চরাচর-বিশ্ব এইডস দিবস by তামান্না ইসলাম অলি
এইডস কথাটি শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। মন বলে নিশ্চিত মৃত্যু। চোখের সামনে ভেসে ওঠে লাল রিবনের প্রতীকটি। যেটি দ্বারা আক্রান্তদের প্রতি সহযোগিতা ও এটি প্রতিরোধের পদক্ষেপ নেওয়াকে বোঝায়। বর্তমানে এইডস বিশ্বব্যাপী এক মারাত্মক ভয়াবহ ব্যাধির রূপ নিচ্ছে। আজ ১ ডিসেম্বর।
বিশ্ব এইডস দিবস। ১৯৮১ সালে আমেরিকায় প্রথম এইডস রোগটি আবিষ্কার করা হয়। ১৯৮৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়। ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটি গঠিত হয়। আর এ বছরই ডিসেম্বরের ১ তারিখকে ঘোষণা করা হয় বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে।
এইডস হলো HIV ভাইরাসের কারণে সংক্রমিত এক ধরনের রোগ। তবে এইচআইভি আর এইডস এক নয়। এইচআইভি হচ্ছে এক ধরনের ভাইরাস, যা শরীরের ভেতর প্রবেশ করে শরীরের রোগপ্রতিরোধকারী টি সেলকে নষ্ট করে দেয়। যার কারণে শরীর আস্তে আস্তে সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। পরবর্তী সময়ে যেকোনো অসুখ খুব সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। আর এর চূড়ান্ত পরিণতি হলো এইডস। AIDS-এর পূর্ণরূপ- Acquired Immune Deficiency Syndrom. এখানে Acquired মানে অর্জিত, Immune হলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, Deficiency অর্থ হ্রাস এবং Syndrom হচ্ছে রোগের লক্ষণ। আর HIV-এর পূর্ণরূপ হলো Human মানে মানুষ, Immune-deficiency হচ্ছে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস ও Virus হলো জীবাণু।
এইচআইভি বিভিন্নভাবে আমাদের দেহে প্রবেশ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ, অপারেশন বা অন্য কোনো কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সিরিঞ্জ বা সুচ ব্যবহার। অবাধ ও অনিরাপদ যৌন সহবাস বা আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সহবাসে এইচআইভি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এমনকি মায়ের এইচআইভি পজিটিভ হলে গর্ভের সন্তানেরও হয়ে থাকে। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের তিন থেকে ছয় মাস পরে ধরা পড়ে। আক্রান্ত হওয়ার পর লক্ষণ প্রকাশ পেলেও বহনকারী থেকে ছড়াতে আট থেকে ১৫ বছর সময় লাগে। লক্ষণগুলোর মধ্যে এদের দ্রুত ওজন কমে, অনেক দিন জ্বর থাকে, ডায়রিয়া, গ্লান্ড ফুলে যায়, শুকনো কাশি, কৃমি, মুখে ও চামড়ায় ঘায়ের সৃষ্টি হয়। এসব রোগীর যেকোনো সময় রক্তক্ষরণ, রাতে প্রচুর ঘাম এবং নিউমোনিয়াও হতে পারে। মাথাব্যথা করে ও স্মৃতিশক্তি লোপ পায়।
আমেরিকার বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাস আবিষ্কার করলেও ধারণা করা হয়, আফ্রিকা থেকেই এটির সূত্রপাত। ইউএন এইডসের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৬০ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ২৫ মিলিয়ন। আর প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ২.৭ মিলিয়ন। বাংলাদেশে এখনো এটির রূপ অতটা ভয়াবহ নয়। তবে আশঙ্কা আছে। এনএএসপির তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সাল পর্যন্ত পরীক্ষিত এইডস রোগীর সংখ্যা ২০৮৮। আর মারা গেছে ২৬১ জন। আক্রান্তদের অর্ধেকই বিদেশফেরত। বাকিরা মাদকসেবী ও যৌনকর্মী। বর্তমানে পৃথিবীতে পাঁচ কোটি লোক এ রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২০ সাল পর্যন্ত এদের সংখ্যা হবে ১০ কোটির ওপরে। অনেকে এটাকে ছোঁয়াচে মনে করলেও এটি তা নয়। হাঁচি-কাশি ও মশা-মাছির মাধ্যমে, একই সঙ্গে খাবার খেলে, ঘুমালে, গোসল করলে, কাজ করলে, কোলাকুলি করলে এ রোগে আক্রান্ত হয় না। বিজ্ঞানীরা গবেষণাও চালাচ্ছেন এটি নিরাময়ের। হয়তো একদিন প্রতিষেধকও আবিষ্কার হবে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত আমাদের সচেতন থাকতে হবে এর আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে। আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক দেশই জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এটি প্রতিরোধে। তাই আমাদেরও জনমত গড়ে তুলতে হবে। খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। স্কুল পর্যায় থেকেই অন্য ১০টি রোগের মতো এইডসকে পরিচিত করে তুলতে হবে। আর গণমাধ্যমগুলোকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই জয় করা যাবে এইডস।
