লোকমান হত্যা মামলা-১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র by মনিরুজ্জামান
নরসিংদীর জনপ্রিয় পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন হত্যা মামলায় পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন সরকারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
তবে মামলার এক নম্বর আসামি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদ ওরফে বাচ্চু ছাড়াও মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মাসুদুর রহমান ওরফে মুরাদ, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত ১৪ আসামির মধ্যে ১১ জনেরই সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে গত ২৪ জুন অভিযোগপত্রটি (নম্বর ৩৬৭) নরসিংদীর মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মণ্ডল।
গত বছরের ১ নভেম্বর রাত আটটার দিকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে লোকমান নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর ছোট ভাই বাচ্চুকে প্রধান আসামিসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে মাত্র তিনজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ১২ আসামি হলেন: শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ওরফে মোবা, পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল মতিন সরকার, তাঁর ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফ সরকার, নাজমুল হাসান শরীফ ওরফে কিলার শরীফ, হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, সরোয়ার হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ওরফে নাজমুল হাসান, হাজি ফারুক, মাহফুজুর রহমান ওরফে সবুজ ও শাহীন মিয়া।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের মধ্যে কিলার শরীফ লোকমানকে গুলি করে সরাসরি হত্যাকাণ্ড ঘটান। এ হত্যার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন মোবা, আশরাফুল, মতিন সরকার, হাজি ফারুক ও শাহিন মিয়া। এ ছাড়া হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ও সবুজ এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সহযোগিতা দেন এবং হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেন আসামি সরোয়ার।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী যে কারণে খুন হন লোকমান: পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে লোকমানের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় মতিন সরকারের। এ ছাড়া পৌরসভার প্রায় আট কোটি টাকার একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মতিনের ছোট ভাই আশরাফুলের সঙ্গেও দ্বন্দ্ব হয় লোকমানের। মেয়র লোকমান শহরের ব্রাহ্মণপাড়ার পাথরঘাট এলাকায় যে জায়গায় প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন, এর পাশেই সরকারি জায়গা ইজারা নিয়ে ব্যবসা করছিলেন আশরাফুল। কিন্তু প্ল্যান্টের জন্য আশরাফুলের ইজারাকৃত জমির কিছু অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন লোকমান। এ নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়। মোবারকের সঙ্গে লোকমানের বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু পরে তাঁদের মধ্যে দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ ব্যবসায়িক বিরোধ দেখা দেয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে: সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, বিশেষজ্ঞদের মতামত, আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও ময়নাতদন্তের তথ্য পর্যালোচনায় প্রকাশ পায়, লোকমানকে কীভাবে ও কখন হত্যা করা যায়, এ বিষয়ে আসামি আশরাফ, মোবার সঙ্গে একাধিকবার পরিকল্পনা করেন। এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি মতিন সরকার আসামিদের আর্থিক সহায়তা দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবার চাচাশ্বশুর হাজি সেলিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত মোটরসাইকেল ও মুখোশ (কালো মাংকি টুপি) কিলার শরীফকে সরবরাহ করেন। অপরদিকে ইশু সরকার কিলার শরীফকে ৩২টি গুলি ও একটি বিদেশি রিভলবার সরবরাহ করেন।
পরে কিলার শরীফের গুলিতে লোকমান নিহত হন। এরপর আসামি সরোয়ার ওই রিভলবারটি নিজ হেফাজতে নিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা দেন।
মামলার বাদীর বক্তব্য: মেয়র লোকমান হত্যা মামলার বাদী ও পৌর মেয়র কামরুজ্জামান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি আমি এখনো জানি না। তবে এজাহারভুক্ত একজন আসামিকেও অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হলে আমি আদালতের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করব।’
মেয়র কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে, মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে এ রকম অভিযোগপত্র বানানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি মন্ত্রীর ছোট ভাই বাচ্চুকে বাঁচানোর জন্য এ ধরনের অভিযোগপত্র তৈরি করতে বাধ্য করেছেন পুলিশকে। পুলিশ আরেকটি জজ মিয়া গল্প তৈরির চেষ্টা করছে। আমি এটা মানি না, মানব না।’
