২০ বছর পর রেলের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে-মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব শতভাগ, সংসদীয় কমিটির ৫০% by নিখিল ভদ্র
দীর্ঘ ২০ বছর পর বাংলাদেশ রেলওয়ের ভাড়া বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে শতভাগ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে রেল মন্ত্রণালয়। তবে সংসদীয় কমিটি ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে মত দিলেও এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত সপ্তাহে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রেলওয়ের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে নবগঠিত এই মন্ত্রণালয়ের কাউন্সিল কর্মকর্তা ও উপসচিব এ এম এম সফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে যাত্রী, কনটেইনার ও পার্সেল খাতে আলাদা আলাদা ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ভাড়া বাড়ানোর কারণ হিসেবে টানা লোকসানের পাশাপাশি জ্বালানি তেল ও রেলের যন্ত্রাংশের মূল্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রেণী অনুযায়ী যাত্রী ভাড়া ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ন্যূনতম পাঁচ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
রেল খাতকে রক্ষায় সব ধরনের ভাড়া বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান জানান, যেভাবে বাস-লঞ্চসহ অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া বাড়ছে, তাতে বছরের পর বছর রেলের একই ভাড়া থাকা অযৌক্তিক। সংসদীয় কমিটিও ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে, তবে এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। শিগগির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানান।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে ১৯৯২ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৬ দফা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। তবে এরপর ২০ বছর চলে গেলেও রেলের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়নি। অথচ ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম ৪২০ শতাংশ বেড়েছে। কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও বেড়েছে কয়েক গুণ। আর রেলে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও যন্ত্রাংশের মূল্য গড়ে ৩৬০ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় রেল খাতে লোকসান কমাতে যাত্রী, মালামাল ও কনটেইনার পরিবহনের ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণ প্রয়োজন বলে সংসদীয় কমিটিকে দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় (সাধারণ) শ্রেণীর ন্যূনতম ভাড়া হবে পাঁচ টাকা। ১৯৯২ সালের হিসাবে যা এখন তিন টাকা রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর (মেইল/এঙ্প্রেস) ভাড়া ১০ টাকা হবে (বর্তমানে তা পাঁচ টাকা)। কমিউটার সার্ভিসের ভাড়া বর্তমানের হারে সর্বনিম্ন ১৫ টাকাই রাখা হয়েছে। আর সুলভ ২৫ টাকা (বর্তমানে ২০ টাকা), শোভন ৩৫ টাকা বর্তমানে ৩০ টাকা), প্রথম শ্রেণী (নন-এসি) ৮০ টাকা (বর্তমানে ৭০ টাকা), প্রথম বার্থ (নন-এসি) ১০০ টাকা (বর্তমানে ৮৫ টাকা), প্রথম সিট (এসি) ১০০ টাকা (বর্তমানে ৮৫ টাকা) এবং প্রথম বার্থ (এসি) ১২০ টাকা (বর্তমানে ১০৫ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন চালু হওয়া শ্রেণী শোভন চেয়ার ৪০ টাকা ও স্নিগ্ধা ৯০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে ১১টি শ্রেণীর প্রতি কিলোমিটারে সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ পয়সা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ২ দশমিক ২৮ টাকা থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৩৬ পয়সা ও সর্বোচ্চ চার টাকা ৩২ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
একই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ রেলওয়ের সকল প্রকার মালামাল বুকিংয়ের ওপর শতভাগেরও বেশি ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০ ফুট খালি কনটেনারের সর্বনিম্ন ভাড়া দেড় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং ৪০ ফুট কনটেইনারের ভাড়া আড়াই হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম-ঢাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম দুই পথেই বোঝাইকৃত কনটেইনারের ভাড়াও শতভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করে ভাড়া ডলারের সমমূল্যে আদায় করা হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা আইসিডি পর্যন্ত ২০ ফুট বোঝাইকৃত কনটেইনারের সর্বনিম্ন ভাড়া ছয় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হবে। একইভাবে ৪০ ফুট বোঝাইকৃত কনটেইনারের ক্ষেত্রেও দ্বিগুণ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা করা হবে।
এ ছাড়া পার্সেলের ক্ষেত্রে দূরত্বের জন্য আনুপাতিক হারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, সব পার্সেল ও লাগেজ ফুল পার্সেল রেটে বুক করা হবে। বিধি অনুযায়ী সব চার্জ সমানুপাতিক হারে নির্ধারিত হবে। এ ছাড়া বিবিধ খাতে ট্রাফিক ভেন্ডিং, লাইসেন্স ফি দ্বিগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ২০ বছরে ভাড়া না বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়-ব্যয়ের পার্থক্য বেড়েই চলেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে রেলওয়ে ৬২৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আয় করেছে। আর এ সময়ে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৬৩১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই অবস্থায় ভাড়া পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে রেলের চলমান লোকসান কমে আসবে। এ ক্ষেত্রে শুধু যাত্রীসেবা খাত থেকেই অতিরিক্ত ৩০৫ কোটি টাকা আয় হবে। আর মালামাল, পার্সেল ও অন্যান্য খাত থেকে আয় হবে অতিরিক্ত আরো ১৫৬ কোটি টাকা। ফলে বছরে ৪৬১ কোটি টাকা লোকসান কমবে। আর সেবা বাড়ানোর মাধ্যমে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন বাড়ানো গেলে রেলওয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
