পবিত্র কোরআনের আলো-প্রতিশোধ নয়, অত্যাচারী ভাইদের তিরস্কারও করেননি
৯১. কা-লূ তাল্লা-হি লাকাদ
আ-ছারাকাল্লা-হু 'আলাইনা ওয়া ইন কুন্না- লা খা-তিঈনা। ৯২. কা-লা লা তাছরীবা
'আলাইকুমুল য়াওমা, য়াগফিরুল্লা-হু লাকুম, ওয়া হুওয়া আরহামুর রা-হিমীনা।
সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৯১. তারা বলল, আল্লাহর কসম, আমাদের
ওপর আল্লাহ তোমাকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আমরা অবশ্যই অপরাধী ছিলাম। ৯২.
ইউসুফ বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের মাফ
করুন।* তিনিই সব দয়ালুর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম দয়ালু।
তাফসির : * ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা নিজেদের অপরাধী স্বীকার করে নিল। এ পর্যায়ে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেওয়া এবং তাঁকে সম্মান প্রদর্শন না করারও কোনো বিকল্প উপায় ছিল না। ফলে একযোগে ভাইয়েরা বলে উঠল, আল্লাহর কসম, তিনিই তোমাকে আমাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দিয়েছেন। ঈর্ষণীয় এই মর্যাদা ও রাষ্ট্রের শীর্ষ অবস্থানে তোমাকেই মানায়, তুমি এরই যোগ্য ছিলে। আমরা তোমার সঙ্গে অপরাধ করেছি। এ নিয়ে লজ্জিত। আমাদের কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ভাইদের মুখে এমন কথাবার্তা শুনে ইউসুফ (আ.) নবুওয়তি গাম্ভীর্যের সঙ্গে বললেন, তোমাদের কৃত অত্যাচারের প্রতিশোধ নেওয়া দূরে থাকুক, এ ধরনের কল্পনাও আমার মধ্যে নেই। তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই। এ কথা বলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভাইদের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করে বললেন, আল্লাহ, তুমি তাদের মাফ করো। তুমিই সবচেয়ে বড় দয়ালু। তাদের কৃত অপরাধকে তোমার দয়ায় ক্ষমা করে দাও।
এর আগে কোরআন শরিফের আয়াতে ইউসুফ (আ.) ভাইদের স্পষ্টত বলেছেন, তোমরা আমার সঙ্গে যে অত্যাচার করেছিলে, তা করার সময় তোমরা মূর্খ ছিলে। এ বিষয়ে আলেমগণের মত হলো, সব গোনাহ বান্দার মাধ্যমে কেবল মূর্খতার কারণেই সংঘটিত হয়, অন্তত গোনাহের কাজটি সম্পন্ন করার সময় সংশ্লিষ্ট গোনাহগার প্রকৃত অর্থেই মূর্খ বনে যায়। তারা প্রমাণ হিসেবে ইউসুফ (আ.)-এর এই বক্তব্য এবং কোরআন ও হাদিসের আরো অনেক উদ্ধৃতি উল্লেখ করে থাকেন। ইউসুফ (আ.) শৈশবে অত্যাচারিত হওয়ার সময় থেকেই ভাইদের এই মূর্খতার বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। যে কারণে কখনো তিনি ভাইদের বিরুদ্ধে কোনো বদ দোয়া করেছেন বা প্রতিশোধমূলক আচরণ করেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। আসলে আল্লাহ তায়ালা যাঁকে নবী হিসেবে কবুল করেছেন, নিজের নির্বাচিত বান্দা হিসেবে জন্ম দিয়েছেন, অসংখ্য পথহারা মানুষের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, সেই মহান নবী হজরত ইউসুফ (আ.) এমনই সুন্দর ও উজ্জ্বল চরিত্রের ব্যক্তিত্ব হবেন- তাই স্বাভাবিক। সব নবী-রাসুল আমাদের জন্য অনুসরণীয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। তাঁর আগে দুনিয়ায় আগত নবী-রাসুলগণের যে বিধানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে কোরআন-হাদিসে উল্লেখ করার মাধ্যমে রহিত করা হয়েছে, এর বাইরে বাকি সব আদর্শই অনুসরণযোগ্য। অত্যাচারীকে ক্ষমা করে দেওয়া মুমিনের গুণ। কোনো ধরনের তিরস্কার না করা এবং প্রয়োজনে সম্মান প্রদর্শন করা সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের নমুনা এবং এটি হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মহান গুণ। এই গুণ মুসলিম প্রতিটি সদস্যের জন্যই অনুসরণযোগ্য। আল্লাহর খাঁটি ও মকবুল বান্দা হতে হলে এ ধরনের উত্তম গুণাবলি চর্চা করা উচিত।