পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ নবী-অলিদের পাঠান সাধারণ মানুষকে সত্যের পথ দেখানোর জন্য
২৯. ওয়া ইয়া-ক্বাওমি লা- আছআলুকুম আ'লাইহি মা-লা-; ইন আজরিইয়া ইল্লা- আ'লাল্লা-হি ওয়ামা- আনা বিত্বা-রিদিল্লাযীনা আ-মানূ- ইন্নাহুম্ মুলা-ক্বূ রাব্বিহিম ওয়া লা- কিন্নী আরা-কুম্ ক্বাওমান তাজহালূন। ৩০. ওয়া ইয়া-ক্বাওমি মাইঁয়্যানছ্বুরুনী মিনাল্লা-হি ইন ত্বারাদ্তুহুম; আফালা- তাযাক্কারূন।
৩১. ওয়া লা- আক্বূলু লাকুম ই'নদী খাযা-য়িনুল্লা-হি আ'লামুল গাইবা ওয়া লা- আক্বূলু ইন্নী মালাকুওঁ ওয়া লা- আক্বূলু লিল্লাযীনা তায্দারী আ'ইউনুকুম লাইঁয়্যু'তিইয়াহুমুল্লা-হু খাইরা-; আল্লা-হু আ'লামু বিমা- ফী আনফুছিহিম; ইন্নী ইযাল্ লামিনায্ য্বা-লিমীন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ২৯-৩১]
অনুবাদ
২৯. আর (তিনি বললেন) হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা, আমি এর বিনিময়ে অর্থাৎ তোমাদের সত্যের পথে ডাকার বিনিময়ে কোনো সম্পদ চাই না। আমার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহর হাতে, তবে যারা ইমান এনেছে, তাদের তো আমি তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয়ই তারা তাদের প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবে; কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।
৩০. আর হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা, আমি যদি তাদের (মুমিনদের) তাড়িয়ে দিই, তবে আমাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহির হাত থেকে কে রক্ষা করবে? বিষয়টা তোমরা বুঝতে চেষ্টা করছো না।
৩১. আমি তোমাদের বলছি না যে আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার আছে। (তা ছাড়া) আমি অদৃশ্যলোকের যাবতীয় বিষয়ও জানি না। আর আমি তোমাদের এ কথাও বলছি না যে আমি কোনো ফেরেশতা। তোমাদের দৃষ্টিতে যারা গুরুত্বহীন বা হেয়, তাদের ব্যাপারে আমি এ কথা বলতে পারি না যে আল্লাহ তাদের কোনো কল্যাণ দান করবেন না। (অর্থাৎ তাদের মধ্য থেকেও সেই মানুষ বের হয়ে আসতে পারে) তাদের মধ্যে যা কিছু আছে, তা আল্লাহই ভালো জানেন। আমি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বললে নিশ্চয়ই আমি জালিমদের মধ্যে গণ্য হব।
ব্যাখ্যা
২৯ ও ৩০ নম্বর আয়াতে নুহ (আ.)-এর প্রতি যারা ইমান এনেছিল, তাদের প্রতি আনুগত্য ও পক্ষপাতিত্ব করার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করা হয়েছে। অবাধ্য গোত্রপতিদের দৃষ্টিতে তা গুরুত্বহীন হতে পারে; কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা ইমান গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে।
৩১ নম্বর আয়াতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিভ্রান্ত লোকদের সাধারণত ধারণা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তি আল্লাহর নবী বা সানি্নধ্যপ্রাপ্ত বান্দা হবেন, তাঁর হাতে অনেক রকম ক্ষমতা থাকবে। অদৃশ্য জগতের সব বিষয় তাঁর জানা থাকবে, তিনি সাধারণ মানুষের মতো না হয়ে ফেরেশতাদের মতো হবেন। অলৌকিকভাবে তিনি অনেক কিছু করতে পারবেন। এ আয়াতের মাধ্যমে তাদের সেসব ভ্রান্ত ধারণা রদ করা হয়েছে। হজরত নুহ (আ.) পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিশেষ ক্ষমতাবান হয়ে মানুষের মধ্যে ধন-সম্পদ বিতরণ করা; কিন্তু অদৃশ্য জগতের নানা বিষয় মানুষকে অবহিত করা নবী বা অলিদের কাজ নয়। নবী বা অলিদের কাজ হলো মানুষকে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথ দেখানো ও তাদের আকিদা-বিশ্বাস, কাজকর্ম ও চরিত্র সংশোধন করা। নবীদের কাছ থেকে জগৎবাসীর পাওনা হলো তাঁর শিক্ষা। নবী-অলিদের কাছে যারা পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাতায়াত করে, যারা মনে করে তাঁরা এসব অর্জন করে দেওয়ার মাধ্যম, তারা বিভ্রান্ত। তাদের জন্য সঠিক দিকটি সামনে আনাই এই আয়াতের তাৎপর্য। আল্লাহর নবী নুহ (আ.) এসব বিষয় তাঁর এখতিয়ারবহির্ভূত বলে ঘোষণা করেছেন। এই আয়াতটির শেষাংশে গোত্রপতিরা যে নুহ (আ.)-এর অনুসারী মুমিনদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করত, এরও যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য যে আল্লাহর কাছে কল্যাণ রয়েছে, সে কথা এখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
