বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও নিবিড় হওয়া জরুরী
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারততীর্থ’ নামক বিখ্যাত কবিতার কয়েকটি লাইন : ‘কেহ নাহি জানে কার আহ্বানে কত মানুষের ধারা দুর্বার স্রোতে এল কোথা হতে, সমুদ্রে হলো হারা হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন শক হুন দল পাঠান মোগল একদেহে হল লীন’ কবিগুরুর এই উচ্চারণে ভারতের সুদীর্ঘ বর্ণিল ইতিহাসের এক সঠিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ভারতে পথে চলতে কিংবা ট্রেনে-বাসে বা প্লেনে ভ্রমণে গেলে পাশের সহযাত্রী কোন্ ধর্মবিশ্বাসের তা বোঝা যায় না, কেউ জিআসা করে না। অর্থাৎ সব বিশ্বাসের মানুষ ‘এক দেহে হল লীন’। বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক-পরিব্রাজক ড. মুহম্মদ আনিসুল হক, যিনি ইতোমধ্যে পৃথিবীর ৪৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং ভারতের মানসসরোবর থেকে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ পার্বত্য থেকে সমতলের জনপদ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন, তাঁর ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে রচিত ‘আসমুদ্র হিমাচল’ গ্রন্থের এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘ভারতবর্ষের বিস্তীর্র্ণ প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে কলকাতার উড়ে ঠাকুরের হোটেলে মাছ, ভাত, ডাল যখন খেতে বসি তখনি মনে হয় বাড়ি এসে গেছি প্রায়।’ ড. আনিসুল হকের এ কথায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে ভারত ভ্রমণ করা অসংখ্য বাঙালীর হৃদয় প্রোথিত অনুভূতি। এবার বাংলাদেশ-ভারত ভ্রাতৃপ্রতিম দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কথায় আসি: বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতকে পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের (ঝবাবহ ঝরংঃবৎং নামে পরিচিত) সঙ্গে সরাসরি ব্যবসায় ও বাণিজ্যিক যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ ভূখ-ের ভেতর দিয়ে নির্দিষ্ট স্থল ও জলপথ ব্যবহারে নীতিগতভাবে সম্মতি দেয়ার বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোও তারা ব্যবহার করতে পারবে। পক্ষান্তরে ভারতও বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল, ভুটানের একই রকম সুবিধা চালু করার ব্যাপারে সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। এসব সম্ভাব্য ব্যবস্থায় শুধু ভারতই সুবিধাভোগী হবে না, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের পথ খুলে যাবে। সুতরাং বাংলাদেশও এতে লাভবান হবে। কাজেই উপরিউক্ত ব্যবস্থার যাঁরা বিরোধিতা করেছেন তাঁরা তা বাংলাদেশের স্বার্থ ও কল্যাণের জন্য করছেন বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে না। দৃশ্যমান একমাত্র কারণ ভারত বিরোধিতা, যা বাস্তবতা বিরোধী এবং দেশের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিসহ (তৎকালীন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী) বহু উচ্চপর্যায়ের ভারতীয় নেতা বাংলাদেশ সফরে এসে এই দেশের জন্য ভারত সরকার ও ভারতীয় জনগণের শুভ কামনা ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় যে তিনটি চুক্তি ও দু’টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন এবং দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ ঘোষণায় যে পঞ্চাশ দফার উল্লেখ রয়েছে সেগুলোর সবই দু’দেশের মধ্যে অধিকতর আস্থার ভাব সৃষ্টি করেছে। যে চরমপন্থী গোষ্ঠী প্রতিসুযোগেই ভারত বিরোধিতায় উচ্চকিত হন তাঁদের জ্ঞানোদয়ের জন্য নিচে কিছু বিষয় উল্লেখ করছি, যা অবিস্মরণীয়। তবে উপরোল্লিখিত বিষয়ে যাবার আগে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ভারত এখন পরাশক্তির পর্যায়ে উন্নীত হবার দ্বারাপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। সম্প্রতি ওগঋ এই উদীয়মান পরাশক্তির কাছে দুই শ’ টন স্বর্ণ বিক্রি করেছে। ভারতের কাছে আরও স্বর্ণ বিক্রির প্রচেষ্টা চলছে। যাই হোক, এখন উপরে বর্ণিত প্রসঙ্গে আসা যাক। যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের আমরা গর্বিত নাগরিক, সেই দেশ প্রতিষ্ঠায় ভারতের রয়েছে ঐতিহাসিক অবদান :
এক কোটি বাঙালীকে আশ্রয়দান
ভারত যে শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য করেছে তাই নয়, পাকিস্তানী হানাদারদের গণহত্যা ও বর্বর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে যে এক কোটি বাঙালী ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের অনেক যতœ ও সম্মানের সঙ্গে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন একটি দেশ আরেকটি দেশের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে এমন কোন নজির নেই। এই নজিরবিহীন উদারতারই পরিচয় দিয়েছিল ভারত। আর একটি কথা উল্লেখ না করা অনুচিত হবে। হিন্দুপ্রধান ভারতে এই আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই ছিলেন মুসলিম। কিন্তু ভারত সরকার ও ভারতের মহান জনগণ ধর্ম বিশ্বাসের বিষয়টিকে তুচ্ছ করে এই অকল্পনীয়সংখক বিপন্ন আশ্রয়প্রার্থীকে খাদ্য ও আশ্রয়দানের নিশ্চয়তা প্রদানের আপ্রাণ চেষ্টা করে। এক কোটি মানুষের আশ্রয়, খাদ্য এবং অন্যান্য অনিবার্য চাহিদা পূরণ প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার; তা সত্ত্বেও মহান রাষ্ট্রনায়ক শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর সরকার এই সুকঠিন সমস্যার মোকাবেলা করেন ধৈর্য, আন্তরিকতা এবং বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে।
শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীদের ওপর হানাদার বাহিনীর গণহত্যা এবং ধ্বংসালীলা চালানোর সেই চরম দুঃসময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী প্রায় অর্ধেক পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলার গণহত্যা ও অমানবিক নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব সমাজকে অবহিত করা এবং বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্ব সমাজের সক্রিয় সমর্থন আদায়ের জন্য। তাঁর অকাট্য যুক্তি এবং মানবিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বহু বিশ্বখ্যাত রাষ্ট্রনায়ক ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বাংলাদেশে গণহত্যার নিন্দায় উচ্চকিত হন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে উচ্চকণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন করেন। এদের মধ্যে ছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সি কোসিগিন, জার্মান চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ড এবং ব্রিটিশ এমপি পিটার শোর। ফ্রান্সের মন্ত্রী, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব আঁদ্রে ম্যালরো এবং তৎকালীন মার্কিন রাজনীতির এক প্রখ্যাত কর্ণধার এডওয়ার্ড কেনেডি দূর দেশ থেকে চলে আসেন এবং ভারতের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির ঘুরে বাঙালী শরণার্থীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। গণহত্যা এবং বাঙালী নির্যাতন আঁদ্রে ম্যালরোকে এতই বিক্ষুব্ধ করে যে তিনি ট্যাঙ্ক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি যুদ্ধ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। বিশ্বব্যাপী এই মানবিক আলোড়ন এবং বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায় সম্ভব হয়েছিল শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। ইন্দিরা গান্ধীর অসাধারণ অবদান ছাড়াও বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চিরকাল স্মরণ করবে প্রয়াত শ্রী জয় প্রকাশ নারায়ণ, জেনারেল সরকার, ত্রিগুনা সেন, ডিপি ধর, দীপেন বন্দোপাধ্যায়, মৈত্রেয়ী দেবী, পিএন হাকচার এবং বিপুলসংখ্যক ভারতীয় বন্ধুকে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁদের অবদান ছিল অসামান্য। গীতিকার গোবিন্দ হালদারকে ভোলাও সম্ভব নয়। তাঁর গান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘আমরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ এবং ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না’ হাজার বছর ধরে বাঙালীর হৃদয়কে আলোড়িত করবে।
বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সাহায্য
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর কাছে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জেনারেল নিয়াজীর অসহায় আত্মসমর্পণের সঙ্গেই বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সাহায্য- সহযোগিতা শেষ হয়ে যায়নি। একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত কলকারখানা, রাস্তাঘাট ও সেতু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পুনর্গঠন একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ভারত ঞড়ঃধষষু ধহফ ঝয়ঁধৎবষু এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অতিদ্রুত বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে থাকে। ভারত সরকারের উদ্যোগে ব্যাপক পুনর্গঠন কাজের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ মেরামত। শুনেছি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্রিজটি মেরামতের মতো কঠিন কাজের জন্য তাদেরকে ভারত থেকে কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ ঝঢ়ধহ নিয়ে আসতে হয়।
সকৃতজ্ঞ স্মরণ
১৬ ডিসেম্বর আমরা যখন বিজয় দিবস উদযাপন করি এবং আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি তখন আমাদের কর্তব্য বাঙালী মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি যে হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য বাংলার মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়ে রক্ত দিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা। নিজ বাসভূমি ও প্রিয়জন থেকে অনেক দূরে তাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন, যাতে আমরা বেঁচে থাকি। তাঁরা নিজেদের সুখ বিসর্জন দিয়েছিলেন, যাতে আমরা সুখে থাকি। সেই মহৎপ্রাণ প্রয়াত ভারতীয় সৈনিকদের আমরা ভালবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ ও অভিবাদন জ্ঞাপন করব প্রতি বিজয় দিবসে।
্এখানে উল্লেখ করতে হয়, বাঙালী মুক্তিযোদ্ধার অনেকেই ভারতে ট্রেনিং গ্রহণ করেছেন।
ভারতের কাছে শেখার আছে
এশিয়া, আফ্রিকা, বাংলাদেশসহ কিছু উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক দেশ রয়েছে; তারা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ (খধৎমবংঃ উবসড়পৎধপু রহ ঃযব ড়িৎষফ) ভারতের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মানসিকতা বিষয়ে কিছু শিখতে পারে। মহান রাষ্ট্রনায়ক ইন্দিরা গান্ধীর পরে আসে গণতন্ত্র ও দেশপ্রেমের জীবন্ত কিংবদন্তি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কথা। নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পর যখন সবাই নিশ্চিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধীই প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেই সময় সরকার প্রধানের পদ স্বেচ্ছায় গ্রহণ না করে তিনি যে অনবদ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তা ভারতসহ পৃথিবীকে বিস্মিত করে দেয়। এই সিদ্ধান্তে সোনিয়া গান্ধী যেমন নির্লোভ নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি এই শিক্ষাকেই তুলে ধরেছেন যে ‘রাজনীতি শুধু ক্ষমতার জন্য নয়।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী হননি, কিন্তু ইতিহাসে এক বিরল সম্মানের আসন অধিকার করে নিয়েছেন। এ থেকে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কি কিছু শেখার নেই?
