ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারণ নিয়ে দোটানায় সরকার-কাজ শুরু করেছে বার্মা কমিশন
ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি বিধানের লক্ষ্যে সরকার বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করেছে ঠিকই। কিন্তু সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হওয়া উচিত কি না_তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধায় সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্দে ও অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম প্রকাশ্যে কেবল এটুকুই বলেছেন, কমিশন যা ভালো বুঝবে, তা-ই সুপারিশ করবে। কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় সরকারের একাধিক শীর্ষ নেতাই বলছেন, ধর্ষণরোধে ফাঁসি সমাধান নয়। মন্ত্রিসভার এক সদস্য এ-ও জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এক সময় লালকৃষ্ণ আদভানিও ধর্ষণের অপরাধে ফাঁসি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব তখন খারিজ হয়ে গিয়েছিল।
দিল্লিতে বাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের পরে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বিতর্ক প্রথম উসকে দিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি দাবি করেন, 'দোষীদের ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য আইন প্রণয়ন করতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক।' পরে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে দিল্লিতে বিক্ষোভকারীদের একটা বড় অংশের মুখে এই দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। যে দাবির মুখে ধর্ষণের অপরাধে কঠোর শাস্তি বিধানের রাস্তা খুঁজতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস বার্মার নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করেছে সরকার। কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে শাস্তি আরো কঠোর করার কথা ভাবা হচ্ছে। বর্তমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন। তাই সেটা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করা হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই কাজ শুরু করেছে বার্মা কমিশন। জনগণের মতও চেয়েছে তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে ছয় হাজার ১০০টি ই-মেইল বার্তা এসেছে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের উপযোগিতা নিয়েও বিতর্ক চলছে। একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মহিপাল সিংহের আশঙ্কা, 'মৃত্যুদণ্ডের বিধান দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা বাড়তে পারে।' একই শঙ্কা জওয়াহেরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রতীক্ষা বঙ্রিও। তাঁর কথা, 'মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ধর্ষণ ঠেকানো যায় না। যে ঘটনা দিল্লির রাস্তায় হয়েছে, সেই একই ধরনের হিংসার শিকার বহু নারীকে নিজের স্বামীর কাছ থেকেও হতে হয়। কিন্তু তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হয় না।' আইনজীবী ও নারীদের সুরক্ষাসংক্রান্ত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেত্রী বৃন্দা গ্রোভারের বক্তব্য, ফাঁসির বিধান দিলে বিচারপ্রক্রিয়া আরো দীর্ঘ হবে।
পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা সুষমা স্বরাজ ফাঁসির দাবি তুলেছেন বলে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যেই যে ফাঁসি নিয়ে ঐকমত্য আছে, তা নয়। ঘরোয়া আলোচনায় অরুণ জেটলির মতো বিজেপি নেতারা এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিজেপি নেতা রাম জেঠমলানী বলেন, 'মানুষের আক্রোশ বুঝতে পারছি। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড নিয়ে যে বিতর্ক চলছে তার পিছনে রয়েছে অজ্ঞতা ও পপুলিজম।' কারণ, সংবিধান অনুযায়ী অপরাধের সময় যে আইন দেশে বলবৎ, সেই আইন মেনেই দোষীর সাজা হয়। এখন আইন সংশোধন করলে দিল্লি ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তরা তার আওতায় পড়বে না।
মহিপাল, প্রতীক্ষা ও বৃন্দা_সবাই একটি বিষয়ে একমত, আসলে দরকার বিচারব্যবস্থার সংস্কার। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগই দায়ের করতে চায় না। অনেক সময় বিচার ছাড়াই মামলা নিষ্পত্তি করতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়। আবার মামলা হলেও বিচার পেতে অনেক সময় লাগে। গোটা প্রক্রিয়ার বদল প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। সূত্র : আনন্দবাজার।
দিল্লিতে বাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের পরে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বিতর্ক প্রথম উসকে দিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধীদলীয় নেত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি দাবি করেন, 'দোষীদের ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য আইন প্রণয়ন করতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক।' পরে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে দিল্লিতে বিক্ষোভকারীদের একটা বড় অংশের মুখে এই দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। যে দাবির মুখে ধর্ষণের অপরাধে কঠোর শাস্তি বিধানের রাস্তা খুঁজতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস বার্মার নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করেছে সরকার। কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে শাস্তি আরো কঠোর করার কথা ভাবা হচ্ছে। বর্তমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন। তাই সেটা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করা হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই কাজ শুরু করেছে বার্মা কমিশন। জনগণের মতও চেয়েছে তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে ছয় হাজার ১০০টি ই-মেইল বার্তা এসেছে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডের উপযোগিতা নিয়েও বিতর্ক চলছে। একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান মহিপাল সিংহের আশঙ্কা, 'মৃত্যুদণ্ডের বিধান দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য ধর্ষণের পর খুনের ঘটনা বাড়তে পারে।' একই শঙ্কা জওয়াহেরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রতীক্ষা বঙ্রিও। তাঁর কথা, 'মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ধর্ষণ ঠেকানো যায় না। যে ঘটনা দিল্লির রাস্তায় হয়েছে, সেই একই ধরনের হিংসার শিকার বহু নারীকে নিজের স্বামীর কাছ থেকেও হতে হয়। কিন্তু তা ধর্ষণ বলে বিবেচিত হয় না।' আইনজীবী ও নারীদের সুরক্ষাসংক্রান্ত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেত্রী বৃন্দা গ্রোভারের বক্তব্য, ফাঁসির বিধান দিলে বিচারপ্রক্রিয়া আরো দীর্ঘ হবে।
পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা সুষমা স্বরাজ ফাঁসির দাবি তুলেছেন বলে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যেই যে ফাঁসি নিয়ে ঐকমত্য আছে, তা নয়। ঘরোয়া আলোচনায় অরুণ জেটলির মতো বিজেপি নেতারা এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিজেপি নেতা রাম জেঠমলানী বলেন, 'মানুষের আক্রোশ বুঝতে পারছি। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড নিয়ে যে বিতর্ক চলছে তার পিছনে রয়েছে অজ্ঞতা ও পপুলিজম।' কারণ, সংবিধান অনুযায়ী অপরাধের সময় যে আইন দেশে বলবৎ, সেই আইন মেনেই দোষীর সাজা হয়। এখন আইন সংশোধন করলে দিল্লি ধর্ষণ মামলার অভিযুক্তরা তার আওতায় পড়বে না।
মহিপাল, প্রতীক্ষা ও বৃন্দা_সবাই একটি বিষয়ে একমত, আসলে দরকার বিচারব্যবস্থার সংস্কার। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগই দায়ের করতে চায় না। অনেক সময় বিচার ছাড়াই মামলা নিষ্পত্তি করতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়। আবার মামলা হলেও বিচার পেতে অনেক সময় লাগে। গোটা প্রক্রিয়ার বদল প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। সূত্র : আনন্দবাজার।
No comments