শ্রদ্ধাঞ্জলি- মওলানা ভাসানীর জীবনের দিশা by খোরশেদ আহমেদ
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৬তম মৃত্যুদিবসে তাঁর মূল্যায়ন কেবল মহান জাতীয় নেতা হিসেবেই নয়, উপমহাদেশীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবেও হওয়া উচিত। আমরা অনেকেই ভুলে যাই, মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক জীবনের
শুরু ছিল ভারতবর্ষের মেহনতি জনতার শোষণমুক্তি এবং স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ভারত প্রতিষ্ঠার লড়াকু সৈনিক হিসেবেই। যৌবনে ব্রিটিশবিরোধী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগদানের মধ্য দিয়ে যাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু—ইতিহাসের পরের বাঁকে তাঁকে আমরা দেখি বাঙালি জাতির মুক্তির লড়াইয়ের অবিসংবাদী নেতা হিসেবে। ভাসানীর রাজনৈতিক জীবনের মাইলফলকগুলো দেখলে এ সত্য অস্বীকার করা যায় না।
১. ব্রিটিশ-ভারতের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে কৃষকনেতা হিসেবে তাঁর অসাম্প্রদায়িক নেতৃত্ব প্রমাণ করে, তিনি জাতিধর্ম-নির্বিশেষে শুরু থেকেই সব শোষিত মানুষের সংগ্রামী এবং আপসহীন নেতা ছিলেন। মুক্তির পথ, স্বাধীনতার পথ খুঁজতে গিয়ে যৌবনে তিনি সৃষ্টিশীলতা এবং মানবকল্যাণের আবেগ দ্বারা তাড়িত হয়ে ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল কুমার চাকি, সূর্য সেন, প্রীতিলতার মতো সংগ্রামে শামিল হয়েছিলেন।
২. ১৯৫০-এর দশকের শুরু থেকে তিনিই সর্বপ্রথম বুঝতে পেরেছিলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জন ছাড়া জাতি হিসেবে বাঙালিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র বাঙালি জাতির ভাষার ওপর যে আক্রমণ চালিয়েছে, তাকে প্রতিহত করার মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির আন্দোলনকে সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন।
৩. পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার জনগণ পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে ক্রমশ শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলে।
৪. ১৯৫৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট যে বিজয় অর্জন করে, সে ক্ষেত্রে মওলানা ভাসানী ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। যুক্তফ্রন্টের সপক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী জনসভায় তখন থেকেই গ্রাম-বাংলায় ভাসানী পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত করেন।
৫. ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক আইন ও শাসনের বিরুদ্ধে ভাসানী জনগণকে আন্দোলনমুখী শক্তিতে পরিণত করেন। জনগণের সেই সংগ্রাম ১৯৬৮-৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
৬. পাকিস্তান-আমেরিকান অস্ত্র সরবরাহ চুক্তি সিয়াটোর বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানান। দেশের সার্বভৌমত্ব খর্বকারী এ ধরনের চুক্তির পরিণাম সম্পর্কে তিনি দলের নেতা-কর্মী ও জনগণকে সতর্ক করেছিলেন।
৭. দেশের অধিকাংশ লোক, বিশেষত কর্মীদের বহুলাংশের দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনেও যুদ্ধজোটের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেওয়া হয়।
৮. আওয়ামী লীগের কাগমারী কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে দুটি প্রধান বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে মওলানা ভাসানীর মতপার্থক্য দেখা দেয়। একটি, অবহেলিত শোষিত পূর্ববঙ্গের পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন এবং অপরটি, সব সামরিক চুক্তি বাতিল করে জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ। ভাসানী দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করেন কাগমারীতে ১৯৫৭ সালের ৭-৮ ফেব্রুয়ারি। ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় কর্মী সম্মেলন।
১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি পূর্ব বাংলার গরিব চাষি, মজুর, ছাত্র, যুবক ও জনসাধারণের প্রতি এক আবেদনে ভাসানী বলেন, পূর্ব বাংলার বাঁচার দাবি পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের দাবি এবং মহান ২১ দফার বাকি ১৪ দফা দাবি পূরণের জন্য বিচ্ছিন্ন জনশক্তিকে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ করে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কাগমারীর ডাক শীর্ষক আরেকটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয়—