যে অনুল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বার্থান্বেষী এখনও ভারতবিদ্বেষী, তারা কি লক্ষ্য করেছেনÑপ্রতিদিন কি বিপুলসংখ্যক বাঙালী ভারতে যান ব্যবসা, চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঙালী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। অনেক ভারতীয় নাগরিকও প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে আসেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, অদূর অতীতের অর্থমন্ত্রী শ্রী প্রণব মুখার্জিসহ (বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রপতি) ভারত সরকারের বহু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রীদের অনেকেই ভারত সফরে গেছেন। এ ছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালো জিয়াসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলসমূহের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ভারত সফর করছেন। ফলে দু’দেশের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অমীমাংসিত কিছু সমস্যা
দু’দেশের মধ্যে অমীমাংসিত কিছু সমস্যাও রয়েছে। যেমন তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, ছিটমহল বিনিময়, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা, নির্যাতন ও কিছু অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন। দু’দেশের মধ্যে যে ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বিদ্যমান তার প্রেক্ষিতে সদিচ্ছা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর ন্যায্যতাভিত্তিক সমাধান সম্ভব। এবং তা হয়ে যাবে, এ প্রত্যাশা অবশ্যই করা যায়।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা: পলিস নেহি হ্যায়, কানুন তো হ্যায়
নিজে ভারত সফর করে এবং সফরকারী অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় এই ধারণাই দৃঢ় হয়েছে যে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ভারতীয় সাধারণ মানুষের সহজাতপ্রবৃত্তি। বিস্তারিত বিবরণে না যেয়ে একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে। লেখক মুম্বাইতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। একদিন প্রায় মধ্যরাতের দিকে হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফিরছিলেন ট্যাক্সিতে। পথে একটা ঙহবধিু রোড ছিল। ড্রাইবার ঙহবধিু এড়িয়ে অনেক ঘুরে যাচ্ছিলেন। পুলিশ নেই দেখে সোজা রাস্তায় যেতে বলাতে পাঞ্জাবী ড্রাইভার তাকে অবাক করে বলেন: পলিস নেহি হ্যায়, কানুন তো হ্যায়! হায়, কবে আমাদের দেশের আইনের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধ আসবে!
পরাশক্তি হবার পথে ভারত
শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতের অগ্রগতিও দৃষ্টান্তমূলক। আগেই বলা হয়েছে সামরিক-বেসামরিক সবক্ষেত্র মিলিয়ে ভারত আজ পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হতে চলেছে । ভারতের কাছে বাঙালী জাতির যে অপরিশোধ্য ঋণ এবং সম্পর্কের যে ঘনিষ্ঠতা তার প্রেক্ষিতে ভারতের এই উন্নয়নে আমরা আনন্দিত। আমরা আরও আনন্দিত শ্রী প্রণব মুখার্জি ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ায়। তিনি ভারতের প্রথম বাঙালী রাষ্ট্রপতি। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বাংলাদেশেরই নড়াইলে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এটাই এক সৎ চিত্র। বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক আরও নিবিড় হোক। দুই দেশ উন্নয়ন অংশীদার (চধৎঃহবৎং রহ চৎড়মৎবংং) হয়ে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হোক, কোটি কোটি মানুষের এই কামনা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
এক কোটি বাঙালীকে আশ্রয়দান
ভারত যে শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য করেছে তাই নয়, পাকিস্তানী হানাদারদের গণহত্যা ও বর্বর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে যে এক কোটি বাঙালী ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের অনেক যতœ ও সম্মানের সঙ্গে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন একটি দেশ আরেকটি দেশের এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে এমন কোন নজির নেই। এই নজিরবিহীন উদারতারই পরিচয় দিয়েছিল ভারত। আর একটি কথা উল্লেখ না করা অনুচিত হবে। হিন্দুপ্রধান ভারতে এই আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই ছিলেন মুসলিম। কিন্তু ভারত সরকার ও ভারতের মহান জনগণ ধর্ম বিশ্বাসের বিষয়টিকে তুচ্ছ করে এই অকল্পনীয়সংখক বিপন্ন আশ্রয়প্রার্থীকে খাদ্য ও আশ্রয়দানের নিশ্চয়তা প্রদানের আপ্রাণ চেষ্টা করে। এক কোটি মানুষের আশ্রয়, খাদ্য এবং অন্যান্য অনিবার্য চাহিদা পূরণ প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার; তা সত্ত্বেও মহান রাষ্ট্রনায়ক শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর সরকার এই সুকঠিন সমস্যার মোকাবেলা করেন ধৈর্য, আন্তরিকতা এবং বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে।
শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীদের ওপর হানাদার বাহিনীর গণহত্যা এবং ধ্বংসালীলা চালানোর সেই চরম দুঃসময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী প্রায় অর্ধেক পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলার গণহত্যা ও অমানবিক নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব সমাজকে অবহিত করা এবং বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্ব সমাজের সক্রিয় সমর্থন আদায়ের জন্য। তাঁর অকাট্য যুক্তি এবং মানবিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বহু বিশ্বখ্যাত রাষ্ট্রনায়ক ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বাংলাদেশে গণহত্যার নিন্দায় উচ্চকিত হন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে উচ্চকণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন করেন। এদের মধ্যে ছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সি কোসিগিন, জার্মান চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ড এবং ব্রিটিশ এমপি পিটার শোর। ফ্রান্সের মন্ত্রী, প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী ব্যক্তিত্ব আঁদ্রে ম্যালরো এবং তৎকালীন মার্কিন রাজনীতির এক প্রখ্যাত কর্ণধার এডওয়ার্ড কেনেডি দূর দেশ থেকে চলে আসেন এবং ভারতের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির ঘুরে বাঙালী শরণার্থীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। গণহত্যা এবং বাঙালী নির্যাতন আঁদ্রে ম্যালরোকে এতই বিক্ষুব্ধ করে যে তিনি ট্যাঙ্ক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি যুদ্ধ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। বিশ্বব্যাপী এই মানবিক আলোড়ন এবং বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায় সম্ভব হয়েছিল শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। ইন্দিরা গান্ধীর অসাধারণ অবদান ছাড়াও বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চিরকাল স্মরণ করবে প্রয়াত শ্রী জয় প্রকাশ নারায়ণ, জেনারেল সরকার, ত্রিগুনা সেন, ডিপি ধর, দীপেন বন্দোপাধ্যায়, মৈত্রেয়ী দেবী, পিএন হাকচার এবং বিপুলসংখ্যক ভারতীয় বন্ধুকে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁদের অবদান ছিল অসামান্য। গীতিকার গোবিন্দ হালদারকে ভোলাও সম্ভব নয়। তাঁর গান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘আমরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ এবং ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না’ হাজার বছর ধরে বাঙালীর হৃদয়কে আলোড়িত করবে।
বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সাহায্য
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর কাছে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জেনারেল নিয়াজীর অসহায় আত্মসমর্পণের সঙ্গেই বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সাহায্য- সহযোগিতা শেষ হয়ে যায়নি। একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত কলকারখানা, রাস্তাঘাট ও সেতু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পুনর্গঠন একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ভারত ঞড়ঃধষষু ধহফ ঝয়ঁধৎবষু এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অতিদ্রুত বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে থাকে। ভারত সরকারের উদ্যোগে ব্যাপক পুনর্গঠন কাজের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ মেরামত। শুনেছি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্রিজটি মেরামতের মতো কঠিন কাজের জন্য তাদেরকে ভারত থেকে কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ ঝঢ়ধহ নিয়ে আসতে হয়।
সকৃতজ্ঞ স্মরণ
১৬ ডিসেম্বর আমরা যখন বিজয় দিবস উদযাপন করি এবং আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি তখন আমাদের কর্তব্য বাঙালী মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি যে হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য বাংলার মুক্তিসংগ্রামে অংশ নিয়ে রক্ত দিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করা। নিজ বাসভূমি ও প্রিয়জন থেকে অনেক দূরে তাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন, যাতে আমরা বেঁচে থাকি। তাঁরা নিজেদের সুখ বিসর্জন দিয়েছিলেন, যাতে আমরা সুখে থাকি। সেই মহৎপ্রাণ প্রয়াত ভারতীয় সৈনিকদের আমরা ভালবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ ও অভিবাদন জ্ঞাপন করব প্রতি বিজয় দিবসে।
্এখানে উল্লেখ করতে হয়, বাঙালী মুক্তিযোদ্ধার অনেকেই ভারতে ট্রেনিং গ্রহণ করেছেন।
ভারতের কাছে শেখার আছে
এশিয়া, আফ্রিকা, বাংলাদেশসহ কিছু উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক দেশ রয়েছে; তারা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ (খধৎমবংঃ উবসড়পৎধপু রহ ঃযব ড়িৎষফ) ভারতের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও মানসিকতা বিষয়ে কিছু শিখতে পারে। মহান রাষ্ট্রনায়ক ইন্দিরা গান্ধীর পরে আসে গণতন্ত্র ও দেশপ্রেমের জীবন্ত কিংবদন্তি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কথা। নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পর যখন সবাই নিশ্চিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধীই প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেই সময় সরকার প্রধানের পদ স্বেচ্ছায় গ্রহণ না করে তিনি যে অনবদ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তা ভারতসহ পৃথিবীকে বিস্মিত করে দেয়। এই সিদ্ধান্তে সোনিয়া গান্ধী যেমন নির্লোভ নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি এই শিক্ষাকেই তুলে ধরেছেন যে ‘রাজনীতি শুধু ক্ষমতার জন্য নয়।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী হননি, কিন্তু ইতিহাসে এক বিরল সম্মানের আসন অধিকার করে নিয়েছেন। এ থেকে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কি কিছু শেখার নেই?
