সংরক্ষিত নয়, নির্বাচন করেই আসুন by নুরুল ইসলাম বিএসসি
আমরা
এবার সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের মাননীয় সংসদ সদস্যদের মুখ থেকে যে
অশ্রাব্য কথাবার্তা শুনেছি, তাতে কানে আঙ্গুল না দিয়ে পারা যায়নি। এর চেয়ে
বরং ওই দিন সংসদে না গেলেই ভালো ছিল। প্রত্যুত্তর দিতে গিয়ে সরকারদলীয় একজন
মহিলা সদস্যও যে ভাষায় ও যে তত্ত্বে কথা বলেছেন, ওটাকেও সমর্থন করা যায়
না। সংসদ একটি পবিত্র জায়গা। পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি এমন শব্দ উচ্চারণ
করা হয়, ‘চুদুরবুদুর’- তাহলে পবিত্রতা নষ্ট তো হয়ই, দেশের মানুষেরও সংসদের
প্রতি ঘৃণা পোষণ ছাড়া অন্য পথ খোলা থাকে না। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য
শব্দগুলো ব্যবহার করা হয় বলে ধরে নিতে পারি। অথবা এমনও হতে পারে, তারা
তাদের দৈনন্দিন জীবনেও ওরকম আচরণ করে থাকেন। আবার এমন উপসংহারেও আসা যায়,
দলীয় প্রধানকে খুশি করার জন্য- আগামীতে যেন আবারও দয়ার এমপি হতে পারেন, তার
জন্যই এই বাক্য প্রয়োগ। এতে করে দলীয় প্রধান খুশি হয়ে আগামীতে তাকেই নেবেন
এবং তিনি ওই একই বাক্য প্রয়োগের জন্য তৈরি থাকবেন। মহিলাদের মধ্যে অনেকে
সরাসরি নির্বাচন করে জিতে এসেছেন। পুরুষ, নারীর সম্মিলিত ভোটে নির্বাচিত
মহিলাদের অনেকে আজ মন্ত্রী। যোগ্যতা থাকলে সরাসরি নির্বাচনে জিতে আসা যায়।
আমরা নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলি। সমান অধিকারই যদি হয়, প্রত্যেক
দল থেকে অর্ধেক নারী অর্ধেক পুরুষকে মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন করালে কেমন হয়,
দেখা দরকার।
সরাসরি ভোট না করে, জনগণের মুখোমুখি না হয়ে দলীয় প্রধানের ইচ্ছার ওপর (দয়ার ওপর) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে নিজেদের মান যায়, আবার এরা এসে সংসদে নানা বাক্যবাণে সংসদকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন।
এটা কোনো বিদ্বেষমূলক কথা নয় বা কারও প্রতি অসম্মান নয়। একসময় ছিল যখন নারীদের ক্ষমতায়নে বাধা ছিল। বর্তমান সময়ে নারীর ক্ষমতায়নে সব বাধা অপসারিত হয়েছে। এখন কেন ওই রকম আইন থাকবে?
জনসংখ্যার বিচারে সংসদকে ৪০০ আসনে উন্নীত করা দরকার। যখন ৩০০ আসনের কথা বলা ছিল, তখন জনসংখ্যা ছিল ১০/১২ কোটি, এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ কোটির কাছাকাছি। সুতরাং জনসংখ্যার বিচারে আসন বৃদ্ধি করলে এবং ওই সংখ্যার অর্ধেকে নারীদের সুযোগ করে দিলে দয়ার এমপির আর প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়।
প্রতি মিনিটে সংসদে ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। কেউ যদি গবেষণা করেন, কত ঘণ্টা মন্দ কথায়, বাজে কথায় ব্যবহৃত হয়েছে, কত ঘণ্টা দলীয় প্রধানের স্তুতিতে, কত ঘণ্টা দেশের কাজে, দেশের উন্নয়নের কথায় ব্যয় করা হয়েছে- নিশ্চয়ই একটা বিরাট অংকের ফিগার বের হবে, যা ছিল অপ্রয়োজনীয়। এ রকম একটা গবেষণা গবেষকদের কাছ থেকে জাতি আশা করে।
