ফিরে আসা... by আরিফ হোসেন
'রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে সম্পূর্ণ মুছে যেতে বসা একটা দলকে কীভাবে নতুন জীবন দিতে হয়, পশ্চিমবঙ্গে তার কোচিং ক্লাস চলছে। ইস্, এভাবে যদি রাজ্যের সোনার দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনা যেত।' 'এখন রবিন দেব, শ্যামল চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে বিমান বসু সবাই গাইছেন_ 'এভাবেও ফিরে আসা যায়!' তারা ভাবেননি, দলের চন্দ্রবিন্দু প্রাপ্তির পরেও এই গান গাওয়ার সুযোগ তাদের হবে।
'দিদি, সত্যিকার পাল্টা দিতে তো ৩৪ বছর সময় লাগল। রোজ রোজ পাল্টা দেওয়ার চেষ্টা করে আপনার এই পাল্টে দেওয়ার স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলবেন না। ওরা আপনাকে চটাচ্ছে। আপনি আরেকটু ধীর হোন, আমরা পাশেই আছি।'
আনন্দবাজারের 'চিরকুট' নামে একটি কলাম থেকে এসব উদ্ধৃতি নেওয়া হয়েছে। রোববার পাঠকদের এসব ছোট কিন্তু তির্যক মন্তব্য প্রকাশ করে কলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি। আট মাস আগে ওই রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম জোটকে হারিয়ে দেয়। বাম জোট হাতেগোনা কয়েকটি আসন পাওয়ায় আপাতত 'রাজনৈতিক নির্বাসনেই' থাকতে হবে বলে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ধারণা করেছিলেন। রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে লোকসভা নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেও তাদের পরাজয় ঘটেছিল। তাদের আপাতত মানুষের কাছে যাওয়ার মুখ থাকবে না_ এমন ধারণা অবশ্য নস্যাৎ হয়ে যায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি বড় জনসমাবেশ অনুষ্ঠানের পর। অনেকের কাছেই মনে হয়েছে, এ সমাবেশ ছিল তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক। আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল, 'উপচে পড়া ব্রিগেড দেখে সিপিএম খুশি'। এ দলটির দাবি, অল্প সময়ের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীদের 'মোহভঙ্গ' ঘটতে শুরু করেছে। এ দাবিরই সমর্থন মিলছে 'চিরকুট'-এর মন্তব্য থেকে_ এমন কথা কেউ বলতেই পারেন। কয়েক দিন আগে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার নির্বাচনী এলাকায় একদিনের নোটিশে একটি মিছিল করেছিলেন, যা আকারে ছিল যথেষ্ট বড়। তার পাল্টা হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস ওই এলাকায় পরদিন মিছিল করে এবং সেটা ফ্লপ করে। আনন্দবাজার লিখেছে, 'সিপিএম-এর পাল্টা মিছিলে সাড়া ফেলতে পারল না তৃণমূল। তাদের মিছিলে বহিরাগতরাই ছিল বেশি।' আনন্দবাজার নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়েছিল। এখন তারা যেভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে তাতে ধারণা করা যায় যে, বিপুল ভোটে জয়ী দলটি ঠিকভাবে রাজ্য চালাতে পারছে না। 'সবকিছু দখলের' যে অপসংস্কৃতি সিপিএমের শাসনামলে ছিল, তৃণমূল ঠিক সেটাই অনুসরণ করছে। রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল এবং অবশ্য তা হতে হবে ভালোর দিকে। কিন্তু সেটা ঘটেনি বলে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সিপিএম এবং তার মিত্ররাও বড়গলায় বলতে পারছে_ '...বলছিলাম না, মমতা কিছুই দিতে পারবেন না।' মমতা ব্যানার্জির 'ওয়ান ম্যান (নাকি ওম্যান!) শো চলছে রাজ্যে এবং সেটাও সহজে ধরা পড়ছে। তিনি গণমাধ্যমের সমর্থন আগের মতো পাচ্ছেন না। তার কিংবা সরকারের যেখানে ভুল হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনার তীর ছুটে আসছে। তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ছে। এক মহিলা ধর্ষিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, 'বানোয়াট'। কিন্তু পরে দেখা গেল যে ঘটনা সঠিক। যে বিরোধীদের তিনি 'চিরতরে বিদায়' করে দিয়েছিলেন বলে ভেবেছিলেন, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখে এখন তির্যক মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিষয়টিকে ভালোভাবে গ্রহণ করছে না।
