মাটির নিচে কোটি টন তামা, ভাগ্য ফিরবে আফগানদের?

কয়েক দশকের যুদ্ধে বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। ভেঙে গেছে অর্থনৈতিক কাঠামো। সেই ভঙ্গুর অর্থনীতি জোরালো হতে পারে, সম্প্রতি এমন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে। লোগার প্রদেশের মেস আইনাক নামক এলাকায় মাটির নিচে পাওয়া গেছে প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ এবং এক কোটি টনের বেশি তামার মজুদ।


মেস আইনাকের অবস্থান কাবুলের ৫০ কিলোমিটার দূরে। ঐতিহাসিক এই প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে রয়েছে চার শতকের বৌদ্ধবিহার। চার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা এই ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক বৌদ্ধমন্দির আর অসংখ্য বুদ্ধমূর্তি। এরই মধ্যে বহু মূর্তির চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। এ এলাকার মাটির নিচেই প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ টন তামার মজুদ রয়েছে। ২০০৭ সালে ক্ষেত্রটির তামা উত্তোলনে ৩০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে চায়না মেটালার্জিক্যাল গ্রুপ করপোরেশনকে (এমসিসি) ৩০ বছরের জন্য ইজারা দিয়েছে আফগানিস্তান।
মেস আইনাক এলাকার ধাতব সম্পদ ব্যবহার করে সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান গড়া হবে, নাকি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ করা হবে—এ বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল আফগান কর্তৃপক্ষ। তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এমসিসিকে খননের কাজ দিতে হয়েছে আফগান কর্তৃপক্ষের।
আফগানিস্তানে ফরাসি প্রতিনিধিদলের (ডিএএফএ) পরিচালক ফিলিপ মারকুইস জানান, চার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে খননকাজে প্রায় ৫০ জন প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ৫৫০ জন শ্রমিক নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। আগামী বছরের শেষ নাগাদ খননকাজ শেষ হবে। এ জন্য এমসিসির খরচ হচ্ছে প্রায় তিন কোটি ডলার।
মেস আইনাকের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বৌদ্ধদের বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যারাক। বিস্ময়করভাবে এসব স্থাপনা ভালো অবস্থায় আছে। মারকুইস আরও জানান, ওই ক্ষেত্রে এক হাজারেরও বেশি মূর্তি রয়েছে। আফগান সরকার এসব মূর্তি সংরক্ষণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কাজেই এগুলো নষ্ট হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে।
তবে আফগান উপসংস্কৃতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘মেস আইনাক থেকে তামা উত্তোলনের ফলে সরকার বছরে ৩২ থেকে ৩৫ কোটি ডলার আয় করবে। আর এই বিপুল উপার্জনকে আমরা আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে পারি। তাই তামা উত্তোলনের বিকল্প কিছু ভাবা আমাদের জন্য কঠিন।’ এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.