয়লাভ করেছেন।
রাত সোয়া
২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭১ টিভির দেওয়া তথ্য মতে ৩৯২টি কেন্দ্রের
সবগুলোর ফল পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, অধ্যাপক মান্নান চার লাখ ৪৮ হাজার ভোট
পেয়েছেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের
প্রাপ্ত ভোট তিন লাখ ১২ হাজার।
বেসরকারি ৭১ টিভি এ খবর দিলেও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ফল ঘোষণা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল। অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমের খবরেও ছিল একই চিত্র। এদিকে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে ৩২০টি কেন্দ্রের ফল পাওয়া যায়। এতে দেখা যায় এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন অধ্যাপক মান্নান। এর মধ্যে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী দুই লাখ ৫৫ হাজার ৩২১ এবং আজমত উল্লা এক লাখ ৫২ হাজার ৩২০ ভোট পান। তবে এই হিসাব প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট সূত্রের। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ২৫৩টি কেন্দ্রের ফলাফল দেওয়া হয়। এতে অধ্যাপক মান্নান দুই লাখ ৩৫ হাজার ১৪৪ ভোট এবং আজমত উল্লা পান এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৩ ভোট। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে দুই হাজার এক। এদিকে গাজীপুরের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকেও সব শেষ প্রায় আড়াই শ কেন্দ্রের ফল লাভ সম্ভব হয়।
এর আগে রাত ১১টায় অধ্যাপক আবদুল মান্নান ফলের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই গাজীপুরবাসীকে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ফলাফল যাই হোক এখন আর তা মেনে না নেওয়ার অবকাশ নেই। কারণ আমাদের পোলিং এজেন্ট এবং রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়- উভয় ক্ষেত্রেই আমি বিপুল ভোটে এগিয়ে আছি। এই ফল আর কোনোভাবেই পরিবর্তনের সুযোগ নেই।'
গত ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিজয়ের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্গ (গোপালগঞ্জকে ধরা হয় এক নম্বর দুর্গ) বলে পরিচিত গাজীপুরে বিজয় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির জন্য বড় রকমের রাজনৈতিক অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণকালে কোনো কোনো কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও অনেক ভোটকেন্দ্রে অব্যবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রধান দুই মেয়র পদপ্রার্থীর একজন মহাজোট সমর্থিত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা নির্বাচন সুষুমভাবে সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করলেও ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত অধ্যাপক এম এ মান্নান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকি দেওয়া ও তাঁর এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। অধ্যাপক মান্নানের প্রধান নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয়কারী হাসান উদ্দিন সরকার অভিযোগ করেন, আজমত উল্লার বাড়ির পাশের একটি কেন্দ্র আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দখল করে ইচ্ছামতো সিল মেরেছে। অবশ্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি অস্বীকার করেছে। বিকেল ৪টায় হাসান সরকার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে সাতটি কেন্দ্র দখলের লিখিত অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো জাহাঙ্গীর আলমও ভোট দিয়েছেন এবং বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরেছেন।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল পাওয়া যেতে থাকলে বেশির ভাগ স্থানে ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক মান্নানের সমর্থকদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
৩২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের ৩৯৪টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন বয়সী শত শত ভোটার নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরও ভোটকেন্দ্রে হাজির হতে দেখা যায়। কেন্দ্রগুলোর সামনে সুতায় বাঁধা পোস্টারে ছিল সয়লাব।
