বায়তুল মুকাদ্দাসের পবিত্রতা by জাকির হুসাইন

সূরা মায়েদার ২১নং আয়াতে বায়তুল মুকাদ্দাসকে পবিত্র ভূমি বলে উলেল্গখ করা হয়েছে এর নাম উলেল্গখ না করেই; কিন্তু সূরা বনী ইসরাইলে অধিকতর সুস্পষ্টভাবে এ ভূখণ্ডকে নির্দেশ করা হয়েছে এবং এর পবিত্রতা বা বিশেষ মর্যাদার কথা উলেল্গখ করা হয়েছে।


বায়তুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের প্রথম কেবলা। পরে কেবলা হিসাবে কাবা গৃহে নির্ধারিত হলেও মুসলমানদের দৃষ্টিতে বায়তুল মুকাদ্দাসের পবিত্রতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে। কেননা পবিত্র ভূমির পবিত্রতা একটি চিরন্তন ব্যাপার। এ সঙ্গে কেবলার কোনো সম্পর্ক নেই। দুটি পবিত্র ভূমির মধ্যে একটিই কেবলা হওয়া সম্ভব; উভয়টি নয়। অতএব কেবলা না থাকার কারণে পবিত্র স্থান হিসেবে এ ভূখণ্ডের সঙ্গে মুসলমানদের আত্মিক সম্পর্কের কোনো অবনতি ঘটা সম্ভব নয়। ঠিক যেমন পবিত্র মদিনা মুনাওয়ার ও মুসলমানদের কেবলা নয়, কিন্তু তার সঙ্গে মুসলমানদের আত্মিক সম্পর্কের কোনো রূপ ঘাটতি দেখা দিতে পারে না। তাছাড়া প্রাচ্যবিদরাও স্বীকার করেছেন যে, কাবার পূর্বে বায়তুল মুকাদ্দাসের কেবলারূপে পরিগণিত হওয়ার বিষয়টি সন্দেহাতীত। এমতাবস্থায় মিরাজের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ভ্রমণের জন্য যদি কোনো ইবাদত কেন্দ্রকে মধ্যবর্তী স্টেশনরূপে বেছে নিতে হয়, সেক্ষেত্রে কেবলাকে রেখে অন্য কোনো ইবাদত কেন্দ্রকে বেছে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আর যদি এরূপ অন্য কোনো পবিত্র স্থান অন্য কোথাও থাকত এবং তাকে মিরাজের মধ্যবর্তী স্টেশনরূপে গণ্য করা হতো, তাহলে রাসূলে আকরাম (সা.) অবশ্যই তার অবস্থান ও পরিচিতি সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামকে (রা.) অবহিত করতেন। এ মর্মে একটি হাদিসও পাওয়া যাবে না। এটা সুস্পষ্ট যে, সূরা বনি ইসরাইল নাজেলের সময় সাহাবায়ে কেরামের কাছে মসজিদুল আকসা নামটি অপরিচিত ছিল না। বরং তারা জানতেন যে, মসজিদুল আকসা বা দূরতম মসজিদ হচ্ছে সেটা যে কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। বিভিন্ন ঘটনার প্রবাহের মধ্য দিয়ে সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে ইসরাইল পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে নেয়। পরে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
 

No comments

Powered by Blogger.