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা নিজেদের অপরাধী স্বীকার করে নিল। এ পর্যায়ে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেওয়া এবং তাঁকে সম্মান প্রদর্শন না করারও কোনো বিকল্প উপায় ছিল না। ফলে একযোগে ভাইয়েরা বলে উঠল, আল্লাহর কসম, তিনিই তোমাকে আমাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দিয়েছেন। ঈর্ষণীয় এই মর্যাদা ও রাষ্ট্রের শীর্ষ অবস্থানে তোমাকেই মানায়, তুমি এরই যোগ্য ছিলে। আমরা তোমার সঙ্গে অপরাধ করেছি। এ নিয়ে লজ্জিত। আমাদের কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ভাইদের মুখে এমন কথাবার্তা শুনে ইউসুফ (আ.) নবুওয়তি গাম্ভীর্যের সঙ্গে বললেন, তোমাদের কৃত অত্যাচারের প্রতিশোধ নেওয়া দূরে থাকুক, এ ধরনের কল্পনাও আমার মধ্যে নেই। তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই। এ কথা বলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভাইদের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করে বললেন, আল্লাহ, তুমি তাদের মাফ করো। তুমিই সবচেয়ে বড় দয়ালু। তাদের কৃত অপরাধকে তোমার দয়ায় ক্ষমা করে দাও।
এর আগে কোরআন শরিফের আয়াতে ইউসুফ (আ.) ভাইদের স্পষ্টত বলেছেন, তোমরা আমার সঙ্গে যে অত্যাচার করেছিলে, তা করার সময় তোমরা মূর্খ ছিলে। এ বিষয়ে আলেমগণের মত হলো, সব গোনাহ বান্দার মাধ্যমে কেবল মূর্খতার কারণেই সংঘটিত হয়, অন্তত গোনাহের কাজটি সম্পন্ন করার সময় সংশ্লিষ্ট গোনাহগার প্রকৃত অর্থেই মূর্খ বনে যায়। তারা প্রমাণ হিসেবে ইউসুফ (আ.)-এর এই বক্তব্য এবং কোরআন ও হাদিসের আরো অনেক উদ্ধৃতি উল্লেখ করে থাকেন। ইউসুফ (আ.) শৈশবে অত্যাচারিত হওয়ার সময় থেকেই ভাইদের এই মূর্খতার বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। যে কারণে কখনো তিনি ভাইদের বিরুদ্ধে কোনো বদ দোয়া করেছেন বা প্রতিশোধমূলক আচরণ করেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। আসলে আল্লাহ তায়ালা যাঁকে নবী হিসেবে কবুল করেছেন, নিজের নির্বাচিত বান্দা হিসেবে জন্ম দিয়েছেন, অসংখ্য পথহারা মানুষের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, সেই মহান নবী হজরত ইউসুফ (আ.) এমনই সুন্দর ও উজ্জ্বল চরিত্রের ব্যক্তিত্ব হবেন- তাই স্বাভাবিক। সব নবী-রাসুল আমাদের জন্য অনুসরণীয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। তাঁর আগে দুনিয়ায় আগত নবী-রাসুলগণের যে বিধানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে কোরআন-হাদিসে উল্লেখ করার মাধ্যমে রহিত করা হয়েছে, এর বাইরে বাকি সব আদর্শই অনুসরণযোগ্য। অত্যাচারীকে ক্ষমা করে দেওয়া মুমিনের গুণ। কোনো ধরনের তিরস্কার না করা এবং প্রয়োজনে সম্মান প্রদর্শন করা সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের নমুনা এবং এটি হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মহান গুণ। এই গুণ মুসলিম প্রতিটি সদস্যের জন্যই অনুসরণযোগ্য। আল্লাহর খাঁটি ও মকবুল বান্দা হতে হলে এ ধরনের উত্তম গুণাবলি চর্চা করা উচিত।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments