জুয়েল মোল্লা বললেন-একটু ঝামেলার কারণে ফোন ধরা হয়নি by এস এম আজাদ

'কে বলে আমি এলাকায় নাই? ফোনটা একটু ঝামেলার কারণে ধরা হয় নাই। বোঝেন তো, একটা ঘটনা ঘটলে ঝামেলা শুরু হয়!'- গা ঢাকা দিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠের কাছে এভাবে প্রতিক্রিয়া জানান কেরানীগঞ্জের যুবলীগ নেতা আমিনুল হক জুয়েল মোল্লা।


চাঞ্চল্যকর পরাগ অপহরণ ঘটনায় জুয়েলের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে কালের কণ্ঠে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর গতকাল মোবাইল ফোনে তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার পাওয়া গেছে। গতকালও জুয়েলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনসেট বন্ধ ছিল। অন্য একটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধির কাছে প্রতিক্রিয়া জানান জুয়েল। পরে তিনি পরাগ অপহরণ ঘটনার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য দেন।
জুয়েল বলেন, 'একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি পরাগ অপহরণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। ঘটনার দিন সকালে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। মেজর আমিন সাহেবের (পরিচিত ব্যক্তি) ফোনে আমার ঘুম ভাঙে। আমি মিটফোর্ড হাসপাতালেও গেছি। পরে দেখি আমাকে নিয়ে কত কথা!' জুয়েল আরো বলেন, 'বিমলের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক। আমরা দুজন একটা জমি কিনি। পরে মেজর আমিনসহ কয়েকজন এটা ফয়সালা করে দিয়েছেন। আমাকে ১৭ লাখ টাকা দেবে বলেছে বিমল। আমি দলিল দিতে রাজি হয়েছি।'
তাহলে আপনি গা ঢাকা দিয়ে আছেন কেন- প্রশ্নের জবাবে জুয়েল বলেন, 'আমি তো এলাকায়ই আছি। কে বলে আমি এলাকায় নাই? ফোনটা একটু ঝামেলার কারণে ধরা হয় নাই। বোঝেন তো একটা ঘটনা ঘটলে, ঝামেলা শুরু হয়!' 'মোবাইল ফোনে ও বাসায় গিয়ে যোগাযোগ করে আপনাকে পাওয়া যায়নি'- প্রতিবেদকের এমন বক্তব্যের জবাবে জুয়েল মোল্লা বলেন, 'আমি হয়তো তখন বাসায় ছিলাম না। বাসার লোকজন তো বোঝে না। টেনশনে আছে। একটা ঘটনা ঘটলে দেখেন কত কী হয়। আমার পেছনে লেগে আছে।'
কারা লেগে আছে, কেন- জানতে চাইলে জুয়েল বলেন, 'এখানকার একজন গণফোরাম করে। ওর ভাই ছাত্রলীগ করত। ওরে ছিনতাইকারীরা হত্যা করল, আমার নামে মামলা করেছে। চুরি মামলাও দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে।' আরো মামলা আছে- বললে জুয়েল বলেন, 'সবই এমন মামলা।'
তিনজনকে গুলি করে শিশু পরাগ অপহরণের মূল আসামি হিসেবে শনাক্ত হওয়া আমির ও সহযোগী কালাচানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে জুয়েল বলেন, 'এরা আমার লোক না। আমিরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নাই। ১৯৯৮ সালে আমির ও কালাচান আমাকে সাত-আটটি স্টেপ (ছুরিকাঘাত) করে।' এক মাস আগে আমিরসহ তিন সন্ত্রাসীকে জেল থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন এবং তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন- এমন প্রশ্ন তুললে জুয়েল বলেন, 'আমি তো এদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করি না।'
জুয়েল পদ থেকে বহিষ্কৃত : শুভাঢ্যা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল হক জুয়েল মোল্লাকে তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের নেতা স্বপন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মাহমুদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক ডা. সেলিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দলীয় সূত্র জানায়, জুয়েলকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও তাঁর 'প্রভাবে' গত দুই বছরেও সেখানে নতুন কমিটি গঠিত হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.