তবে মমতা ব্যানার্জির জন্য দুঃসময় শুরু হয়েছে_ এটা কেউই মনে করে না। তার যথেষ্ট জনসমর্থন রয়েছে। সমাবেশগুলোতে প্রচুর জনসমাবেশ ঘটছে। তার প্রতি আস্থা রাখতে পারে_ এমন মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু যেসব সংকেত মিলছে, সেসবের প্রতি যদি গুরুত্ব না দেন, তবে ভোটের সময় এলে 'খবর আছে'। স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা ছাড়াও ছাত্র সংসদসহ অনেক ধরনের ভোটে এখন সরকারকে নিয়মিত পরীক্ষা দিতে হয়।
আনন্দবাজারের 'চিরকুট' নামে একটি কলাম থেকে এসব উদ্ধৃতি নেওয়া হয়েছে। রোববার পাঠকদের এসব ছোট কিন্তু তির্যক মন্তব্য প্রকাশ করে কলকাতা থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি। আট মাস আগে ওই রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম জোটকে হারিয়ে দেয়। বাম জোট হাতেগোনা কয়েকটি আসন পাওয়ায় আপাতত 'রাজনৈতিক নির্বাসনেই' থাকতে হবে বলে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ধারণা করেছিলেন। রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে লোকসভা নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেও তাদের পরাজয় ঘটেছিল। তাদের আপাতত মানুষের কাছে যাওয়ার মুখ থাকবে না_ এমন ধারণা অবশ্য নস্যাৎ হয়ে যায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি বড় জনসমাবেশ অনুষ্ঠানের পর। অনেকের কাছেই মনে হয়েছে, এ সমাবেশ ছিল তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক। আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল, 'উপচে পড়া ব্রিগেড দেখে সিপিএম খুশি'। এ দলটির দাবি, অল্প সময়ের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীদের 'মোহভঙ্গ' ঘটতে শুরু করেছে। এ দাবিরই সমর্থন মিলছে 'চিরকুট'-এর মন্তব্য থেকে_ এমন কথা কেউ বলতেই পারেন। কয়েক দিন আগে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার নির্বাচনী এলাকায় একদিনের নোটিশে একটি মিছিল করেছিলেন, যা আকারে ছিল যথেষ্ট বড়। তার পাল্টা হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস ওই এলাকায় পরদিন মিছিল করে এবং সেটা ফ্লপ করে। আনন্দবাজার লিখেছে, 'সিপিএম-এর পাল্টা মিছিলে সাড়া ফেলতে পারল না তৃণমূল। তাদের মিছিলে বহিরাগতরাই ছিল বেশি।' আনন্দবাজার নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়েছিল। এখন তারা যেভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে তাতে ধারণা করা যায় যে, বিপুল ভোটে জয়ী দলটি ঠিকভাবে রাজ্য চালাতে পারছে না। 'সবকিছু দখলের' যে অপসংস্কৃতি সিপিএমের শাসনামলে ছিল, তৃণমূল ঠিক সেটাই অনুসরণ করছে। রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল এবং অবশ্য তা হতে হবে ভালোর দিকে। কিন্তু সেটা ঘটেনি বলে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সিপিএম এবং তার মিত্ররাও বড়গলায় বলতে পারছে_ '...বলছিলাম না, মমতা কিছুই দিতে পারবেন না।' মমতা ব্যানার্জির 'ওয়ান ম্যান (নাকি ওম্যান!) শো চলছে রাজ্যে এবং সেটাও সহজে ধরা পড়ছে। তিনি গণমাধ্যমের সমর্থন আগের মতো পাচ্ছেন না। তার কিংবা সরকারের যেখানে ভুল হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সমালোচনার তীর ছুটে আসছে। তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ছে। এক মহিলা ধর্ষিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, 'বানোয়াট'। কিন্তু পরে দেখা গেল যে ঘটনা সঠিক। যে বিরোধীদের তিনি 'চিরতরে বিদায়' করে দিয়েছিলেন বলে ভেবেছিলেন, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা দেখে এখন তির্যক মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিষয়টিকে ভালোভাবে গ্রহণ করছে না।
তবে মমতা ব্যানার্জির জন্য দুঃসময় শুরু হয়েছে_ এটা কেউই মনে করে না। তার যথেষ্ট জনসমর্থন রয়েছে। সমাবেশগুলোতে প্রচুর জনসমাবেশ ঘটছে। তার প্রতি আস্থা রাখতে পারে_ এমন মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু যেসব সংকেত মিলছে, সেসবের প্রতি যদি গুরুত্ব না দেন, তবে ভোটের সময় এলে 'খবর আছে'। স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা ছাড়াও ছাত্র সংসদসহ অনেক ধরনের ভোটে এখন সরকারকে নিয়মিত পরীক্ষা দিতে হয়।
No comments