দেশে হাজারও সমস্যা আছে। দেশের উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের জায়গা সংসদ। সংসদে যদি এখনও আমরা ৪০ বছর ধরে ঘোষক নিয়ে বক্তৃতা করি এবং ওই সব বক্তৃতায় সময় ব্যয় করে জাতির কোটি কোটি টাকা নষ্ট করি, তাহলে জাতি দিশা পাবে কোথায়? জাতির পিতার একটি স্থায়ী সমাধান হয়েছে সংবিধানে, স্বীকৃতি এসেছে। ঘোষক নিয়েও যদি একটি প্রাণবন্ত আলোচনা সংসদে হয় এবং যে ফলাফল বের হবে তা বিএনপিসহ সবাই মেনে নেয়, তবেই স্থায়ী একটা সমাধান হতে পারে। ইতিহাস চলমান। ইতিহাসকে সাময়িক লাইনচ্যুত করা যায়। কিন্তু ইতিহাস যার যার জায়গা নিজেই নির্ধারণ করে দেয়। সুতরাং ইতিহাসের পাতা উল্টো দিকে ঘোরানোর কৌশল জাতিকে প্রগতির পথে চলতে বাধার সৃষ্টি করে, হানাহানি হয়।
হানাহানিমুক্ত বাংলাদেশই সবার কাম্য। ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেত যদি আমরা বিগত ৪০ বছর এর উন্নয়নে কাজ করতাম। কিন্তু পারিনি। যা পারিনি তা আগামীতে পারব না, এমন কথা নেই। আমরা সবাই প্রগতিশীল বাংলাদেশ চাই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
সরাসরি ভোট না করে, জনগণের মুখোমুখি না হয়ে দলীয় প্রধানের ইচ্ছার ওপর (দয়ার ওপর) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে নিজেদের মান যায়, আবার এরা এসে সংসদে নানা বাক্যবাণে সংসদকে মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন।
এটা কোনো বিদ্বেষমূলক কথা নয় বা কারও প্রতি অসম্মান নয়। একসময় ছিল যখন নারীদের ক্ষমতায়নে বাধা ছিল। বর্তমান সময়ে নারীর ক্ষমতায়নে সব বাধা অপসারিত হয়েছে। এখন কেন ওই রকম আইন থাকবে?
জনসংখ্যার বিচারে সংসদকে ৪০০ আসনে উন্নীত করা দরকার। যখন ৩০০ আসনের কথা বলা ছিল, তখন জনসংখ্যা ছিল ১০/১২ কোটি, এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ কোটির কাছাকাছি। সুতরাং জনসংখ্যার বিচারে আসন বৃদ্ধি করলে এবং ওই সংখ্যার অর্ধেকে নারীদের সুযোগ করে দিলে দয়ার এমপির আর প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়।
প্রতি মিনিটে সংসদে ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। কেউ যদি গবেষণা করেন, কত ঘণ্টা মন্দ কথায়, বাজে কথায় ব্যবহৃত হয়েছে, কত ঘণ্টা দলীয় প্রধানের স্তুতিতে, কত ঘণ্টা দেশের কাজে, দেশের উন্নয়নের কথায় ব্যয় করা হয়েছে- নিশ্চয়ই একটা বিরাট অংকের ফিগার বের হবে, যা ছিল অপ্রয়োজনীয়। এ রকম একটা গবেষণা গবেষকদের কাছ থেকে জাতি আশা করে।
দেশে হাজারও সমস্যা আছে। দেশের উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণের জায়গা সংসদ। সংসদে যদি এখনও আমরা ৪০ বছর ধরে ঘোষক নিয়ে বক্তৃতা করি এবং ওই সব বক্তৃতায় সময় ব্যয় করে জাতির কোটি কোটি টাকা নষ্ট করি, তাহলে জাতি দিশা পাবে কোথায়? জাতির পিতার একটি স্থায়ী সমাধান হয়েছে সংবিধানে, স্বীকৃতি এসেছে। ঘোষক নিয়েও যদি একটি প্রাণবন্ত আলোচনা সংসদে হয় এবং যে ফলাফল বের হবে তা বিএনপিসহ সবাই মেনে নেয়, তবেই স্থায়ী একটা সমাধান হতে পারে। ইতিহাস চলমান। ইতিহাসকে সাময়িক লাইনচ্যুত করা যায়। কিন্তু ইতিহাস যার যার জায়গা নিজেই নির্ধারণ করে দেয়। সুতরাং ইতিহাসের পাতা উল্টো দিকে ঘোরানোর কৌশল জাতিকে প্রগতির পথে চলতে বাধার সৃষ্টি করে, হানাহানি হয়।
হানাহানিমুক্ত বাংলাদেশই সবার কাম্য। ভৌগোলিক অবস্থানের বিচারে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেত যদি আমরা বিগত ৪০ বছর এর উন্নয়নে কাজ করতাম। কিন্তু পারিনি। যা পারিনি তা আগামীতে পারব না, এমন কথা নেই। আমরা সবাই প্রগতিশীল বাংলাদেশ চাই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি : সংসদ সদস্য ও কলাম লেখক
No comments