পুলিশি নির্যাতন-আমার ছেলে নীলের একটি জিজ্ঞাসা by প্রশান্ত কর্মকার
‘বাবা পুলিশ মারছে, পুলিশগুলো কোট নিয়ে গেছে, কোট নিয়ে গেছে’ আমার দুই বছরের ছেলে নীল, ভাঙা ভাঙা শব্দে এ কথাগুলো বলছিল। সে আমার কোল থেকে নেমে বলছিল, ‘আমি পুলিশকে মারব।’ ঘরে থাকা একটি লাঠি নিয়ে দরজায় বারবার আঘাত করছিল আর বলছিল, ‘মারছি। কোট কই?’
গত ২৯ মে আদালত চত্বরে পুলিশ ক্লাবে নারী নির্যাতন ও সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হই। পুলিশ মারধর করার পর ভ্যানে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরনের পোশাক, কালো কোট কেড়ে নেয়। যে পোশাক আমাকে সম্মান দিয়েছে, যে পোশাক পরে আদালতে মানুষের কথা বলি, সেই পোশাক পুলিশ কেড়ে নেয়। সেই পোশাক আমি আজও ফেরত পাইনি। ফেরত পাইনি আইডি কার্ড, মূল্যবান কাগজ ও চশমা। আমার দুই বছরের ছেলে নীল। তার শিশুমনে যে প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছে, তা নিয়ে আমি চিন্তিত। সে হয়তো পুলিশকে কোনো দিনও ভালোভাবে নিতে পারবে না। তাই আমার পরিচিত কয়েকজন পুলিশের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করালাম। ঘরে থাকা কোট-গাউন ওকে দেখিয়ে বলি, এই তো আছে। পুলিশ ফেরত দিয়েছে। নীল তা বিশ্বাস করতে চায় না। ঘটনার পরের দিন এক সভায় চিফ মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহাকে বলেছিলাম, আমি যে সাংবাদিক চিনতে পারেনি পুলিশ ভালো কথা কিন্তু আমার পরনে তো আইনি পোশাক, গলায় ব্যাচ, হাতে গাউন ছিল। যে পোশাক পরে আপনি বিচারকাজ পরিচালনা করেন, আমরা বিচারের কাজে সহায়তা করি, সেই পোশাক কেড়ে নিয়েছে। এ অপমান সবার।
রাতে ঘরে ফিরে ছেলের মুখোমুখি হতেই প্রশ্ন আর প্রশ্ন। যে পুলিশ আমাকে নির্যাতন করেছে, সেই পুলিশের ওপর যেন তার খারাপ ধারণা না হয়, এ জন্য বারবার মিথ্যা বলতে হয়েছে পুলিশ ভালো। কোট-গাউন দিয়ে দিয়েছে।
ভুল স্বীকার করলেই কেউ ছোট হয় না। বরং তা মহত্বের পরিচয়। সেদিন পুলিশের সদস্যরা তা করেননি। বরং প্রকৃত বিষয় আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। বাবা হয়েও শিশু নীলকে আমি সত্য কথা বলতে পারলাম না। এ বড় লজ্জা।
লেখক আইনজীবী,সুপ্রিম কোর্ট ও প্রথম আলোর আদালত প্রতিবেদক
ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহাকে বলেছিলাম, আমি যে সাংবাদিক চিনতে পারেনি পুলিশ ভালো কথা কিন্তু আমার পরনে তো আইনি পোশাক, গলায় ব্যাচ, হাতে গাউন ছিল। যে পোশাক পরে আপনি বিচারকাজ পরিচালনা করেন, আমরা বিচারের কাজে সহায়তা করি, সেই পোশাক কেড়ে নিয়েছে। এ অপমান সবার।
রাতে ঘরে ফিরে ছেলের মুখোমুখি হতেই প্রশ্ন আর প্রশ্ন। যে পুলিশ আমাকে নির্যাতন করেছে, সেই পুলিশের ওপর যেন তার খারাপ ধারণা না হয়, এ জন্য বারবার মিথ্যা বলতে হয়েছে পুলিশ ভালো। কোট-গাউন দিয়ে দিয়েছে।
ভুল স্বীকার করলেই কেউ ছোট হয় না। বরং তা মহত্বের পরিচয়। সেদিন পুলিশের সদস্যরা তা করেননি। বরং প্রকৃত বিষয় আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। বাবা হয়েও শিশু নীলকে আমি সত্য কথা বলতে পারলাম না। এ বড় লজ্জা।
লেখক আইনজীবী,সুপ্রিম কোর্ট ও প্রথম আলোর আদালত প্রতিবেদক
No comments