ফেরা by ইব্রাহীম রাসেল
বাতিটা নেভাও, ঘুমাব। মাথাটা ঝিমঝিম করছে।
পারলে কপালটা একটু টিপে দাও। কিছুটা ক্লান্তিমাখা কণ্ঠে কথাগুলো বলল
আনিতা। যাকে বলল সে আর কেউ নয়, আনিতার জীবনের সবকিছু জড়িয়ে যার বসবাস।
কিছুটা আক্ষেপ, তবুও ভালোবাসে মানুষটাকে। ভীষণ কি না জানে না।
এবার খেই খেই করে ওঠে আনিতা, কী হলো ফারদিন? তোমাকে কখন না বললাম বাতিটা নেভাও। আজব একটা মানুষ তুমি। কখনো বুঝতে চাও না আমাকে। সারাটাক্ষণ শুধু খামখেয়ালি করো, রাবিশ।
ফারদিন বাতি জ্বালিয়ে বই পড়ছিল। যথারীতি কোমল সুরে, আচ্ছা দিচ্ছি। (ফারদিন সুইচটা অফ করে) এবার আরাম করে ঘুমাও।
ক্লান্ত শরীরে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে আনিতা। কিছুতেই ঘুম আসছে না। জোর করে চোখের দুপাতা এক করতেই একটা ঘোরের মধ্যে ডুবে যায়...সাতটি বছরের দাম্পত্যজীবন তাদের। কারণে-অকারণে যা ইচ্ছা তা-ই বলে ফারদিনকে। কোনো বিবর্তন নেই মানুষটার। মাঝেমধ্যে মনে হয়, এত লম্বা একটা জীবন কী করে পার করবে এই একরোখা মানুষটার সঙ্গে! মানুষটাকে ঠিক কোন সংজ্ঞায় ফেলবে তা আজও বুঝে উঠতে পারেনি সে।
জানালার ফাঁক দিয়ে সকালের চিকচিকে রোদ এসে আনিতার চোখে লাগে। হুড়মুড় করে বিছানা ছাড়ে। নাশতা বানাতে হবে ফারদিনের জন্য। ফারদিন খুব সকাল সকাল বের হয়। আনিতা ফারদিনকে ডাকে ফারদিন...ফারদিন...কোথায় গেলে তুমি। বাথরুমে শাওয়ারের শব্দ পেয়ে ভাবে বাথরুমে আছে। কিন্তু অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া না পেয়ে বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দেয় আনিতা। সাওয়ার ছাড়া কিন্তু ফারদিন নেই। একটু অবাক হয় সে। বারান্দায় যায়, নিচে রাস্তার দিকে তাকায়, কোথাও দেখতে পায় না। ফোন করে, তাও বন্ধ পাচ্ছে। যথারীতি টেনশন হয় আনিতার। কোথায় গেল মানুষটা! সম্ভাব্য সব জায়গায় ফোন করেও নিরাশ হয়। তাহলে কি আমার ওপর অভিমান করে এমন করছে? নানা প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দেয় আনিতার মনে। এভাবে এক দিন, দুই দিন করে সপ্তাহ পার হয়ে যায়। টেনশনে টেনশনে আনিতার চোখমুখ শুকিয়ে একাকার।
হঠাৎ কলবেল বেজে ওঠে। আনিতা এক দৌড়ে দরজার দিকে ছুটে যায়। দরজা খুলে দেখে ফারদিন। কোনো কথা না বলেই জাপটে ধরে তাকে। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে আনিতা। নানা প্রশ্নে জর্জরিত করে ফারদিনকে।
চিরচেনা সেই সুরেই ফারদিন বলে, কেউ যখন নিজে থেকে হারিয়ে যায়, তখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমার সঙ্গে ঠুনকো বিষয় নিয়ে যে রূঢ় আচরণগুলো করো তার একমাত্র কারণ হচ্ছে, নিজের মতো করে আমাকে আশা করো। এটা ঠিক নয়। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। আর আমার এই না বলে চলে যাওয়ার কারণ একটাই—যাকে ভালোবাসি, তাকে কটুবাক্য শোনাতে চাই না। তাই আড়ালে গিয়েছি নিজেকে সংযত করার জন্য। এটাই আমার জন্য সহজ উপায়। আর যেখানেই যাই না কেন, আমি ফিরব। অবশ্যই ফিরব তোমার কাছে।
