ওয়াসার দূষিত পানি-মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চাই

ওয়াসা দূষিত পানি পান করাচ্ছে- এ অপবাদ নতুন নয়। প্রতিনিয়তই দূষিত পানি নিয়ে খবর প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয় না। ওয়াসার পানি সরবরাহ যেমন আছে তেমনই থেকে যায়। পানি ছাড়া জীবন বাঁচে না। জীবন রক্ষার্থে পানি পান করে যেতে হচ্ছে হাসপাতালে।


দিন কয়েক আগে প্রচণ্ড গরমের সময় পেটের পীড়া নিয়ে মহাখালীর উদরাময় হাসপাতালসহ অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগী আসার সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ডাক্তার ও পানি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দূষিত পানি পান করায় পেটের পীড়া, আমাশয়, কলেরা, জন্ডিস প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অভিমত, এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন পান করতে থাকলে আরো জটিল রোগ, এমনকি মারণব্যাধি ক্যান্সারও হতে পারে। কিডনি রোগ, আলসার, রক্তচাপ, অ্যাজমা, যক্ষ্মা ইত্যাদি রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে।
২০০ বছর আগের চাঁদনী ঘাটের পানি শোধনাগার থেকে এখনো বুড়িগঙ্গার পানি শোধন করে সরবরাহ করা হচ্ছে। বুড়িগঙ্গার পানির দূষণমাত্রা ভয়াবহ, তাই বিশুদ্ধ করতে অতিমাত্রায় কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হয়। এতে স্বাদ-গন্ধে পরিবর্তন আসে। শুকনো মৌসুমে শীতলক্ষ্যার পানিদূষণও মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পড়ে। তাই বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি শোধনের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয়, যা মোটেও সহনীয় নয়। যদিও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, এতে জীবাণু বা ক্ষতিকর কিছু থাকে না; কিন্তু ভুক্তভোগীরা বলছে, শুধু স্বাদ-গন্ধের পরিবর্তন নয়, কালো পানিও আসে। ফুটিয়ে পান করলেও ময়লা থাকে এবং রং, স্বাদ বদলে যায়।
ওয়াসাকে সত্য উপলব্ধি করতে হবে। মানুষের ভোগান্তিকে স্বীকার করে নিয়ে সরবরাহ লাইন সংস্কার করা দরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যাতে ময়লা ও দুর্গন্ধমুক্ত হয় পানি। আর নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে চাইলে অবশ্যই ওয়াসার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা থেকে পানি আনার মহাপরিকল্পনাটির দ্রুত বাস্তবায়ন হলে অবাঞ্ছিত রোগ-ব্যাধি থেকেও নগরবাসী রক্ষা পাবে। জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে তা অবশ্যই জরুরি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট মহল তা এখনই ভেবে দেখবে।

No comments

Powered by Blogger.