* সাড়ে চার কোটি বাঙালির বাঁচার দাবি স্বায়ত্তশাসন আদায়ের ডাক।
* ঐতিহাসিক মহান ১১ দফা আদায়ের ডাক।
* চাষি, মজুর, কামার, কুমার, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সকল শ্রেণীর মিলনের ডাক।
* পূর্ব বাংলার ৬০ হাজার গ্রামে আওয়ামী লীগকে সংগঠনের ডাক।
* ২১ ‘দফার পূর্ণ রূপায়ণের জন্য আমাদের নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালাইয়া যাইতে হইবে। ইহা সারা পাকিস্তানের সামাজিক ও আর্থিক পরাধীনতার হাত হইতে মুক্তির মহান সনদ, ইহা যেন আমরা কখনো বিস্মৃত না হই।’
কাগমারী সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী, আতাউর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার প্রায় সব মন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সেই কয়েকটি দিন কাগমারীর অজপাড়াগাঁ হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের ‘অস্থায়ী রাজধানী’। সম্মেলনে স্বাগত ভাষণে ভাসানী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বক্তব্য দেন।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়েই ভাসানীর রাজনৈতিক গন্তব্য আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরের বছরই আওয়ামী লীগ চলে যায় মধ্য-ডান পন্থার দিকে আর ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীদের নেতা হয়ে ওঠেন। হয়তো এ কারণেই আজকের বাংলাদেশে ভাসানীর রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও অবদানের মূল্যায়ন এত কম। কিন্তু ভাসানী ছিলেন মুক্তিকামী বাঙালিদের রাজনৈতিক দিশারি ও বঙ্গবন্ধুসহ প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার শিক্ষক। পাকিস্তানবিরোধী মুক্তিসংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বের অবদানকেও উপেক্ষার কুয়াশায় ঢেকে রাখা হয়। কিন্তু ভাসানীকে অস্বীকার করলে যে নিজেদেরই অস্বীকার করা হয়! মওলানা ভাসানী তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে এসে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন, সে মূল্যায়ন আমাদের জাতীয় ইতিহাসে নির্ধারিত হয়ে আছে। বাঙালি জাতির মুক্তি আর মওলানা ভাসানীর আন্দোলনের লক্ষ্য একই সূত্রে গাঁথা।
খোরশেদ আহমেদ: আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, মওলানা ভাসানী পরিষদ।
১. ব্রিটিশ-ভারতের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে কৃষকনেতা হিসেবে তাঁর অসাম্প্রদায়িক নেতৃত্ব প্রমাণ করে, তিনি জাতিধর্ম-নির্বিশেষে শুরু থেকেই সব শোষিত মানুষের সংগ্রামী এবং আপসহীন নেতা ছিলেন। মুক্তির পথ, স্বাধীনতার পথ খুঁজতে গিয়ে যৌবনে তিনি সৃষ্টিশীলতা এবং মানবকল্যাণের আবেগ দ্বারা তাড়িত হয়ে ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল কুমার চাকি, সূর্য সেন, প্রীতিলতার মতো সংগ্রামে শামিল হয়েছিলেন।
২. ১৯৫০-এর দশকের শুরু থেকে তিনিই সর্বপ্রথম বুঝতে পেরেছিলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অর্জন ছাড়া জাতি হিসেবে বাঙালিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র বাঙালি জাতির ভাষার ওপর যে আক্রমণ চালিয়েছে, তাকে প্রতিহত করার মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির আন্দোলনকে সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন।
৩. পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম সোচ্চার হয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার জনগণ পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে ক্রমশ শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলে।
৪. ১৯৫৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট যে বিজয় অর্জন করে, সে ক্ষেত্রে মওলানা ভাসানী ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। যুক্তফ্রন্টের সপক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী জনসভায় তখন থেকেই গ্রাম-বাংলায় ভাসানী পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত করেন।
