সুনীলের মহাপ্রয়াণ-তুমি হৃদয়ে থেকেই যাবে
যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো/আমি বিষপান করে মরে যাবো!/ বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ/নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ প্রান্তরে দিগন্তে নির্নিমেষ- /এ আমারই সাড়ে তিন হাত ভূমি/যদি নির্বাসন দাও, আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো...
অবশেষে সত্যিই অগণিত পাঠক-গুণগ্রাহীকে কাঁদিয়ে নির্বাসনে চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের প্রাণপুরুষ, দুই বাংলার শিল্প-সাহিত্যে মেলবন্ধের প্রতীক, কালজয়ী সাহিত্য-স্রষ্টা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি নিজ গৃহে দেহত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন জেলা ফরিদপুরের মাদারীপুর মহকুমায়। চার বছর বয়সে বাবার কর্মস্থল কলকাতায় চলে গেলেও জন্মভূমির সঙ্গে তাঁর হৃদয়ের বন্ধন কখনো ঢিলে হয়নি। অধিকন্তু বাংলাদেশ নিয়ে সারা জীবন তাঁর ছিল পরম আদিখ্যেতা। পরিণত বয়সেও তিনি জন্মভূমির প্রশ্নে শিশুর মতো হয়ে উঠতেন।
কোনো সন্দেহ নেই, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হলো। সুনীলের প্রতিটি কবিতা ও উপন্যাস রয়েছে হৃদয়গ্রাহী বাঙালিপনায় পরিপূর্ণ। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর সৃষ্টির উপজীব্য করেছিলেন দুই বাংলার জীবন-সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে। তিনিই ছিলেন অন্যতম প্রধান লেখক, যাঁকে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের বাংলাভাষী বিশাল জনগোষ্ঠী নিজেদের লেখক বলে বিবেচনায় নিয়েছে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশাল সৃষ্টিভাণ্ডারেও তার প্রতিফলন ঘটেছে পদে পদে। তাঁর রচিত দুই শতাধিক গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কবিতা, উপন্যাস, গল্প ও শিশুসাহিত্য। ১৯৫৩ সালে তিনি কবিতাবিষয়ক সফল পত্রিকা 'কৃত্তিবাস' প্রতিষ্ঠা করেন; কৃত্তিবাস সব বাঙালি কবি-লেখকের প্রাণের স্পন্দন হয়ে আছে। তাঁর বহুল পঠিত এবং সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনে অভাবনীয় প্রভাব সৃষ্টিকারী গ্রন্থগুলোর মধ্যে অধিক উল্লেখযোগ্য 'সেই সময়', 'পূর্ব পশ্চিম' ও 'প্রথম আলো'। ১৯৫৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর কাব্যগ্রন্থ 'একা এবং কয়েকজন'। আর ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস 'আত্মপ্রকাশ'। সহজাত প্রতিভার অধিকারী সুনীল পরের ছয় দশক হাত খুলে লিখেছেন। তবে সুনীল নিজেকে জীবদ্দশায় আপাদমস্তক কবি বলে ভাবতেই পছন্দ করতেন। অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভারতের জাতীয় সাহিত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান সাহিত্য একাডেমী এবং পশ্চিমবঙ্গ শিশু-কিশোর একাডেমীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই প্রতিভাবান মানুষটি মন খুলে ভালোবাসতেন মানুষকে। দুই বাংলার মানুষের হৃদয়েও সুনীল ছিলেন অধিকার নিয়ে উপবিষ্ট। তাই তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার আকাশ-বাতাসে। কেমন সহজে আমি ফোটালাম এক লক্ষ ফুল/হঠাৎ দিলাম জ্বেলে কয়েকটি সূর্য চাঁদ তারা/আবার খেয়াল হলে এক ফুয়ে নেভালাম সেই জ্যোৎস্না/নেভালাম সেই রোদ...