২৯. আর (তিনি বললেন) হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা, আমি এর বিনিময়ে অর্থাৎ তোমাদের সত্যের পথে ডাকার বিনিময়ে কোনো সম্পদ চাই না। আমার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহর হাতে, তবে যারা ইমান এনেছে, তাদের তো আমি তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয়ই তারা তাদের প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবে; কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।
৩০. আর হে আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা, আমি যদি তাদের (মুমিনদের) তাড়িয়ে দিই, তবে আমাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহির হাত থেকে কে রক্ষা করবে? বিষয়টা তোমরা বুঝতে চেষ্টা করছো না।
৩১. আমি তোমাদের বলছি না যে আমার কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার আছে। (তা ছাড়া) আমি অদৃশ্যলোকের যাবতীয় বিষয়ও জানি না। আর আমি তোমাদের এ কথাও বলছি না যে আমি কোনো ফেরেশতা। তোমাদের দৃষ্টিতে যারা গুরুত্বহীন বা হেয়, তাদের ব্যাপারে আমি এ কথা বলতে পারি না যে আল্লাহ তাদের কোনো কল্যাণ দান করবেন না। (অর্থাৎ তাদের মধ্য থেকেও সেই মানুষ বের হয়ে আসতে পারে) তাদের মধ্যে যা কিছু আছে, তা আল্লাহই ভালো জানেন। আমি তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বললে নিশ্চয়ই আমি জালিমদের মধ্যে গণ্য হব।
ব্যাখ্যা
২৯ ও ৩০ নম্বর আয়াতে নুহ (আ.)-এর প্রতি যারা ইমান এনেছিল, তাদের প্রতি আনুগত্য ও পক্ষপাতিত্ব করার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করা হয়েছে। অবাধ্য গোত্রপতিদের দৃষ্টিতে তা গুরুত্বহীন হতে পারে; কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা ইমান গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে।
৩১ নম্বর আয়াতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিভ্রান্ত লোকদের সাধারণত ধারণা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তি আল্লাহর নবী বা সানি্নধ্যপ্রাপ্ত বান্দা হবেন, তাঁর হাতে অনেক রকম ক্ষমতা থাকবে। অদৃশ্য জগতের সব বিষয় তাঁর জানা থাকবে, তিনি সাধারণ মানুষের মতো না হয়ে ফেরেশতাদের মতো হবেন। অলৌকিকভাবে তিনি অনেক কিছু করতে পারবেন। এ আয়াতের মাধ্যমে তাদের সেসব ভ্রান্ত ধারণা রদ করা হয়েছে। হজরত নুহ (আ.) পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিশেষ ক্ষমতাবান হয়ে মানুষের মধ্যে ধন-সম্পদ বিতরণ করা; কিন্তু অদৃশ্য জগতের নানা বিষয় মানুষকে অবহিত করা নবী বা অলিদের কাজ নয়। নবী বা অলিদের কাজ হলো মানুষকে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথ দেখানো ও তাদের আকিদা-বিশ্বাস, কাজকর্ম ও চরিত্র সংশোধন করা। নবীদের কাছ থেকে জগৎবাসীর পাওনা হলো তাঁর শিক্ষা। নবী-অলিদের কাছে যারা পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাতায়াত করে, যারা মনে করে তাঁরা এসব অর্জন করে দেওয়ার মাধ্যম, তারা বিভ্রান্ত। তাদের জন্য সঠিক দিকটি সামনে আনাই এই আয়াতের তাৎপর্য। আল্লাহর নবী নুহ (আ.) এসব বিষয় তাঁর এখতিয়ারবহির্ভূত বলে ঘোষণা করেছেন। এই আয়াতটির শেষাংশে গোত্রপতিরা যে নুহ (আ.)-এর অনুসারী মুমিনদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করত, এরও যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য যে আল্লাহর কাছে কল্যাণ রয়েছে, সে কথা এখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments