বখাটের শাস্তি নিশ্চিত এবংনির্যাতিতাকে ভরসা জোগাতে হবে-সোনিয়ারা কেন আত্মহত্যা করে?
সখীপুরের সোনিয়া আক্তার বেঁচে যেতে পারত, যদি তার মনে সামাজিক নিন্দার আতঙ্ক গেঁথে না যেত। সোনিয়া আক্তার হয়তো আত্মহত্যা করত না, যদি বখাটের বিচার হওয়ার ভরসা সে পেত। উত্ত্যক্তকারী পুরুষের বদলে উত্ত্যক্ত হওয়ার শিকার নারীকেই অসম্মানিত করার দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে প্রবল না হলে সোনিয়ার আত্মবিশ্বাস ভেঙে যেত না।
বখাটে যুবকটি একাই তাই সোনিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়নি, সমগ্র সমাজ ও সংস্কৃতির নির্দয় হাতও তাকে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছে।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সোনিয়াকে মারধর করে তারই সহপাঠী স্বপন। রটনা ছড়িয়ে তার চরিত্রহননের হুমকিও দেওয়া হয়। ১২-১৩ বছরের কিশোরী প্রেম কী তা না বুঝলেও এটা বুঝেছে, সমাজ বখাটেরই পক্ষে। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় প্রকাশ্যে মারধর করার সময় কেউ এগিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়ায়নি। কিশোরীটি মাকে সব খুলে বলেছে, কিন্তু মা-ও কোনো ভরসা দিতে পারেননি। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন সমাজের মানুষ এসব ক্ষেত্রে অপরাধীর বদলে অপরাধের শিকারকেই গঞ্জনা দিয়ে থাকে। কোথাও আশ্বাস ও নিরাপত্তা সে পায়নি। যদি পেত, তাহলে হয়তো অভিমানে আর আতঙ্কে আত্মহত্যা করত না মেয়েটি।
সোনিয়াকে যে আত্মহননে প্ররোচিত করেছে, সেও তার সহপাঠী এক কিশোর। বয়সে কিশোর হলেও বখাটে যুবকদের কায়দা সেও শিখে নিয়েছে। সে নিশ্চয় জেনেছে, কিশোর হলেও পুরুষ এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রচ্ছন্ন সমর্থন তারই পক্ষে থাকবে। সেও জেনে গিয়েছে, সাধারণত এসব ঘটনার বিচার হয় না। তারই প্রমাণ হিসেবে শনিবারের প্রথম আলোতেই দেখা যাচ্ছে, মানিকগঞ্জে যৌন হয়রানি করেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় পার পেয়ে গেছে আবীর চৌধুরী নামের এক যুবক। চেয়ারম্যানের চাপেই মেয়েটির বাবা-মা মামলা করতেও ব্যর্থ হন।
যে সমাজ বখাটে স্বপন বা আবীরদের তৈরি করে, তাদের অপরাধ খাটো করে দেখে, নির্যাতকের বদলে নির্যাতিতাকেই বিড়ম্বনায় ফেলে, সোনিয়ার আত্মহত্যা সেই সমাজেরই বিরুদ্ধে। সেই সমাজের পুলিশ, বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনের উচিত অপরাধীর শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায় লাঘব করা।
কিশোরী বয়সে আবেগপ্রবণতা বেশি থাকে মেয়েদের। পরিবার থেকে বিদ্যালয়, সরকার থেকে গণমাধ্যম—সবারই উচিত তাদের বোঝানো উত্ত্যক্ত বা যৌন হয়রানি-নির্যাতন যে করে, লজ্জা তার, অপরাধ তার। তাদের বোঝানো উচিত, আত্মহত্যায় সমাধান নেই। সমাধান মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকায়। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন যৌন হয়রানির মুখে সন্ত্রস্ত আরও অনেক সোনিয়া দেখবে, বখাটে-নিপীড়কেরা ছাড় পাচ্ছে না। কেবল অপরাধীদের শাস্তি দিলেই অপরাধ কমে না। যৌন নিপীড়নের মানসিকতাকে সমাজ থেকে দূর করতে সন্তান-অভিভাবক-শিক্ষক—সবাইকেই কথা ও কাজে সচেষ্ট থাকতে হবে।
জীবিত সোনিয়া এই বিচার ও বিহিত দেখে যেতে পারেনি, মৃত সোনিয়ার জন্য যেন সেই বিচার নিশ্চিত করা হয়।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সোনিয়াকে মারধর করে তারই সহপাঠী স্বপন। রটনা ছড়িয়ে তার চরিত্রহননের হুমকিও দেওয়া হয়। ১২-১৩ বছরের কিশোরী প্রেম কী তা না বুঝলেও এটা বুঝেছে, সমাজ বখাটেরই পক্ষে। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় প্রকাশ্যে মারধর করার সময় কেউ এগিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়ায়নি। কিশোরীটি মাকে সব খুলে বলেছে, কিন্তু মা-ও কোনো ভরসা দিতে পারেননি। পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন সমাজের মানুষ এসব ক্ষেত্রে অপরাধীর বদলে অপরাধের শিকারকেই গঞ্জনা দিয়ে থাকে। কোথাও আশ্বাস ও নিরাপত্তা সে পায়নি। যদি পেত, তাহলে হয়তো অভিমানে আর আতঙ্কে আত্মহত্যা করত না মেয়েটি।
সোনিয়াকে যে আত্মহননে প্ররোচিত করেছে, সেও তার সহপাঠী এক কিশোর। বয়সে কিশোর হলেও বখাটে যুবকদের কায়দা সেও শিখে নিয়েছে। সে নিশ্চয় জেনেছে, কিশোর হলেও পুরুষ এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রচ্ছন্ন সমর্থন তারই পক্ষে থাকবে। সেও জেনে গিয়েছে, সাধারণত এসব ঘটনার বিচার হয় না। তারই প্রমাণ হিসেবে শনিবারের প্রথম আলোতেই দেখা যাচ্ছে, মানিকগঞ্জে যৌন হয়রানি করেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় পার পেয়ে গেছে আবীর চৌধুরী নামের এক যুবক। চেয়ারম্যানের চাপেই মেয়েটির বাবা-মা মামলা করতেও ব্যর্থ হন।
যে সমাজ বখাটে স্বপন বা আবীরদের তৈরি করে, তাদের অপরাধ খাটো করে দেখে, নির্যাতকের বদলে নির্যাতিতাকেই বিড়ম্বনায় ফেলে, সোনিয়ার আত্মহত্যা সেই সমাজেরই বিরুদ্ধে। সেই সমাজের পুলিশ, বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনের উচিত অপরাধীর শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায় লাঘব করা।
কিশোরী বয়সে আবেগপ্রবণতা বেশি থাকে মেয়েদের। পরিবার থেকে বিদ্যালয়, সরকার থেকে গণমাধ্যম—সবারই উচিত তাদের বোঝানো উত্ত্যক্ত বা যৌন হয়রানি-নির্যাতন যে করে, লজ্জা তার, অপরাধ তার। তাদের বোঝানো উচিত, আত্মহত্যায় সমাধান নেই। সমাধান মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকায়। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন যৌন হয়রানির মুখে সন্ত্রস্ত আরও অনেক সোনিয়া দেখবে, বখাটে-নিপীড়কেরা ছাড় পাচ্ছে না। কেবল অপরাধীদের শাস্তি দিলেই অপরাধ কমে না। যৌন নিপীড়নের মানসিকতাকে সমাজ থেকে দূর করতে সন্তান-অভিভাবক-শিক্ষক—সবাইকেই কথা ও কাজে সচেষ্ট থাকতে হবে।
জীবিত সোনিয়া এই বিচার ও বিহিত দেখে যেতে পারেনি, মৃত সোনিয়ার জন্য যেন সেই বিচার নিশ্চিত করা হয়।
No comments