রেল খাতকে রক্ষায় সব ধরনের ভাড়া বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান জানান, যেভাবে বাস-লঞ্চসহ অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া বাড়ছে, তাতে বছরের পর বছর রেলের একই ভাড়া থাকা অযৌক্তিক। সংসদীয় কমিটিও ভাড়া বাড়ানোর পক্ষে, তবে এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। শিগগির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে তিনি জানান।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে ১৯৯২ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৬ দফা ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। তবে এরপর ২০ বছর চলে গেলেও রেলের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়নি। অথচ ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম ৪২০ শতাংশ বেড়েছে। কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও বেড়েছে কয়েক গুণ। আর রেলে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও যন্ত্রাংশের মূল্য গড়ে ৩৬০ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় রেল খাতে লোকসান কমাতে যাত্রী, মালামাল ও কনটেইনার পরিবহনের ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণ প্রয়োজন বলে সংসদীয় কমিটিকে দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় (সাধারণ) শ্রেণীর ন্যূনতম ভাড়া হবে পাঁচ টাকা। ১৯৯২ সালের হিসাবে যা এখন তিন টাকা রয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর (মেইল/এঙ্প্রেস) ভাড়া ১০ টাকা হবে (বর্তমানে তা পাঁচ টাকা)। কমিউটার সার্ভিসের ভাড়া বর্তমানের হারে সর্বনিম্ন ১৫ টাকাই রাখা হয়েছে। আর সুলভ ২৫ টাকা (বর্তমানে ২০ টাকা), শোভন ৩৫ টাকা বর্তমানে ৩০ টাকা), প্রথম শ্রেণী (নন-এসি) ৮০ টাকা (বর্তমানে ৭০ টাকা), প্রথম বার্থ (নন-এসি) ১০০ টাকা (বর্তমানে ৮৫ টাকা), প্রথম সিট (এসি) ১০০ টাকা (বর্তমানে ৮৫ টাকা) এবং প্রথম বার্থ (এসি) ১২০ টাকা (বর্তমানে ১০৫ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নতুন চালু হওয়া শ্রেণী শোভন চেয়ার ৪০ টাকা ও স্নিগ্ধা ৯০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে ১১টি শ্রেণীর প্রতি কিলোমিটারে সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ পয়সা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ২ দশমিক ২৮ টাকা থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৩৬ পয়সা ও সর্বোচ্চ চার টাকা ৩২ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
একই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ রেলওয়ের সকল প্রকার মালামাল বুকিংয়ের ওপর শতভাগেরও বেশি ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ২০ ফুট খালি কনটেনারের সর্বনিম্ন ভাড়া দেড় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং ৪০ ফুট কনটেইনারের ভাড়া আড়াই হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা করার কথা বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম-ঢাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম দুই পথেই বোঝাইকৃত কনটেইনারের ভাড়াও শতভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করে ভাড়া ডলারের সমমূল্যে আদায় করা হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকা আইসিডি পর্যন্ত ২০ ফুট বোঝাইকৃত কনটেইনারের সর্বনিম্ন ভাড়া ছয় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হবে। একইভাবে ৪০ ফুট বোঝাইকৃত কনটেইনারের ক্ষেত্রেও দ্বিগুণ বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা করা হবে।
এ ছাড়া পার্সেলের ক্ষেত্রে দূরত্বের জন্য আনুপাতিক হারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, সব পার্সেল ও লাগেজ ফুল পার্সেল রেটে বুক করা হবে। বিধি অনুযায়ী সব চার্জ সমানুপাতিক হারে নির্ধারিত হবে। এ ছাড়া বিবিধ খাতে ট্রাফিক ভেন্ডিং, লাইসেন্স ফি দ্বিগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ২০ বছরে ভাড়া না বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়-ব্যয়ের পার্থক্য বেড়েই চলেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে রেলওয়ে ৬২৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা আয় করেছে। আর এ সময়ে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৬৩১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই অবস্থায় ভাড়া পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে রেলের চলমান লোকসান কমে আসবে। এ ক্ষেত্রে শুধু যাত্রীসেবা খাত থেকেই অতিরিক্ত ৩০৫ কোটি টাকা আয় হবে। আর মালামাল, পার্সেল ও অন্যান্য খাত থেকে আয় হবে অতিরিক্ত আরো ১৫৬ কোটি টাকা। ফলে বছরে ৪৬১ কোটি টাকা লোকসান কমবে। আর সেবা বাড়ানোর মাধ্যমে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন বাড়ানো গেলে রেলওয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
No comments