যে অনুল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বার্থান্বেষী এখনও ভারতবিদ্বেষী, তারা কি লক্ষ্য করেছেনÑপ্রতিদিন কি বিপুলসংখ্যক বাঙালী ভারতে যান ব্যবসা, চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঙালী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। অনেক ভারতীয় নাগরিকও প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে আসেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, অদূর অতীতের অর্থমন্ত্রী শ্রী প্রণব মুখার্জিসহ (বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রপতি) ভারত সরকারের বহু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মন্ত্রীদের অনেকেই ভারত সফরে গেছেন। এ ছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালো জিয়াসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলসমূহের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ভারত সফর করছেন। ফলে দু’দেশের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অমীমাংসিত কিছু সমস্যা
দু’দেশের মধ্যে অমীমাংসিত কিছু সমস্যাও রয়েছে। যেমন তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, ছিটমহল বিনিময়, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা, নির্যাতন ও কিছু অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন। দু’দেশের মধ্যে যে ভাতৃপ্রতিম সম্পর্ক বিদ্যমান তার প্রেক্ষিতে সদিচ্ছা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলোর ন্যায্যতাভিত্তিক সমাধান সম্ভব। এবং তা হয়ে যাবে, এ প্রত্যাশা অবশ্যই করা যায়।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা: পলিস নেহি হ্যায়, কানুন তো হ্যায়
নিজে ভারত সফর করে এবং সফরকারী অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় এই ধারণাই দৃঢ় হয়েছে যে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ভারতীয় সাধারণ মানুষের সহজাতপ্রবৃত্তি। বিস্তারিত বিবরণে না যেয়ে একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে। লেখক মুম্বাইতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। একদিন প্রায় মধ্যরাতের দিকে হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফিরছিলেন ট্যাক্সিতে। পথে একটা ঙহবধিু রোড ছিল। ড্রাইবার ঙহবধিু এড়িয়ে অনেক ঘুরে যাচ্ছিলেন। পুলিশ নেই দেখে সোজা রাস্তায় যেতে বলাতে পাঞ্জাবী ড্রাইভার তাকে অবাক করে বলেন: পলিস নেহি হ্যায়, কানুন তো হ্যায়! হায়, কবে আমাদের দেশের আইনের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধ আসবে!
পরাশক্তি হবার পথে ভারত
শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারতের অগ্রগতিও দৃষ্টান্তমূলক। আগেই বলা হয়েছে সামরিক-বেসামরিক সবক্ষেত্র মিলিয়ে ভারত আজ পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হতে চলেছে । ভারতের কাছে বাঙালী জাতির যে অপরিশোধ্য ঋণ এবং সম্পর্কের যে ঘনিষ্ঠতা তার প্রেক্ষিতে ভারতের এই উন্নয়নে আমরা আনন্দিত। আমরা আরও আনন্দিত শ্রী প্রণব মুখার্জি ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ায়। তিনি ভারতের প্রথম বাঙালী রাষ্ট্রপতি। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বাংলাদেশেরই নড়াইলে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এটাই এক সৎ চিত্র। বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক আরও নিবিড় হোক। দুই দেশ উন্নয়ন অংশীদার (চধৎঃহবৎং রহ চৎড়মৎবংং) হয়ে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হোক, কোটি কোটি মানুষের এই কামনা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
No comments