একজন ড্যানিয়েল ক্রেগ by ইমরান হোসেন
চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি ওলিভার, সিনড্রেলাসহ অনেক দুর্দান্ত নাটকে অভিনয় করে ফেলেছেন। নাটক নিয়ে ঘুরেছেন স্পেন, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটা দেশ। তবে পুরো বিশ্ব তাকে চিনেছে আরও পরে। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি জেমস বন্ড।
এটি অবশ্য তার পর্দার নাম। আসল নাম ড্যানিয়েল ক্রেগ । সম্প্রতি জে কিউ ম্যাগাজিনের চোখে ২০১২ সালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষ নির্বাচিত হয়েছেন পর্দার জেমস বন্ড রূপী ড্যানিয়েল ক্রেগ। কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে ড্যানিয়েলের ‘স্কাইফল’ ছবিটি। এই ছবিটি ভেঙ্গে দিয়েছে ইউকে বক্স অফিসের সব রেকর্ড। ১৯৬৮ সালের ২ মার্চ ইংল্যান্ডের চেস্টারে জন্মগ্রহণ করেন এই আকর্ষণীয় অভিনেতা। ইংল্যান্ডের লিভারপুলে বেড়ে উঠেছেন এই অভিনেতা। বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করলেও জেমস বন্ড সিরিজে এসে সাফল্য পান তিনি। ১৬ বছর বয়সে লন্ডনে এসে তিনি ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ থিয়েটারে’ যোগ দেন। তার মায়ের বেশ কিছু বন্ধু-বান্ধব ছিলেন মঞ্চের অভিনেতা। প্রায়ই মা এবং বোনকে নিয়ে চলে যেতেন নাটক দেখতে। তিনি ভর্তি হন ‘গিল্ডহিল স্কুল অব মিউজিক এ্যান্ড ড্রামা’তে। তার যখন ৯ বছর বয়স, তখন রাগবি ছিল তার পছন্দের খেলা। ফুটবল ও খেলতেন তিনি।ড্যানিয়েলের প্রথম সিনেমা ছিল ‘দ্য পাওয়ার অব ওয়ান’। তবে তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ১৯৯৬ বিবিসি মিনি সিরিজ ‘আওয়ার ফ্রেন্ডস ইন দ্য নর্থ’। এই সিরিজের মধ্য দিয়ে তিনি দর্শক সমালোচকদের নজরে পড়েন। ২০০২ সালে ড্যানিয়েল ‘রোড টু পারডিশন’ সিনেমাতে অসাধারণ অভিনয় করেন। এরপর বন্ড চরিত্রের জন্য সুযোগ পান ড্যানিয়েল ক্রেগ। শুরুতে অবশ্য বন্ড হওয়ার জন্য বয়স অনেক বেশি বলে একহাত নিয়েছিলেন সমালোচকরা তাকে। কিন্তু অচিরেই তিনি বদলে দেন সবকিছু। ড্যানিয়েলের নিজের ভাষায়, ‘যখন আমি বন্ড চরিত্র করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হলাম তখন আমি এটা করেছিলাম আমার জীবনটা বদলে দেয়ার জন্য। আমি জীবনে কখনও টাকার জন্য সিনেমা করিনি।’
২০০৬ সালে ক্যাসিনো রয়্যাল দিয়ে শুরু হয় বন্ডের যাত্রা। এরপর ২০০৬ সালে রিলিজ হয় ‘কোয়ান্টাম অব সোলাস’। সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছে বন্ড সিরিজের ২৩তম সিনেমা ‘স্কাইফল’। এছাড়াও ডিসেম্বর ২০১১ সালে মুক্তি পায় ‘দ্য গার্ল উইথ দ্য ড্রাগন ট্যাটো’। বাস্তবজীবনে বিয়ে করেছেন স্কটিশ অভিনেত্রী ফিওনা লুডনকে। তাদের একমাত্র সন্তান ইলা ক্রেগ জন্ম নেয় ১৯৯২ সালে। লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ভীষণ ভক্ত ড্যানিয়েল। পর্দায় পিস্তল আর মারাত্মক সব মেশিনগান নিয়ে গোলাগুলি করলেও ব্যক্তিগত জীবনে অস্ত্র পছন্দ করেননি তিনি। ড্যানিয়েলের মতে, ‘আমি অস্ত্র ঘৃণা করি। এটা মানুষকে গুলি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আমি গুলি খাওয়া মানুষের ক্ষত দেখেছি, তা ভয়াবহ।’
বন্ডের পর্দা উপস্থিতি আর দারুণ সব চমকের মতো ড্যানিয়েলের জীবনটাও কোন অংশে কম রহস্যময় নয়। সারা পৃথিবীর জেমস বন্ড সিরিজপ্রেমী মানুষের কাছে ড্যানিয়েল ক্রেগ মানেই এক অন্যরকম উন্মাদনা। ড্যানিয়েলের সাম্প্রতিক ছবি ‘স্কাইফল’ দর্শকদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে। নতুন নতুন রূপে নতুন নতুন এ্যাসাইনমেন্টে আবারও রূপালী পর্দায় কাঁপাবে ড্যানিয়েল এমনাটই প্রত্যাশা বন্ড ভক্তদের।
No comments