পরিত্যক্ত জাহাজের সন্ধানে খনন, মানুষের সর্বনাশ by সাইফুর রহমান
২২ বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ তুলতে গিয়ে জনবসতিপূর্ণ এলাকার মাটি তুলে দিঘি খনন করায় বিপাকে পড়েছেন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আলিমাবাদ ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, এ কারণে অনেক বাড়িঘর ভাঙনের মুখে পড়েছে ও বেশ কয়েক একর আবাদি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
পাতাবুনিয়া গ্রামের আবদুল কাদের (৮০) বলেন, ‘প্রায় দুই যুগ বাড়িঘর বানাইয়া থাকতে আছি। হঠাৎ আইস্যা জাহাজ উডানের নাম কইর্যা আমাগো বাড়িঘরের মধ্যে মাটি কাইট্যা দিঘি বানাইছে। বাড়িঘরে ফাটল দেখা দেছে। আমরা এখন হুমকির মধ্যে আছি। যেকোনো সময় আমার বাড়ি ভাইঙ্গা পড়বে দিঘির মধ্যে।’ ইসমাইল খান বলেন, ‘এই যে দ্যাহেন, বালি উডানের কারণে আমার জমিতে ধান হয় না। হ্যাগো মানা (নিষেধ) করেও লাভ হয় নাই। উল্টো হুমকি-ধমকি দেয়।’
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাতাবুনিয়া গ্রামের কালাবদর নদী থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যন্ত্র দিয়ে খনন চলছে। প্রায় পাঁচ একর জমি নষ্ট করে কাটা হয়েছে গভীর দিঘি। অনবরত বালু উত্তোলনের কারণে আশপাশের বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। বালু ফেলায় এলাকার অনেক ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমভি বায়েজিদ নামের একটি মালবাহী জাহাজ (কার্গো) কালাবদর নদীতে ডুবে যায়। ওই জাহাজটি উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। খননকাজে নিয়োজিত খুলনার মংলা এলাকার ডুবুরি আরজু সরদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের জামশেদ আলম এই জাহাজ উত্তোলন করছেন। তাঁরা বেশির ভাগ সময় এখানে থাকেন না। আমরাই দেখাশোনা করি।’
গ্রামের আলতাফ হোসেন জানান, তিন বছর আগে জামশেদ আলমসহ কয়েকজন এই গ্রামে এসে এক একর জমি কেনেন। এরপর মাটি খননকাজ শুরু করেন। এখন তাঁরা আশপাশের কমপক্ষে ছয় একর জমি খনন করে ফেলেছেন। তাঁদের বাড়িঘরের ঠিকানাও বলেন না। তাঁদের কাজ দেখে সন্দেহ হলেও ভয়ে মানুষ কথা বলে না।
গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বালু ফেলার কারণে গ্রামের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ একর জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), র্যাব-৮, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
জামশেদ আলম বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ থেকে ওই জাহাজটি নিলামে কিনেছি। উত্তোলনের জন্য খনন করায় এলাকাবাসীর কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। কাজ শেষ হলে ওই জমি এলাকাবাসীর থাকবে। আমরা ভরাট করে দেব বা ক্ষতিপূরণ দেব।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অঞ্চলের নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক আশরাফ হোসেন জানান, জাহাজডুবির কারণে নদীর কোনো চ্যানেল বন্ধ হলে দ্রুত তা সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। চ্যানেলের সমস্যা না হলে ধ্বংসাবশেষ হিসেবে নিলাম দেওয়া হয়। ২২ বছর আগে ডুবে যাওয়া কোনো কার্গো নিলাম হয়েছে, এমন তথ্য তাঁদের জানা নেই।
মেহেন্দিগঞ্জের ইউএনও শহীদুল ইসলাম জানান, কারা কীভাবে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় উত্তোলনকাজ করছে, তা তাঁদের জানা নেই। কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। জনবসতিপূর্ণ এলাকার ক্ষতি ও ভাঙনকবলিত হওয়ার আশঙ্কা করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক সুকুমার বিশ্বাস জানান, ২২ বছর আগে যখন কার্গো ডুবেছিল, তখন উত্তোলন করা উচিত ছিল। এত বছর পর উত্তোলন করতে গেলে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। আশপাশ আবারও নদীভাঙনের মুখে পড়তে পারে। এটা নিঃসন্দেহে পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাতাবুনিয়া গ্রামের কালাবদর নদী থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যন্ত্র দিয়ে খনন চলছে। প্রায় পাঁচ একর জমি নষ্ট করে কাটা হয়েছে গভীর দিঘি। অনবরত বালু উত্তোলনের কারণে আশপাশের বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। বালু ফেলায় এলাকার অনেক ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমভি বায়েজিদ নামের একটি মালবাহী জাহাজ (কার্গো) কালাবদর নদীতে ডুবে যায়। ওই জাহাজটি উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। খননকাজে নিয়োজিত খুলনার মংলা এলাকার ডুবুরি আরজু সরদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের জামশেদ আলম এই জাহাজ উত্তোলন করছেন। তাঁরা বেশির ভাগ সময় এখানে থাকেন না। আমরাই দেখাশোনা করি।’
গ্রামের আলতাফ হোসেন জানান, তিন বছর আগে জামশেদ আলমসহ কয়েকজন এই গ্রামে এসে এক একর জমি কেনেন। এরপর মাটি খননকাজ শুরু করেন। এখন তাঁরা আশপাশের কমপক্ষে ছয় একর জমি খনন করে ফেলেছেন। তাঁদের বাড়িঘরের ঠিকানাও বলেন না। তাঁদের কাজ দেখে সন্দেহ হলেও ভয়ে মানুষ কথা বলে না।
গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বালু ফেলার কারণে গ্রামের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ একর জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), র্যাব-৮, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
জামশেদ আলম বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ থেকে ওই জাহাজটি নিলামে কিনেছি। উত্তোলনের জন্য খনন করায় এলাকাবাসীর কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। কাজ শেষ হলে ওই জমি এলাকাবাসীর থাকবে। আমরা ভরাট করে দেব বা ক্ষতিপূরণ দেব।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অঞ্চলের নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক আশরাফ হোসেন জানান, জাহাজডুবির কারণে নদীর কোনো চ্যানেল বন্ধ হলে দ্রুত তা সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। চ্যানেলের সমস্যা না হলে ধ্বংসাবশেষ হিসেবে নিলাম দেওয়া হয়। ২২ বছর আগে ডুবে যাওয়া কোনো কার্গো নিলাম হয়েছে, এমন তথ্য তাঁদের জানা নেই।
মেহেন্দিগঞ্জের ইউএনও শহীদুল ইসলাম জানান, কারা কীভাবে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় উত্তোলনকাজ করছে, তা তাঁদের জানা নেই। কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। জনবসতিপূর্ণ এলাকার ক্ষতি ও ভাঙনকবলিত হওয়ার আশঙ্কা করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক সুকুমার বিশ্বাস জানান, ২২ বছর আগে যখন কার্গো ডুবেছিল, তখন উত্তোলন করা উচিত ছিল। এত বছর পর উত্তোলন করতে গেলে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। আশপাশ আবারও নদীভাঙনের মুখে পড়তে পারে। এটা নিঃসন্দেহে পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
No comments