মেয়র লোকমান হত্যাকাণ্ড-১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট, মন্ত্রীর ভাইয়ের নাম নেই by সুমন বর্মণ
নরসিংদীর জনপ্রিয় পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন হত্যা মামলায় পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন সরকারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর ভাইসহ এজাহারভুক্ত ১১ আসামির নাম নেই।
হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করে অভিযোগ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র তাঁদের মধ্যে মাত্র তিনজন মামলার এজাহারভুক্ত।
কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে গত ২৪ জুন অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ মণ্ডল। আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রের নম্বর ৩৬৭।
অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন মোবা, মতিন সরকারের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকার, নাজমুল হাসান শরীফ ওরফে কিলার শরীফ, হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, সরোয়ার হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ওরফে নাজমুল হাসান, হাজি ফারুক, মাহফুজুর রহমান ওরফে সবুজ ও শাহীন মিয়া। তাঁদের মধ্যে আবদুল মতিন সরকার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর, মোবারক হোসেন মোবা ৩ নম্বর ও আশরাফুল সরকার ১১ নম্বর আসামি।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বাদ পড়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন খান, হিরন মিয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মাসুদুর রহমান ওরফে মুরাদ, শহর আওয়ামী লীগ নেতা কবির সরকার, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিঞা মোহাম্মদ মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুন মিয়া এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃত কাজী মাসুদুর রহমান ওরফে টিপ্পন, কাজী নূরে আলম ওরফে আলম, মো. সোহেল ভূঁইয়া ও মো. আকতারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত মেয়রের ছোট ভাই ও নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাইসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছয়-সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আসামি শরীফের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় এবং মোবারক, আশরাফুল, মতিন সরকার, ফারুক ও শাহিনের বিরুদ্ধে ১২০(খ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। একজন ছাড়া বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যায় সহযোগিতা করায় ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য আসামি সারোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করায় দণ্ডবিধির ২০১ ধারায়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মেয়র লোকমান হোসেনের সঙ্গে মোবারকের বন্ধুত্ব ছিল। পরে দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ ব্যবসায়িক বিরোধ তৈরি হয়। এ ছাড়া মোবারকের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে লোকমানের ঘনিষ্ঠ তারেকের সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করতেন তিনি। মোবারক বিষয়টি লোকমানকে কয়েকবার বলেও প্রতিকার পাননি। এ নিয়েও মোবারক ক্ষুব্ধ ছিলেন লোকমানের ওপর। অন্যদিকে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় সব সময় লোকমানের বিরোধিতা করতেন আসামি আবদুল মতিন সরকার। একই কারণে মতিন সরকারের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গেও লোকমানের বিরোধ ছিল। পরে এ বিরোধ আরো জোরালো হয় পৌরসভার একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে।
দুটি খুনের ঘটনায় আসামি হওয়ায় শরীফ এর দায় চাপান মেয়র লোকমানের ওপর। এ কারণে তিনি মেয়রের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে মেয়রের ঝগড়াও হয়। এ ছাড়া শিবপুর এলাকার বালু ব্যবসা নিয়েও লোকমানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। একবার তাঁকে ডেকে নিয়ে অস্ত্রসহ পুলিশেও দিয়েছিলেন লোকমান। এ ক্ষোভ থেকেই তিনি মোবারকের প্রস্তাবে রাজি হন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, প্রাপ্ত সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞদের মতামত, আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও ময়নাতদন্তের তথ্য পর্যালোচনায় প্রকাশ পায় যে আসামি আশরাফ সরকার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মোবারকের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছেন। মতিন সরকার পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত ছিলেন এবং আসামিদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেন।
হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবারকের চাচাশ্বশুর হাজি সেলিম মোটরসাইকেল ও একটি কালো মাংকি টুপি মূল হত্যাকারী শরীফকে সরবরাহ করেন। অন্যদিকে শিবলী সরকার ওরফে ইশু সরকার শরীফকে ৩২টি গুলি ও একটি বিদেশি রিভলবার সরবরাহ করেন। হত্যাকাণ্ডের আগে আসামি আওলাদ হোসেন তাঁর বাসায় শরীফকে আশ্রয় দেন এবং ভাই হীরুকে মেয়রের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য পাঠান।
