দৈনন্দিন বিজ্ঞান-লিফট আবিষ্কারের কথা
আকাশ সমান উঁচু উঁচু দালানের মাথায় ওঠার
জন্য সিঁড়ির কথা ভাবলে নিশ্চিত পায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যাবে। লিফট লাগবেই। তা
ছাড়া ছোট ছোট বিল্ডিংয়েও এখন লিফটের সুবিধা থাকছে।
প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস জিনিসপত্র ওঠানো-নামানোর জন্য
দড়ি এবং পুলির সাহায্যে কপিকল নির্মাণ করেন। পৃথিবীর প্রথম লিফট তৈরি করা
হয় ১৭৪৩ সালে ফ্রান্সের রাজপ্রাসাদে রাজা কিং লুইস পঞ্চদশের জন্য। একজন
ব্যক্তিকে বহন করতে সক্ষম এই যন্ত্র শুধু প্রথম তলা থেকে দ্বিতীয় তলা
পর্যন্ত যেতে পারত। তখন সবাই এটাকে বলত 'ফ্লাইং চেয়ার'। যন্ত্রটি দালানের
বাইরে স্থাপন করা হয়। এটা বেলকনি দিয়ে রাজার কাছে আনানেওয়া করা হতো।
যন্ত্রটির নির্মাণ কৌশল খুব বেশি জটিল ছিল না। একটি চিমনির ভেতর দড়ির
সঙ্গে কিছু ওজন বাঁধা থাকত। দড়ির অন্য প্রান্তে বাঁধা থাকত চেয়ারটি।
প্রহরীদের চিমনির ভেতর ডিউটি দেওয়া হতো। তারা রাজার নির্দেশ অনুযায়ী দড়িতে
ভার কমিয়ে-বাড়িয়ে চেয়ার ওঠানামা করাত। ১৮৫০ সালে বাষ্প ও হাইড্রোলিক লিফট
নির্মাণ করা হয়। ১৮৫২ সালে এলিশা গ্রেভস ওটিস প্রথম নিরাপদ লিফট তেরি করতে
সক্ষম হন। ১৮৫৭ সালে নিউ ইয়র্কে প্রথম যাত্রীসাধারণের জন্য লিফট স্থাপন
করেন ওটিস। ১৮৬১ সালে ওটিসের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে চার্লস এবং নর্টন ওটিস
ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং তৈরি করেন। ১৮৭৩ সালে আমেরিকায় দুই হাজারেরও বেশি
ওটিস লিফট স্থাপন করা হয়। বছর পাঁচেক আগে ওটিস হাইড্রোলিক লিফট চালু করা
হয়, ১৮৮৯ সালে ওটিস বৈদ্যুতিক লিফট মেশিন স্থাপনে সক্ষম হয়। ওটিসের
অগ্রযাত্রা থেমে থাকেনি। বর্তমানে পৃথিবীর দু শরও বেশি দেশে ওটিসের লিফট
ব্যবহৃত হচ্ছে।
No comments