আনিতা আরও জোরে চেপে ধরে ফারদিনকে। তার শুকিয়ে যাওয়া বুকের ভেতর টুপটাপ বৃষ্টি হতে থাকে। ফারদিনের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, আর কখনো এমন হবে না; দেখে নিয়ো।
এবার খেই খেই করে ওঠে আনিতা, কী হলো ফারদিন? তোমাকে কখন না বললাম বাতিটা নেভাও। আজব একটা মানুষ তুমি। কখনো বুঝতে চাও না আমাকে। সারাটাক্ষণ শুধু খামখেয়ালি করো, রাবিশ।
ফারদিন বাতি জ্বালিয়ে বই পড়ছিল। যথারীতি কোমল সুরে, আচ্ছা দিচ্ছি। (ফারদিন সুইচটা অফ করে) এবার আরাম করে ঘুমাও।
ক্লান্ত শরীরে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে আনিতা। কিছুতেই ঘুম আসছে না। জোর করে চোখের দুপাতা এক করতেই একটা ঘোরের মধ্যে ডুবে যায়...সাতটি বছরের দাম্পত্যজীবন তাদের। কারণে-অকারণে যা ইচ্ছা তা-ই বলে ফারদিনকে। কোনো বিবর্তন নেই মানুষটার। মাঝেমধ্যে মনে হয়, এত লম্বা একটা জীবন কী করে পার করবে এই একরোখা মানুষটার সঙ্গে! মানুষটাকে ঠিক কোন সংজ্ঞায় ফেলবে তা আজও বুঝে উঠতে পারেনি সে।
জানালার ফাঁক দিয়ে সকালের চিকচিকে রোদ এসে আনিতার চোখে লাগে। হুড়মুড় করে বিছানা ছাড়ে। নাশতা বানাতে হবে ফারদিনের জন্য। ফারদিন খুব সকাল সকাল বের হয়। আনিতা ফারদিনকে ডাকে ফারদিন...ফারদিন...কোথায় গেলে তুমি। বাথরুমে শাওয়ারের শব্দ পেয়ে ভাবে বাথরুমে আছে। কিন্তু অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া না পেয়ে বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দেয় আনিতা। সাওয়ার ছাড়া কিন্তু ফারদিন নেই। একটু অবাক হয় সে। বারান্দায় যায়, নিচে রাস্তার দিকে তাকায়, কোথাও দেখতে পায় না। ফোন করে, তাও বন্ধ পাচ্ছে। যথারীতি টেনশন হয় আনিতার। কোথায় গেল মানুষটা! সম্ভাব্য সব জায়গায় ফোন করেও নিরাশ হয়। তাহলে কি আমার ওপর অভিমান করে এমন করছে? নানা প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দেয় আনিতার মনে। এভাবে এক দিন, দুই দিন করে সপ্তাহ পার হয়ে যায়। টেনশনে টেনশনে আনিতার চোখমুখ শুকিয়ে একাকার।
হঠাৎ কলবেল বেজে ওঠে। আনিতা এক দৌড়ে দরজার দিকে ছুটে যায়। দরজা খুলে দেখে ফারদিন। কোনো কথা না বলেই জাপটে ধরে তাকে। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে আনিতা। নানা প্রশ্নে জর্জরিত করে ফারদিনকে।
চিরচেনা সেই সুরেই ফারদিন বলে, কেউ যখন নিজে থেকে হারিয়ে যায়, তখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমার সঙ্গে ঠুনকো বিষয় নিয়ে যে রূঢ় আচরণগুলো করো তার একমাত্র কারণ হচ্ছে, নিজের মতো করে আমাকে আশা করো। এটা ঠিক নয়। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। আর আমার এই না বলে চলে যাওয়ার কারণ একটাই—যাকে ভালোবাসি, তাকে কটুবাক্য শোনাতে চাই না। তাই আড়ালে গিয়েছি নিজেকে সংযত করার জন্য। এটাই আমার জন্য সহজ উপায়। আর যেখানেই যাই না কেন, আমি ফিরব। অবশ্যই ফিরব তোমার কাছে।
আনিতা আরও জোরে চেপে ধরে ফারদিনকে। তার শুকিয়ে যাওয়া বুকের ভেতর টুপটাপ বৃষ্টি হতে থাকে। ফারদিনের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, আর কখনো এমন হবে না; দেখে নিয়ো।
No comments