হত্যাকাণ্ডের পর আসামি সারোয়ার আগ্নেয়াস্ত্রটি নিজ হেফাজতে শরীফকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের কাগজপত্র, চাবি, গুলির খোসা, মাংকি টুপি পানিতে ফেলে হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেন। অন্য আসামিরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে লোকমান হত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নেন।
কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে গত ২৪ জুন অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ মণ্ডল। আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রের নম্বর ৩৬৭।
অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন মোবা, মতিন সরকারের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকার, নাজমুল হাসান শরীফ ওরফে কিলার শরীফ, হাজি সেলিম, আওলাদ হোসেন, সরোয়ার হোসেন, ইশু সরকার, হিরু ওরফে নাজমুল হাসান, হাজি ফারুক, মাহফুজুর রহমান ওরফে সবুজ ও শাহীন মিয়া। তাঁদের মধ্যে আবদুল মতিন সরকার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর, মোবারক হোসেন মোবা ৩ নম্বর ও আশরাফুল সরকার ১১ নম্বর আসামি।
এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বাদ পড়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন খান, হিরন মিয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মাসুদুর রহমান ওরফে মুরাদ, শহর আওয়ামী লীগ নেতা কবির সরকার, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মিঞা মোহাম্মদ মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুন মিয়া এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃত কাজী মাসুদুর রহমান ওরফে টিপ্পন, কাজী নূরে আলম ওরফে আলম, মো. সোহেল ভূঁইয়া ও মো. আকতারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত মেয়রের ছোট ভাই ও নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাইসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছয়-সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আসামি শরীফের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় এবং মোবারক, আশরাফুল, মতিন সরকার, ফারুক ও শাহিনের বিরুদ্ধে ১২০(খ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। একজন ছাড়া বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যায় সহযোগিতা করায় ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্য আসামি সারোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করায় দণ্ডবিধির ২০১ ধারায়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মেয়র লোকমান হোসেনের সঙ্গে মোবারকের বন্ধুত্ব ছিল। পরে দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ ব্যবসায়িক বিরোধ তৈরি হয়। এ ছাড়া মোবারকের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে লোকমানের ঘনিষ্ঠ তারেকের সম্পর্ক ছিল বলে সন্দেহ করতেন তিনি। মোবারক বিষয়টি লোকমানকে কয়েকবার বলেও প্রতিকার পাননি। এ নিয়েও মোবারক ক্ষুব্ধ ছিলেন লোকমানের ওপর। অন্যদিকে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় সব সময় লোকমানের বিরোধিতা করতেন আসামি আবদুল মতিন সরকার। একই কারণে মতিন সরকারের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গেও লোকমানের বিরোধ ছিল। পরে এ বিরোধ আরো জোরালো হয় পৌরসভার একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে।
দুটি খুনের ঘটনায় আসামি হওয়ায় শরীফ এর দায় চাপান মেয়র লোকমানের ওপর। এ কারণে তিনি মেয়রের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে মেয়রের ঝগড়াও হয়। এ ছাড়া শিবপুর এলাকার বালু ব্যবসা নিয়েও লোকমানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। একবার তাঁকে ডেকে নিয়ে অস্ত্রসহ পুলিশেও দিয়েছিলেন লোকমান। এ ক্ষোভ থেকেই তিনি মোবারকের প্রস্তাবে রাজি হন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, প্রাপ্ত সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞদের মতামত, আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও ময়নাতদন্তের তথ্য পর্যালোচনায় প্রকাশ পায় যে আসামি আশরাফ সরকার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মোবারকের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছেন। মতিন সরকার পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত ছিলেন এবং আসামিদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেন।
হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবারকের চাচাশ্বশুর হাজি সেলিম মোটরসাইকেল ও একটি কালো মাংকি টুপি মূল হত্যাকারী শরীফকে সরবরাহ করেন। অন্যদিকে শিবলী সরকার ওরফে ইশু সরকার শরীফকে ৩২টি গুলি ও একটি বিদেশি রিভলবার সরবরাহ করেন। হত্যাকাণ্ডের আগে আসামি আওলাদ হোসেন তাঁর বাসায় শরীফকে আশ্রয় দেন এবং ভাই হীরুকে মেয়রের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য পাঠান।
হত্যাকাণ্ডের পর আসামি সারোয়ার আগ্নেয়াস্ত্রটি নিজ হেফাজতে শরীফকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের কাগজপত্র, চাবি, গুলির খোসা, মাংকি টুপি পানিতে ফেলে হত্যার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেন। অন্য আসামিরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে লোকমান হত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নেন।
No comments