চরাচর-হাতিরদিয়া দিবস by সুমন বর্মণ
আজ ২৯ ডিসেম্বর, হাতিরদিয়া দিবস। ১৯৬৮ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মওলানা ভাসানীর ডাকা হরতাল পালনকালে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া হাটে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন কৃষক আন্দোলনের চার নেতা-কর্মী।
আহত হয়েছিলেন ঊনসত্তরের গণ-অভুত্থানের নায়ক শহীদ আসাদুজ্জামান আসাদসহ আরো অনেকে। হাতিরদিয়ার ঘটনা দেশব্যাপী আন্দোলনের যে বহ্নিশিখা ছড়িয়ে দিয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় অর্জিত হয় আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই থেকে প্রতিবছর ২৯ ডিসেম্বর পালন করা হচ্ছে 'হাতিরদিয়া দিবস' হিসেবে। শহীদদের স্মরণে ঘটনাস্থলে নির্মিত শহীদ মিনারে প্রতিবছর এ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে ঊনসত্তরের আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পল্টনের জনসভায় মওলানা ভাসানী ৭ ডিসেম্বর ঢাকা শহরে হরতাল এবং ৮ ডিসেম্বর সারা দেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন। সে ঘোষণা স্বতঃস্ফূর্ত হরতালে পরিণত হয় এবং ওই তারিখ থেকে সারা দেশের হাট-বাজারে হরতাল ও ঘেরাও আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর হরতাল পালন শেষে মওলানা ভাসানী ফের ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশে হাট-বাজারে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন। তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ মহকুমার বর্তমানে মনোহরদী উপজেলার বৃহত্তম হাট হাতিরদিয়াতে হরতাল সফল করার দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল তৎকালীন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সমন্বয় কমিটির সক্রিয় কর্মী ও ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আসাদের ওপর। তাঁরই নেতৃত্বে এলাকার অন্য নেতারা ওই দিন হাতিরদিয়া বাজারে হরতাল পালনকালে পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফাজ্জল হোসেন, বদরুজ্জামান সেন্টু ও মাইকম্যান শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়ে রাইফেল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। এদিকে জনতার উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। উত্তেজিত জনতা গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্ত করার জন্য পুলিশকে ধাওয়া করলে ভীতসন্ত্রস্ত পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে বাজারেরই একটি টিনের ঘরে অবস্থান নেয়। জনতার রোষ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং উত্তেজিত জনতা পুলিশের আশ্রয়স্থল ঘিরে ফেলে। অবস্থার আরো অবনতি হতে পারে ভেবে পুলিশ ঘরের জানালা দিয়ে জনতার ওপর বেপরোয়া গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই কৃষক সমিতির নেতা সিদ্দিক মাস্টার, হাছান আলী, মিয়া চান ও চেরাগ আলী শহীদ হন এবং আহত হন অনেকে। এদিকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান সাইকেলে চড়ে ঢাকায় এসে পত্রিকার অফিসগুলোতে হাতিরদিয়ার ঘটনার সংবাদ দেন।
পরদিন পত্রিকাগুলোয় ওই ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও ঘেরাও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সুমন বর্মণ
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর পল্টনের জনসভায় মওলানা ভাসানী ৭ ডিসেম্বর ঢাকা শহরে হরতাল এবং ৮ ডিসেম্বর সারা দেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন। সে ঘোষণা স্বতঃস্ফূর্ত হরতালে পরিণত হয় এবং ওই তারিখ থেকে সারা দেশের হাট-বাজারে হরতাল ও ঘেরাও আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর হরতাল পালন শেষে মওলানা ভাসানী ফের ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশে হাট-বাজারে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন। তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ মহকুমার বর্তমানে মনোহরদী উপজেলার বৃহত্তম হাট হাতিরদিয়াতে হরতাল সফল করার দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল তৎকালীন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সমন্বয় কমিটির সক্রিয় কর্মী ও ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আসাদের ওপর। তাঁরই নেতৃত্বে এলাকার অন্য নেতারা ওই দিন হাতিরদিয়া বাজারে হরতাল পালনকালে পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফাজ্জল হোসেন, বদরুজ্জামান সেন্টু ও মাইকম্যান শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়ে রাইফেল দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। এদিকে জনতার উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। উত্তেজিত জনতা গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্ত করার জন্য পুলিশকে ধাওয়া করলে ভীতসন্ত্রস্ত পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে বাজারেরই একটি টিনের ঘরে অবস্থান নেয়। জনতার রোষ তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং উত্তেজিত জনতা পুলিশের আশ্রয়স্থল ঘিরে ফেলে। অবস্থার আরো অবনতি হতে পারে ভেবে পুলিশ ঘরের জানালা দিয়ে জনতার ওপর বেপরোয়া গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই কৃষক সমিতির নেতা সিদ্দিক মাস্টার, হাছান আলী, মিয়া চান ও চেরাগ আলী শহীদ হন এবং আহত হন অনেকে। এদিকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান সাইকেলে চড়ে ঢাকায় এসে পত্রিকার অফিসগুলোতে হাতিরদিয়ার ঘটনার সংবাদ দেন।
পরদিন পত্রিকাগুলোয় ওই ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও ঘেরাও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সুমন বর্মণ
No comments