খেলাপি ও চুক্তিভঙ্গের পুরস্কার আরও দুটি প্রকল্প!-ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
বিদ্যুৎ-সংকটের সমাধান যেন বাঁদরের তৈলাক্ত লাঠি বেয়ে ওঠা-নামার ইতিহাস। অনেক সময় যাকে সমাধান ভাবা হয়, দেখা যায় তা বরং সমস্যাকে আরও স্থায়ী করে। সরকার বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে বাণিজ্যিক ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পথ নিয়েছিল। এতে সময় লাগার কথা ছিল তিন থেকে নয় মাস।
অথচ কার্যক্রম শুরুর এক বছর পার হয়ে গেলেও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়নি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার, এ ধরনেরই একটি খেলাপি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন আরও দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কুইক রেন্টাল বলে পরিচিত বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রমাণিত ব্যর্থ ও চুক্তি লঙ্ঘনকারী কোম্পানিকে আবারও একই ব্যর্থতার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার সুযোগ কেন দেওয়া হচ্ছে?
যে কোম্পানি আট মাসের জায়গায় ১৩ মাসেও ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যর্থ, কীভাবে আরও ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের দায়িত্ব তাদের দেওয়া যায়? পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড নামের ওই কোম্পানিটি কেরানীগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি করে গত বছরের ৮ জুলাই। এ বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে তা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। এরপর আরও এক মাস সময় তাদের দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যথারীতি ব্যর্থতার নজির স্থাপন করে চলে। উপরন্তু বিলম্বের জন্য চুক্তিমাফিক যে জরিমানা দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয়নি। অথচ অটবির প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দেরির জন্য চুক্তি অনুসারে ঠিকই ৬৩ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক পক্ষপাতই এক যাত্রায় দুই ফল হওয়ার কারণ।
সরকার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে মাত্র ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য খরচ করবে ছয় থেকে আট হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত করলে মিলত এক হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং তাতে খরচ হতো মাত্র এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদ্যুতের দামও হতো ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম। এসব বিচারে কুইক রেন্টাল পদ্ধতি কুইক বা দ্রুততর তো নয়ই, উপরন্তু এটা আসলে বিরাট অপচয়ের খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত দুই দশকে সরকারিভাবে নিজস্ব অর্থে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি, অথচ কেবল খুঁটি পুঁতেই শত শত কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) কোনো বিনিয়োগকারী সংস্থা বিদ্যুৎ খাতে দীর্ঘদিন কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়নি; বরং তাদের আরোপিত শর্ত এ খাতের বিকাশে বাধা হয়েছে। এদিকে সংস্কারের অভাবে সরকারিভাবে স্থাপিত বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতাও কমছে।
নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সদিচ্ছা ও পরিকল্পনার ব্যাপার। বিদ্যুৎ বা গ্যাস সরবরাহে চুক্তিভঙ্গকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া চলবে না। সর্বোপরি, অবিলম্বে পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত ও নবায়ন করতে হবে। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিজস্বভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে এবং তাদের উৎপাদিত বিদ্যুতের বাড়তি অংশ জাতীয় গ্রিডে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে।
যে কোম্পানি আট মাসের জায়গায় ১৩ মাসেও ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যর্থ, কীভাবে আরও ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের দায়িত্ব তাদের দেওয়া যায়? পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড নামের ওই কোম্পানিটি কেরানীগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি করে গত বছরের ৮ জুলাই। এ বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে তা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। এরপর আরও এক মাস সময় তাদের দেওয়া হয়। কিন্তু তারা যথারীতি ব্যর্থতার নজির স্থাপন করে চলে। উপরন্তু বিলম্বের জন্য চুক্তিমাফিক যে জরিমানা দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয়নি। অথচ অটবির প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দেরির জন্য চুক্তি অনুসারে ঠিকই ৬৩ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক পক্ষপাতই এক যাত্রায় দুই ফল হওয়ার কারণ।
সরকার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে মাত্র ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য খরচ করবে ছয় থেকে আট হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত করলে মিলত এক হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং তাতে খরচ হতো মাত্র এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদ্যুতের দামও হতো ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম। এসব বিচারে কুইক রেন্টাল পদ্ধতি কুইক বা দ্রুততর তো নয়ই, উপরন্তু এটা আসলে বিরাট অপচয়ের খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত দুই দশকে সরকারিভাবে নিজস্ব অর্থে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়নি, অথচ কেবল খুঁটি পুঁতেই শত শত কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) কোনো বিনিয়োগকারী সংস্থা বিদ্যুৎ খাতে দীর্ঘদিন কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়নি; বরং তাদের আরোপিত শর্ত এ খাতের বিকাশে বাধা হয়েছে। এদিকে সংস্কারের অভাবে সরকারিভাবে স্থাপিত বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতাও কমছে।
নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সদিচ্ছা ও পরিকল্পনার ব্যাপার। বিদ্যুৎ বা গ্যাস সরবরাহে চুক্তিভঙ্গকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া চলবে না। সর্বোপরি, অবিলম্বে পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত ও নবায়ন করতে হবে। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিজস্বভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে এবং তাদের উৎপাদিত বিদ্যুতের বাড়তি অংশ জাতীয় গ্রিডে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে।
No comments