বাল্যবিবাহ দ্বিগুণ হারে বাড়ছে ইরানে

জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী ১৮ বছরের কম ছেলেমেয়ে শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই ১৮ বছরের আগে বিয়ে বেআইনি। সেখানে ইরানে উদ্বেগজনক হারে বাল্যবিয়ে বেড়ে চলেছে। গত এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে ১০ বছরের কম বয়সী মেয়েশিশুর বিয়ের হার দ্বিগুণ হয়েছে।


কম বয়সে বিয়ের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ, মানসিক অসুস্থতা ও আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি পতিতাবৃত্তিও বেড়ে যাচ্ছে। বাল্যবিয়ে বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইরানের জাতীয় নিবন্ধন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাল্যবিয়ের প্রভাব ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ওপরই পড়ে। তবে মেয়েদের ওপর প্রভাবটা তুলনামূলক বেশি। অনেক অভিভাবকই তাদের ঋণের বোঝা দূর করতে বেশি বয়সী লোকের সঙ্গে তাদের কম বয়সী মেয়ের বিয়ে দেয়।
ইরানের এনজিও 'সোসাইটি ফর প্রোটেকশন দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ড' জানিয়েছে, ২০০৯ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী ৪৩ হাজার ৪৫৯ জন মেয়ের বিয়ে হয়। এর আগের তিন বছর যার সম্মিলিত সংখ্যা ছিল ৩৩ হাজার ৩৮৩টি। ২০১০ সালে ১০ বছরের কম বয়সী ৭১৬ শিশুর বিয়ে হয়, যা আগের তুলনায় ৪৪৯টি বেশি।
এনজিওটির মুখপাত্র ফারশিদ ইয়াজদানি এ অবস্থার জন্য দারিদ্র্যকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরানের নিরক্ষর ও মাদকাসক্ত গ্রামীণ সমাজে বাল্যবিয়ের ঘটনা বেশি ঘটে। 'পারিবারিক আর্থিক দৈন্য বাল্যবিয়ের একটি কারণ। তবে সাংস্কৃতিক দারিদ্র্য এবং অজ্ঞতাও এর জন্য দায়ী।' তিনি আরো জানান, বাল্যবিয়ের কারণে কিশোর বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনাও বেড়ে যাচ্ছে। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই গড়ে ১৫-১৯ বছর বয়সী ১৫ হাজার মেয়েদের তাদের স্বামী তালাক দিয়েছে।
ইরানের শরীয়া আইনের কারণেই এমনটি ঘটছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শরিয়া আইন অনুযায়ী, ৯ বছর বয়সী মেয়ে শিশুর বিয়ে দেওয়া যায়। এ আইনের ব্যাপক সমালোচনার কারণে ২০০২ সালে ইরানের ক্ষমতাধর এক্সপেনডেন্সি কাউন্সিল জানায়, পরিবার ও আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ১৩ বছরের মেয়ে ও ১৫ বছরের ছেলের মধ্যে বিয়ে হতে পারে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.