শুরুতে ভোটগ্রহণের গতি কিছুটা মন্থর থাকলেও ১০টার পরই গতি বাড়তে থাকে। দুপুর ২টার মধ্যে অনেক কেন্দ্রেই প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে। ভোট দিতে গিয়ে ভোটারদের নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ভোটারদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতাও লক্ষ করা গেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণের পরও অনেক কেন্দ্রের আঙিনায় থাকা ভোটাররা ভোট দেন। এ সময় পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো গোলযোগ হয়নি। তবে মেয়র বা কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কয়েকটি কেন্দ্রে উচ্ছৃঙ্খল কিছু লোক হট্টগোল সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটদেওড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে হাঙ্গামা বাধে। এক পর্যায়ে রমিজউদ্দিনের সমর্থকরা অন্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী খায়রুল আলমকে লাঞ্ছিত করে পানিতে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্নু টেক্সটাইল মিল স্কুল কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশের সাহায্যে প্রিসাইডিং অফিসার মাসুদুর রহমান ব্যালট বাক্স নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের দিকে রওনা দিলে জনগণ বাধা দেয়। পরে জনতা ব্যারিকেড দিলে মাসুদুর রহমান সেখানেই ফল ঘোষণা করেন। অবশ্য মাসুদুর রহমান দাবি করেন, এটা একেবারেই গুজব। গুজবে কান দিয়ে বাইরের কিছু লোক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
অন্যদিকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ভেতরে চারজন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী টানা অবস্থান করতে থাকলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ বারবার তাঁদের বের হওয়ার অনুরোধ করে। ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে খবর দিলে ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম চারজনকে ডেকে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখেন। পরে কেন্দ্রে আর না ঢোকার ওয়াদা দেওয়ার পর তাঁদের ছেড়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
ভোটগ্রহণ চিত্র : সকাল সোয়া ৮টায় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কলমেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ১ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র পদপ্রার্থীরই এজেন্ট রয়েছে। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানালেন অ্যাডভোকেট আজমত উল্লার পোলিং এজেন্ট আবুল হাশেম ও অধ্যাপক এম এ মান্নানের পোলিং এজেন্ট আবদুল আলিম। তাঁদের দুজনকে পাশাপাশি বসেই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার আশরাফুল আলম কালের কণ্ঠকে জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রথম ঘণ্টায় তিন হাজার ২০৭ ভোটের মধ্যে ২২৮ ভোট পড়েছে। ভোটগ্রহণের এই গতিকে সন্তোষজনক মনে করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী আহমেদ আলী পাবলিক স্কুল মহিলা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কয়েক শ নারীর দীর্ঘ লাইন। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রিপন কবির লস্কর জানান, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিন হাজার ৩৯৯ ভোটের মধ্যে আটটি বুথে ৩০০ ভোট পড়েছে। মেয়র ও দুই কাউন্সিলরসহ একসঙ্গে তিনটি ভোট দিতে কিছুটা অতিরিক্ত সময় লাগে। এ ছাড়া মহিলারা একটু ধীরেসুস্থে ভোট দেন। এ জন্য একটু সময় বেশি লাগছে।
৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের খলিকুর বাসমালিয়া অগ্রণী বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রিপন রায় জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০০ ভোট পড়েছে। কেন্দ্রটিতে ভোটের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬০। সবই মহিলা ভোটার। এ কেন্দ্রটিতেও কাউন্সিলর প্রার্থীসহ প্রধান দুই মেয়র পদপ্রার্থীর এজেন্টকে দেখা গেছে। কারোরই কোনো অভিযোগ নেই পরস্পরের বিরুদ্ধে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বারবৈকা মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ১১টা ১০ মিনিটে গিয়ে দেখা যায় আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন নামের একটি স্কুলের দুই কক্ষের একটি ভবনের মধ্যে চলছে ভোটগ্রহণ। পাঁচটি বুথে সেখানে ভোটার দুই হাজার ৬৬২ জন। কক্ষের মধ্যে এজেন্টদের বসারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। দাঁড়িয়ে বা ঠাসাঠাসি করে বসে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা। ভোটারদেরও দাঁড়ানোর মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। একটি ডোবার পাশে বাঁশের মাচা বানিয়ে তার ওপরে ভোটারদের দাঁড় করানো হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার এস এম শহিদুল্লাহ বলেন, 'ভোটারদের দুর্ভোগ দেখে আমারই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু করার কিছু নেই। কেন্দ্রটিতে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়রের এজেন্টদেরও পাওয়া যায়।
৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্ত মণ্ডল কিন্ডারগার্টেন মহিলা ভোটকেন্দ্রের দুই হাজার ৭৪৫ ভোটের মধ্যে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ৬০৩ ভোট পড়ে বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার খোরশেদ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যত ভোটার আছে ভোটগ্রহণের চেষ্টা করব।
২ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিমপুর এলাকার কফিলউদ্দিন আহমেদ পাবলিক স্কুল কেন্দ্রের তিন হাজার পুরুষ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৮১১ ভোট পড়ে বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার আবুল কাশেম ইউসুফ।
অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা সকালে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের খান আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন। এরপর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ফলাফল মেনে নেব।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত অধ্যাপক মান্নান ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শালনা ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা তাদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার এজেন্টদেরও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।'
আজমতের বাড়ির পাশের কেন্দ্র দখল! : টঙ্গীতে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের বাড়ির পাশের খান আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্র দখল করে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক মান্নানের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, বিকেল পৌনে ৪টায় সেখান থেকে অধ্যাপক এম এ মান্নানের সব এজেন্টকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে আজমত উল্লার দোয়াত-কলম প্রতীকে সিল মারা হচ্ছে। কেন্দ্র দখলে বাধা দেওয়ায় সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলায় স্থানীয় যুবদলের চারজন আহত হয়েছে। খবর দেওয়ার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য সেখানে যাচ্ছে না। হাসান সরকার জানান, কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোখলেসুর রহমানের কাছ থেকে সরকারদলীয় ক্যাডাররা জোরপূর্বক ব্যালট বই ছিনিয়ে নিয়েছে। এসব অভিযোগ তিনি রিটার্নিং অফিসারকেও অবহিত করেন। কেন্দ্রটিতে তিন হাজার ভোট রয়েছে। অবশ্য টঙ্গী থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কিছু সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখল করতে এসেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের প্রতিরোধ করেছে।
বেসরকারি ৭১ টিভি এ খবর দিলেও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ফল ঘোষণা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল। অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমের খবরেও ছিল একই চিত্র। এদিকে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে ৩২০টি কেন্দ্রের ফল পাওয়া যায়। এতে দেখা যায় এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন অধ্যাপক মান্নান। এর মধ্যে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী দুই লাখ ৫৫ হাজার ৩২১ এবং আজমত উল্লা এক লাখ ৫২ হাজার ৩২০ ভোট পান। তবে এই হিসাব প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট সূত্রের। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ২৫৩টি কেন্দ্রের ফলাফল দেওয়া হয়। এতে অধ্যাপক মান্নান দুই লাখ ৩৫ হাজার ১৪৪ ভোট এবং আজমত উল্লা পান এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৩ ভোট। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে দুই হাজার এক। এদিকে গাজীপুরের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকেও সব শেষ প্রায় আড়াই শ কেন্দ্রের ফল লাভ সম্ভব হয়।
এর আগে রাত ১১টায় অধ্যাপক আবদুল মান্নান ফলের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই গাজীপুরবাসীকে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ফলাফল যাই হোক এখন আর তা মেনে না নেওয়ার অবকাশ নেই। কারণ আমাদের পোলিং এজেন্ট এবং রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়- উভয় ক্ষেত্রেই আমি বিপুল ভোটে এগিয়ে আছি। এই ফল আর কোনোভাবেই পরিবর্তনের সুযোগ নেই।'