সত্যিই লাখো ফুল ফুটিয়ে, সূর্য চাঁদ তারা জ্বালিয়ে কোনো এক মহামায়ার ডাকে নিজেকেই নিভিয়ে দিলেন। আমরা কালের কণ্ঠ পরিবার সুনীলের এই চলে যাওয়ায় গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আমরা সহমর্মিতা উপলব্ধি করছি। সুনীল দেহত্যাগ করেছেন; কিন্তু তাঁর কর্ম, চিন্তা ও সৃষ্টি আমাদের জন্য প্রেরণা হয়ে কাজ করবে; প্রেরণা জোগাবে একটি অসাম্প্রদায়িক, সুষ্ঠু ও সভ্য সমাজ গড়ে তোলার কাজে। তিনি তাঁর 'ফেরা' কবিতায় জানতে চেয়েছেন, 'এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সহজ নাকি?' অগণিত সুনীলভক্তের আজ একই প্রশ্ন।
কোনো সন্দেহ নেই, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হলো। সুনীলের প্রতিটি কবিতা ও উপন্যাস রয়েছে হৃদয়গ্রাহী বাঙালিপনায় পরিপূর্ণ। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর সৃষ্টির উপজীব্য করেছিলেন দুই বাংলার জীবন-সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে। তিনিই ছিলেন অন্যতম প্রধান লেখক, যাঁকে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের বাংলাভাষী বিশাল জনগোষ্ঠী নিজেদের লেখক বলে বিবেচনায় নিয়েছে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশাল সৃষ্টিভাণ্ডারেও তার প্রতিফলন ঘটেছে পদে পদে। তাঁর রচিত দুই শতাধিক গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে কবিতা, উপন্যাস, গল্প ও শিশুসাহিত্য। ১৯৫৩ সালে তিনি কবিতাবিষয়ক সফল পত্রিকা 'কৃত্তিবাস' প্রতিষ্ঠা করেন; কৃত্তিবাস সব বাঙালি কবি-লেখকের প্রাণের স্পন্দন হয়ে আছে। তাঁর বহুল পঠিত এবং সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনে অভাবনীয় প্রভাব সৃষ্টিকারী গ্রন্থগুলোর মধ্যে অধিক উল্লেখযোগ্য 'সেই সময়', 'পূর্ব পশ্চিম' ও 'প্রথম আলো'। ১৯৫৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর কাব্যগ্রন্থ 'একা এবং কয়েকজন'। আর ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস 'আত্মপ্রকাশ'। সহজাত প্রতিভার অধিকারী সুনীল পরের ছয় দশক হাত খুলে লিখেছেন। তবে সুনীল নিজেকে জীবদ্দশায় আপাদমস্তক কবি বলে ভাবতেই পছন্দ করতেন। অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভারতের জাতীয় সাহিত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান সাহিত্য একাডেমী এবং পশ্চিমবঙ্গ শিশু-কিশোর একাডেমীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই প্রতিভাবান মানুষটি মন খুলে ভালোবাসতেন মানুষকে। দুই বাংলার মানুষের হৃদয়েও সুনীল ছিলেন অধিকার নিয়ে উপবিষ্ট। তাই তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার আকাশ-বাতাসে। কেমন সহজে আমি ফোটালাম এক লক্ষ ফুল/হঠাৎ দিলাম জ্বেলে কয়েকটি সূর্য চাঁদ তারা/আবার খেয়াল হলে এক ফুয়ে নেভালাম সেই জ্যোৎস্না/নেভালাম সেই রোদ...
সত্যিই লাখো ফুল ফুটিয়ে, সূর্য চাঁদ তারা জ্বালিয়ে কোনো এক মহামায়ার ডাকে নিজেকেই নিভিয়ে দিলেন। আমরা কালের কণ্ঠ পরিবার সুনীলের এই চলে যাওয়ায় গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আমরা সহমর্মিতা উপলব্ধি করছি। সুনীল দেহত্যাগ করেছেন; কিন্তু তাঁর কর্ম, চিন্তা ও সৃষ্টি আমাদের জন্য প্রেরণা হয়ে কাজ করবে; প্রেরণা জোগাবে একটি অসাম্প্রদায়িক, সুষ্ঠু ও সভ্য সমাজ গড়ে তোলার কাজে। তিনি তাঁর 'ফেরা' কবিতায় জানতে চেয়েছেন, 'এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সহজ নাকি?' অগণিত সুনীলভক্তের আজ একই প্রশ্ন।
No comments