৫. ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক আইন ও শাসনের বিরুদ্ধে ভাসানী জনগণকে আন্দোলনমুখী শক্তিতে পরিণত করেন। জনগণের সেই সংগ্রাম ১৯৬৮-৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
৬. পাকিস্তান-আমেরিকান অস্ত্র সরবরাহ চুক্তি সিয়াটোর বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী সর্বপ্রথম প্রতিবাদ জানান। দেশের সার্বভৌমত্ব খর্বকারী এ ধরনের চুক্তির পরিণাম সম্পর্কে তিনি দলের নেতা-কর্মী ও জনগণকে সতর্ক করেছিলেন।
৭. দেশের অধিকাংশ লোক, বিশেষত কর্মীদের বহুলাংশের দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনেও যুদ্ধজোটের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেওয়া হয়।
৮. আওয়ামী লীগের কাগমারী কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে দুটি প্রধান বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে মওলানা ভাসানীর মতপার্থক্য দেখা দেয়। একটি, অবহেলিত শোষিত পূর্ববঙ্গের পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন এবং অপরটি, সব সামরিক চুক্তি বাতিল করে জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ। ভাসানী দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করেন কাগমারীতে ১৯৫৭ সালের ৭-৮ ফেব্রুয়ারি। ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় কর্মী সম্মেলন।
১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি পূর্ব বাংলার গরিব চাষি, মজুর, ছাত্র, যুবক ও জনসাধারণের প্রতি এক আবেদনে ভাসানী বলেন, পূর্ব বাংলার বাঁচার দাবি পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের দাবি এবং মহান ২১ দফার বাকি ১৪ দফা দাবি পূরণের জন্য বিচ্ছিন্ন জনশক্তিকে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ করে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কাগমারীর ডাক শীর্ষক আরেকটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয়—
* সাড়ে চার কোটি বাঙালির বাঁচার দাবি স্বায়ত্তশাসন আদায়ের ডাক।
* ঐতিহাসিক মহান ১১ দফা আদায়ের ডাক।
* চাষি, মজুর, কামার, কুমার, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সকল শ্রেণীর মিলনের ডাক।
* পূর্ব বাংলার ৬০ হাজার গ্রামে আওয়ামী লীগকে সংগঠনের ডাক।
* ২১ ‘দফার পূর্ণ রূপায়ণের জন্য আমাদের নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন চালাইয়া যাইতে হইবে। ইহা সারা পাকিস্তানের সামাজিক ও আর্থিক পরাধীনতার হাত হইতে মুক্তির মহান সনদ, ইহা যেন আমরা কখনো বিস্মৃত না হই।’
কাগমারী সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী, আতাউর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার প্রায় সব মন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সেই কয়েকটি দিন কাগমারীর অজপাড়াগাঁ হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের ‘অস্থায়ী রাজধানী’। সম্মেলনে স্বাগত ভাষণে ভাসানী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বক্তব্য দেন।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়েই ভাসানীর রাজনৈতিক গন্তব্য আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরের বছরই আওয়ামী লীগ চলে যায় মধ্য-ডান পন্থার দিকে আর ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট ও বামপন্থীদের নেতা হয়ে ওঠেন। হয়তো এ কারণেই আজকের বাংলাদেশে ভাসানীর রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও অবদানের মূল্যায়ন এত কম। কিন্তু ভাসানী ছিলেন মুক্তিকামী বাঙালিদের রাজনৈতিক দিশারি ও বঙ্গবন্ধুসহ প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার শিক্ষক। পাকিস্তানবিরোধী মুক্তিসংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বের অবদানকেও উপেক্ষার কুয়াশায় ঢেকে রাখা হয়। কিন্তু ভাসানীকে অস্বীকার করলে যে নিজেদেরই অস্বীকার করা হয়! মওলানা ভাসানী তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে এসে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে যে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন, সে মূল্যায়ন আমাদের জাতীয় ইতিহাসে নির্ধারিত হয়ে আছে। বাঙালি জাতির মুক্তি আর মওলানা ভাসানীর আন্দোলনের লক্ষ্য একই সূত্রে গাঁথা।
খোরশেদ আহমেদ: আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, মওলানা ভাসানী পরিষদ।
No comments