ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে, সবার পরিণতি একই by অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য ও এস এম জাহিদুল ইসলাম
নিয়োগ-বাণিজ্য, অনিয়ম ও বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আলাউদ্দিনকে অব্যাহতি দিচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে উপাচার্যের অব্যাহতিসংক্রান্ত নথি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নথিটি এরপর রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের দপ্তরে যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন আকবর কালের কণ্ঠকে জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য নথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় নতুন উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকারের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই প্রথম কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের ৯ উপাচার্যও একইভাবে দুর্নীতির অভিযোগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই (শুধু প্রথম উপাচার্য দুই মেয়াদের একটি পূর্ণ করেন) আন্দোলনের মুখে দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই বিপজ্জনক। এখানে আদর্শগত দ্বন্দ্ব প্রকট। এ ছাড়া ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও শিক্ষকদের উচ্চাভিলাষী রাজনীতিও বিশ্ববিদ্যালয় অচলে দায়ী। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির এ অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি কাজ করছে বলে চেয়ারম্যান জানান।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরা মেয়াদকাল পূর্ণ করার আগেই বিদায় নেন কেন- প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান আকন্দ কালের কণ্ঠকে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় জন্মগতভাবেই দূষিত। এরশাদ সরকারের সময় প্রতিষ্ঠিত হলেও বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির অবয়ব বদলে দেওয়া হয়। শুরু থেকেই যাঁরা ওখানে উপাচার্য হয়ে গেছেন তাঁরা কেউই সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেননি। এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাম দলের নোংরা রাজনীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার চেহারা হারিয়ে ফেলছে। সব মিলিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করা কঠিন। কাজের ক্ষেত্রেও উপাচার্যদের যথেষ্ট সতর্ক থাকা দরকার বলে তিনি জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম ইয়াকুব আলী জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য, অযোগ্যতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে আগের উপচার্যদের মতো বর্তমান উপচার্যকেও চলে যেতে হবে।
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আলউদ্দিনের মেয়াদ চার বছরের কিছু বাকি আছে। আগামী মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। উপাচার্য হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০০৯ সালের ৯ মার্চ। আগস্টে একটি নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রথম তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। তিন মাস ধরে অচল থাকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৮১ সালের ৩০ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. এ এন এম মমতাজউদ্দিন চৌধুরীকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করলেও দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি অপসারিত হন। ১৯৮৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যৌন কেলেঙ্কারি ও শিক্ষকদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগে মাত্র আড়াই বছরের মাথায় ১৯৯১ সালের ১৭ জুন তাঁকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয়। ১৯৯১ সালের ২০ জুন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল হামিদ তৃতীয় উপাচার্য হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। অবৈধ নিয়োগ দিতে অস্বীকার করায় স্থানীয় চাকরি প্রার্থীরা তাঁকে তাঁর বাসায় তিন দিন অবরোধ করে টেলিফোন লাইন, বিদ্যুৎ, খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন। প্রাণভয়ে তিনি রাতে পালিয়ে যান। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইনাম-উল হককে চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনকারীরা তাঁকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে নিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়। এরপর তিনি আর ক্যাম্পাসে ফেরত আসেননি।
এরপর ১৯৯৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ কায়েস উদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি ও আঞ্চলিকীকরণের অভিযোগে আন্দোলন শুরু হলে ২০০০ সালের ১৮ অক্টোবর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার এক বছর আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ লুৎফর রহমান ২০০০ সালের ২৮ অক্টোবর যোগ দেন। কিন্তু জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাত্র এক বছরের মাথায় ২০০১ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর সপ্তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। দুই বছরের মাথায় আওয়ামীপন্থী প্রগতিশীল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশ এবং তাদের সমর্থিত ছাত্র সংগঠনগুলোর লাগাতার আন্দোলনের কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই বছর আগেই ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল তিনি অপসারিত হন। ২০০৪ সালের ৩ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এম রফিকুল ইসলামকে অষ্টম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। স্থানীয় চাকরি প্রার্থীদের চাপের মুখে তিনি ২০০৬ সালের ২০ জুন পদত্যাগ করেন। ১০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, উপাচার্য পদে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ এস এম আনোয়ারুল করীম বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময় ক্লাস বর্জন করে শিক্ষকরা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফয়েজ মোহাম্মদ সিরাজুল হককে নবম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দুর্নীতিবাজদের নিয়ে প্রশাসন পরিচালনা করলে চরমভাবে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি আন্দোলনের মুখে ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন। এর