তামান্না ইসলাম অলি
এইডস হলো HIV ভাইরাসের কারণে সংক্রমিত এক ধরনের রোগ। তবে এইচআইভি আর এইডস এক নয়। এইচআইভি হচ্ছে এক ধরনের ভাইরাস, যা শরীরের ভেতর প্রবেশ করে শরীরের রোগপ্রতিরোধকারী টি সেলকে নষ্ট করে দেয়। যার কারণে শরীর আস্তে আস্তে সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। পরবর্তী সময়ে যেকোনো অসুখ খুব সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। আর এর চূড়ান্ত পরিণতি হলো এইডস। AIDS-এর পূর্ণরূপ- Acquired Immune Deficiency Syndrom. এখানে Acquired মানে অর্জিত, Immune হলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, Deficiency অর্থ হ্রাস এবং Syndrom হচ্ছে রোগের লক্ষণ। আর HIV-এর পূর্ণরূপ হলো Human মানে মানুষ, Immune-deficiency হচ্ছে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস ও Virus হলো জীবাণু।
এইচআইভি বিভিন্নভাবে আমাদের দেহে প্রবেশ করতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ, অপারেশন বা অন্য কোনো কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সিরিঞ্জ বা সুচ ব্যবহার। অবাধ ও অনিরাপদ যৌন সহবাস বা আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সহবাসে এইচআইভি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এমনকি মায়ের এইচআইভি পজিটিভ হলে গর্ভের সন্তানেরও হয়ে থাকে। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের তিন থেকে ছয় মাস পরে ধরা পড়ে। আক্রান্ত হওয়ার পর লক্ষণ প্রকাশ পেলেও বহনকারী থেকে ছড়াতে আট থেকে ১৫ বছর সময় লাগে। লক্ষণগুলোর মধ্যে এদের দ্রুত ওজন কমে, অনেক দিন জ্বর থাকে, ডায়রিয়া, গ্লান্ড ফুলে যায়, শুকনো কাশি, কৃমি, মুখে ও চামড়ায় ঘায়ের সৃষ্টি হয়। এসব রোগীর যেকোনো সময় রক্তক্ষরণ, রাতে প্রচুর ঘাম এবং নিউমোনিয়াও হতে পারে। মাথাব্যথা করে ও স্মৃতিশক্তি লোপ পায়।
আমেরিকার বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাস আবিষ্কার করলেও ধারণা করা হয়, আফ্রিকা থেকেই এটির সূত্রপাত। ইউএন এইডসের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৬০ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ২৫ মিলিয়ন। আর প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ২.৭ মিলিয়ন। বাংলাদেশে এখনো এটির রূপ অতটা ভয়াবহ নয়। তবে আশঙ্কা আছে। এনএএসপির তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সাল পর্যন্ত পরীক্ষিত এইডস রোগীর সংখ্যা ২০৮৮। আর মারা গেছে ২৬১ জন। আক্রান্তদের অর্ধেকই বিদেশফেরত। বাকিরা মাদকসেবী ও যৌনকর্মী। বর্তমানে পৃথিবীতে পাঁচ কোটি লোক এ রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২০ সাল পর্যন্ত এদের সংখ্যা হবে ১০ কোটির ওপরে। অনেকে এটাকে ছোঁয়াচে মনে করলেও এটি তা নয়। হাঁচি-কাশি ও মশা-মাছির মাধ্যমে, একই সঙ্গে খাবার খেলে, ঘুমালে, গোসল করলে, কাজ করলে, কোলাকুলি করলে এ রোগে আক্রান্ত হয় না। বিজ্ঞানীরা গবেষণাও চালাচ্ছেন এটি নিরাময়ের। হয়তো একদিন প্রতিষেধকও আবিষ্কার হবে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত আমাদের সচেতন থাকতে হবে এর আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে। আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক দেশই জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এটি প্রতিরোধে। তাই আমাদেরও জনমত গড়ে তুলতে হবে। খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। স্কুল পর্যায় থেকেই অন্য ১০টি রোগের মতো এইডসকে পরিচিত করে তুলতে হবে। আর গণমাধ্যমগুলোকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই জয় করা যাবে এইডস।
তামান্না ইসলাম অলি
No comments