গত ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিজয়ের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্গ (গোপালগঞ্জকে ধরা হয় এক নম্বর দুর্গ) বলে পরিচিত গাজীপুরে বিজয় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির জন্য বড় রকমের রাজনৈতিক অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণকালে কোনো কোনো কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও অনেক ভোটকেন্দ্রে অব্যবস্থাপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রধান দুই মেয়র পদপ্রার্থীর একজন মহাজোট সমর্থিত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা নির্বাচন সুষুমভাবে সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করলেও ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত অধ্যাপক এম এ মান্নান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকি দেওয়া ও তাঁর এজেন্টকে বুথ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। অধ্যাপক মান্নানের প্রধান নির্বাচনী কার্যক্রম সমন্বয়কারী হাসান উদ্দিন সরকার অভিযোগ করেন, আজমত উল্লার বাড়ির পাশের একটি কেন্দ্র আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দখল করে ইচ্ছামতো সিল মেরেছে। অবশ্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি অস্বীকার করেছে। বিকেল ৪টায় হাসান সরকার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে সাতটি কেন্দ্র দখলের লিখিত অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো জাহাঙ্গীর আলমও ভোট দিয়েছেন এবং বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরেছেন।
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফল পাওয়া যেতে থাকলে বেশির ভাগ স্থানে ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যাপক মান্নানের সমর্থকদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।
৩২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের ৩৯৪টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন বয়সী শত শত ভোটার নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরও ভোটকেন্দ্রে হাজির হতে দেখা যায়। কেন্দ্রগুলোর সামনে সুতায় বাঁধা পোস্টারে ছিল সয়লাব।
শুরুতে ভোটগ্রহণের গতি কিছুটা মন্থর থাকলেও ১০টার পরই গতি বাড়তে থাকে। দুপুর ২টার মধ্যে অনেক কেন্দ্রেই প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে। ভোট দিতে গিয়ে ভোটারদের নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে নারী ভোটারদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতাও লক্ষ করা গেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণের পরও অনেক কেন্দ্রের আঙিনায় থাকা ভোটাররা ভোট দেন। এ সময় পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো গোলযোগ হয়নি। তবে মেয়র বা কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কয়েকটি কেন্দ্রে উচ্ছৃঙ্খল কিছু লোক হট্টগোল সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছোটদেওড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে হাঙ্গামা বাধে। এক পর্যায়ে রমিজউদ্দিনের সমর্থকরা অন্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী খায়রুল আলমকে লাঞ্ছিত করে পানিতে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্নু টেক্সটাইল মিল স্কুল কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশের সাহায্যে প্রিসাইডিং অফিসার মাসুদুর রহমান ব্যালট বাক্স নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের দিকে রওনা দিলে জনগণ বাধা দেয়। পরে জনতা ব্যারিকেড দিলে মাসুদুর রহমান সেখানেই ফল ঘোষণা করেন। অবশ্য মাসুদুর রহমান দাবি করেন, এটা একেবারেই গুজব। গুজবে কান দিয়ে বাইরের কিছু লোক ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।
অন্যদিকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ভেতরে চারজন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী টানা অবস্থান করতে থাকলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ বারবার তাঁদের বের হওয়ার অনুরোধ করে। ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে খবর দিলে ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম চারজনকে ডেকে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখেন। পরে কেন্দ্রে আর না ঢোকার ওয়াদা দেওয়ার পর তাঁদের ছেড়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
ভোটগ্রহণ চিত্র : সকাল সোয়া ৮টায় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কলমেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ১ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র পদপ্রার্থীরই এজেন্ট রয়েছে। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানালেন অ্যাডভোকেট আজমত উল্লার পোলিং এজেন্ট আবুল হাশেম ও অধ্যাপক এম এ মান্নানের পোলিং এজেন্ট আবদুল আলিম। তাঁদের দুজনকে পাশাপাশি বসেই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং অফিসার আশরাফুল আলম কালের কণ্ঠকে জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রথম ঘণ্টায় তিন হাজার ২০৭ ভোটের মধ্যে ২২৮ ভোট পড়েছে। ভোটগ্রহণের এই গতিকে সন্তোষজনক মনে করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী আহমেদ আলী পাবলিক স্কুল মহিলা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কয়েক শ নারীর দীর্ঘ লাইন। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রিপন কবির লস্কর জানান, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তিন হাজার ৩৯৯ ভোটের মধ্যে আটটি বুথে ৩০০ ভোট পড়েছে। মেয়র ও দুই কাউন্সিলরসহ একসঙ্গে তিনটি ভোট দিতে কিছুটা অতিরিক্ত সময় লাগে। এ ছাড়া মহিলারা একটু ধীরেসুস্থে ভোট দেন। এ জন্য একটু সময় বেশি লাগছে।
৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের খলিকুর বাসমালিয়া অগ্রণী বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার রিপন রায় জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০০ ভোট পড়েছে। কেন্দ্রটিতে ভোটের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬০। সবই মহিলা ভোটার। এ কেন্দ্রটিতেও কাউন্সিলর প্রার্থীসহ প্রধান দুই মেয়র পদপ্রার্থীর এজেন্টকে দেখা গেছে। কারোরই কোনো অভিযোগ নেই পরস্পরের বিরুদ্ধে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বারবৈকা মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ১১টা ১০ মিনিটে গিয়ে দেখা যায় আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন নামের একটি স্কুলের দুই কক্ষের একটি ভবনের মধ্যে চলছে ভোটগ্রহণ। পাঁচটি বুথে সেখানে ভোটার দুই হাজার ৬৬২ জন। কক্ষের মধ্যে এজেন্টদের বসারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। দাঁড়িয়ে বা ঠাসাঠাসি করে বসে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা। ভোটারদেরও দাঁড়ানোর মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। একটি ডোবার পাশে বাঁশের মাচা বানিয়ে তার ওপরে ভোটারদের দাঁড় করানো হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার এস এম শহিদুল্লাহ বলেন, 'ভোটারদের দুর্ভোগ দেখে আমারই কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু করার কিছু নেই। কেন্দ্রটিতে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়রের এজেন্টদেরও পাওয়া যায়।
৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের অনন্ত মণ্ডল কিন্ডারগার্টেন মহিলা ভোটকেন্দ্রের দুই হাজার ৭৪৫ ভোটের মধ্যে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ৬০৩ ভোট পড়ে বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার খোরশেদ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যত ভোটার আছে ভোটগ্রহণের চেষ্টা করব।
২ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিমপুর এলাকার কফিলউদ্দিন আহমেদ পাবলিক স্কুল কেন্দ্রের তিন হাজার পুরুষ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৮১১ ভোট পড়ে বলে জানান প্রিসাইডিং অফিসার আবুল কাশেম ইউসুফ।
অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা সকালে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের খান আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন। এরপর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ফলাফল মেনে নেব।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত অধ্যাপক মান্নান ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শালনা ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন। এরপর তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা তাদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার এজেন্টদেরও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।'
আজমতের বাড়ির পাশের কেন্দ্র দখল! : টঙ্গীতে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের বাড়ির পাশের খান আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্র দখল করে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক মান্নানের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, বিকেল পৌনে ৪টায় সেখান থেকে অধ্যাপক এম এ মান্নানের সব এজেন্টকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে আজমত উল্লার দোয়াত-কলম প্রতীকে সিল মারা হচ্ছে। কেন্দ্র দখলে বাধা দেওয়ায় সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলায় স্থানীয় যুবদলের চারজন আহত হয়েছে। খবর দেওয়ার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য সেখানে যাচ্ছে না। হাসান সরকার জানান, কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোখলেসুর রহমানের কাছ থেকে সরকারদলীয় ক্যাডাররা জোরপূর্বক ব্যালট বই ছিনিয়ে নিয়েছে। এসব অভিযোগ তিনি রিটার্নিং অফিসারকেও অবহিত করেন। কেন্দ্রটিতে তিন হাজার ভোট রয়েছে। অবশ্য টঙ্গী থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কিছু সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখল করতে এসেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের প্রতিরোধ করেছে।
No comments