নিহত লোকমানের স্ত্রী নুসরাত জাহান রাত আটটার দিকে বলেন, অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি তাঁরও জানা নেই। তবে এজাহারভুক্ত আসামিদের বাদ দেওয়া হলে ধরে নিতে হবে, এটা ষড়যন্ত্রের অংশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে গত ২৪ জুন অভিযোগপত্রটি (নম্বর ৩৬৭) নরসিংদীর মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মণ্ডল।
গত বছরের ১ নভেম্বর রাত আটটার দিকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে লোকমান নিহত হন। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর ছোট ভাই বাচ্চুকে প্রধান আসামিসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে মাত্র তিনজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ১২ আসামি হলেন: শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ওরফে মোবা, পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবদুল মতিন সরকার, তাঁর ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকার ওরফে আশরাফ সরকার, নাজমুল হাসান শরীফ ওরফে কিলার শরীফ, হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, সরোয়ার হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ওরফে নাজমুল হাসান, হাজি ফারুক, মাহফুজুর রহমান ওরফে সবুজ ও শাহীন মিয়া।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের মধ্যে কিলার শরীফ লোকমানকে গুলি করে সরাসরি হত্যাকাণ্ড ঘটান। এ হত্যার পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন মোবা, আশরাফুল, মতিন সরকার, হাজি ফারুক ও শাহিন মিয়া। এ ছাড়া হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ও সবুজ এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সহযোগিতা দেন এবং হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেন আসামি সরোয়ার।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী যে কারণে খুন হন লোকমান: পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে লোকমানের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় মতিন সরকারের। এ ছাড়া পৌরসভার প্রায় আট কোটি টাকার একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মতিনের ছোট ভাই আশরাফুলের সঙ্গেও দ্বন্দ্ব হয় লোকমানের। মেয়র লোকমান শহরের ব্রাহ্মণপাড়ার পাথরঘাট এলাকায় যে জায়গায় প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন, এর পাশেই সরকারি জায়গা ইজারা নিয়ে ব্যবসা করছিলেন আশরাফুল। কিন্তু প্ল্যান্টের জন্য আশরাফুলের ইজারাকৃত জমির কিছু অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন লোকমান। এ নিয়ে দুজনের দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়। মোবারকের সঙ্গে লোকমানের বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু পরে তাঁদের মধ্যে দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ ব্যবসায়িক বিরোধ দেখা দেয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে: সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, বিশেষজ্ঞদের মতামত, আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও ময়নাতদন্তের তথ্য পর্যালোচনায় প্রকাশ পায়, লোকমানকে কীভাবে ও কখন হত্যা করা যায়, এ বিষয়ে আসামি আশরাফ, মোবার সঙ্গে একাধিকবার পরিকল্পনা করেন। এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি মতিন সরকার আসামিদের আর্থিক সহায়তা দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবার চাচাশ্বশুর হাজি সেলিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত মোটরসাইকেল ও মুখোশ (কালো মাংকি টুপি) কিলার শরীফকে সরবরাহ করেন। অপরদিকে ইশু সরকার কিলার শরীফকে ৩২টি গুলি ও একটি বিদেশি রিভলবার সরবরাহ করেন।
পরে কিলার শরীফের গুলিতে লোকমান নিহত হন। এরপর আসামি সরোয়ার ওই রিভলবারটি নিজ হেফাজতে নিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা দেন।
মামলার বাদীর বক্তব্য: মেয়র লোকমান হত্যা মামলার বাদী ও পৌর মেয়র কামরুজ্জামান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি আমি এখনো জানি না। তবে এজাহারভুক্ত একজন আসামিকেও অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হলে আমি আদালতের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করব।’
মেয়র কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে, মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশে এ রকম অভিযোগপত্র বানানো হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি মন্ত্রীর ছোট ভাই বাচ্চুকে বাঁচানোর জন্য এ ধরনের অভিযোগপত্র তৈরি করতে বাধ্য করেছেন পুলিশকে। পুলিশ আরেকটি জজ মিয়া গল্প তৈরির চেষ্টা করছে। আমি এটা মানি না, মানব না।’
নিহত লোকমানের স্ত্রী নুসরাত জাহান রাত আটটার দিকে বলেন, অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি তাঁরও জানা নেই। তবে এজাহারভুক্ত আসামিদের বাদ দেওয়া হলে ধরে নিতে হবে, এটা ষড়যন্ত্রের অংশ।
No comments