একটি পাইন বাঁচাতে ১২ লাখ পাউন্ড

বিরূপ প্রকৃতির বিরুদ্ধে একলাই লড়ে যাচ্ছে পাইনগাছটি। এটি শুধু গাছ নয়, একটি শহরের ২০০ বছরের ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন। সুনামি ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ৮৮ ফুট লম্বা ৭০ হাজার পাইন গাছের বনের বিলুপ্তি হয়েছে। কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে মাত্র একটি।


এ গাছটিকে বাঁচাতে জাপান সরকার ১২ লাখ পাউন্ডের একটি প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা করেছে।
গত বছর মার্চে আঘাত হানা ভূমিকম্প ও সুনামিতে জাপানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। সুনামির আঘাতে বিপর্যস্ত জাপানের প্রশাসনিক এলাকা আইওয়াতের রিকুজেনতাকাতা শহরের স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে একটি মাত্র পাইন গাছ। ধারাবাহিক সুনামির আঘাতে ওই এলাকার বাকি সব গাছই মারা গেছে। সমুদ্রের লোনা পানির কারণে গোড়ায় পচন ধরায় সবেধন নীলমণি গাছটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিহাসের সাক্ষী পাইনগাছটিকে রক্ষা করার জন্য জাপান সরকার ১২ লাখ পাউন্ড ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থার মধ্যে একটি গাছের জন্য এত বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায়ও পড়তে হয়েছে সরকারকে। অনেকে আবার গাছটির বিকল্প ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। কেউ কেউ গাছ কেটে তা দিয়ে সুনামি স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ বা ধর্মীয় ভাস্কর্য তৈরির কথা বলেছেন।
রিকুজেনতাকাতা নগরীর মেয়র তাকাশি কুবোতা সাংবাদিকদের বলেন, 'পাইন বাঁচানোর পরিকল্পনা নিয়ে অনেক বিতর্ক বা সমালোচনা রয়েছে। তবে এটা হচ্ছে ভুল বোঝাবুঝির কারণে। কেউ কেউ বলছেন, জীবিত গাছটিকে কাটার প্রয়োজনীয়তা তো দেখছি না। আবার অনেকে বলছেন, করদাতাদের অর্থ দিয়ে কেন একটি মাত্র গাছ বাঁচাতে এত অর্থ ব্যয় করা হবে।' তিনি আরো বলেন, 'একলা পাইন গাছটিকে বাঁচানোর জন্য শুধু করদাতাদের অর্থ নয়, দাতাদের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়া হবে।'
কুবোতা বলেন, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর গাছটিকে তুলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটিকে বাঁচানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধাতব কাঠামো তৈরি করে তা গাছের কাণ্ডের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য গাছের বাইরে জেলির মতো একধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হবে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি বা মার্চে সুনামির দুই বছর পূর্তির আগেই গাছটিকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.