পরই ২০০৯ সালের ৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম আলাউদ্দিনকে দশম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আন্দোলনের কারণে এখন তাঁকেও অব্যাহিত দিচ্ছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন আকবর কালের কণ্ঠকে জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য নথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় নতুন উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকারের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই প্রথম কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের ৯ উপাচার্যও একইভাবে দুর্নীতির অভিযোগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই (শুধু প্রথম উপাচার্য দুই মেয়াদের একটি পূর্ণ করেন) আন্দোলনের মুখে দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি খুবই বিপজ্জনক। এখানে আদর্শগত দ্বন্দ্ব প্রকট। এ ছাড়া ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও শিক্ষকদের উচ্চাভিলাষী রাজনীতিও বিশ্ববিদ্যালয় অচলে দায়ী। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির এ অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি কাজ করছে বলে চেয়ারম্যান জানান।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরা মেয়াদকাল পূর্ণ করার আগেই বিদায় নেন কেন- প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান আকন্দ কালের কণ্ঠকে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় জন্মগতভাবেই দূষিত। এরশাদ সরকারের সময় প্রতিষ্ঠিত হলেও বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির অবয়ব বদলে দেওয়া হয়। শুরু থেকেই যাঁরা ওখানে উপাচার্য হয়ে গেছেন তাঁরা কেউই সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারেননি। এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাম দলের নোংরা রাজনীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার চেহারা হারিয়ে ফেলছে। সব মিলিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করা কঠিন। কাজের ক্ষেত্রেও উপাচার্যদের যথেষ্ট সতর্ক থাকা দরকার বলে তিনি জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম ইয়াকুব আলী জানান, নিয়োগ-বাণিজ্য, অযোগ্যতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে আগের উপচার্যদের মতো বর্তমান উপচার্যকেও চলে যেতে হবে।
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আলউদ্দিনের মেয়াদ চার বছরের কিছু বাকি আছে। আগামী মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। উপাচার্য হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০০৯ সালের ৯ মার্চ। আগস্টে একটি নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রথম তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। তিন মাস ধরে অচল থাকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৮১ সালের ৩০ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. এ এন এম মমতাজউদ্দিন চৌধুরীকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রথম মেয়াদ পূর্ণ করলেও দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি অপসারিত হন। ১৯৮৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। যৌন কেলেঙ্কারি ও শিক্ষকদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগে মাত্র আড়াই বছরের মাথায় ১৯৯১ সালের ১৭ জুন তাঁকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয়। ১৯৯১ সালের ২০ জুন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল হামিদ তৃতীয় উপাচার্য হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। অবৈধ নিয়োগ দিতে অস্বীকার করায় স্থানীয় চাকরি প্রার্থীরা তাঁকে তাঁর বাসায় তিন দিন অবরোধ করে টেলিফোন লাইন, বিদ্যুৎ, খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন। প্রাণভয়ে তিনি রাতে পালিয়ে যান। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইনাম-উল হককে চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনকারীরা তাঁকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে নিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়। এরপর তিনি আর ক্যাম্পাসে ফেরত আসেননি।
এরপর ১৯৯৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ কায়েস উদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম, দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি ও আঞ্চলিকীকরণের অভিযোগে আন্দোলন শুরু হলে ২০০০ সালের ১৮ অক্টোবর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার এক বছর আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ লুৎফর রহমান ২০০০ সালের ২৮ অক্টোবর যোগ দেন। কিন্তু জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাত্র এক বছরের মাথায় ২০০১ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর সপ্তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। দুই বছরের মাথায় আওয়ামীপন্থী প্রগতিশীল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একাংশ এবং তাদের সমর্থিত ছাত্র সংগঠনগুলোর লাগাতার আন্দোলনের কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই বছর আগেই ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল তিনি অপসারিত হন। ২০০৪ সালের ৩ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এম রফিকুল ইসলামকে অষ্টম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। স্থানীয় চাকরি প্রার্থীদের চাপের মুখে তিনি ২০০৬ সালের ২০ জুন পদত্যাগ করেন। ১০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, উপাচার্য পদে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ এস এম আনোয়ারুল করীম বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময় ক্লাস বর্জন করে শিক্ষকরা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফয়েজ মোহাম্মদ সিরাজুল হককে নবম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দুর্নীতিবাজদের নিয়ে প্রশাসন পরিচালনা করলে চরমভাবে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি আন্দোলনের মুখে ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন। এর পরই ২০০৯ সালের ৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম আলাউদ্দিনকে দশম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আন্দোলনের কারণে এখন তাঁকেও অব্যাহিত দিচ্ছে সরকার।
No comments