ঘণ্টায় ৩০ রোগী ভর্তি আইসিডিডিআরবিতে-রাজধানী ও আশপাশে ডায়রিয়ার প্রকোপ by শিশির মোড়ল
রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মহাখালীর কলেরা হাসপাতালে দুই-তিন দিন ধরে ঘণ্টায় ৩০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হঠাৎ গরম পড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
গত শনিবার এই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টায় ৮০৫ জন রোগী ভর্তি হয়। রোববার এই সংখ্যা ছিল ৭০৫ জন। গতকাল সোমবার বিকেল চারটা পর্যন্ত ভর্তি হয় ৪৯৪ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ভর্তি হওয়া রোগীদের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ‘তীব্র ডায়রিয়ার’ অর্থাৎ কলেরার রোগী।
হাসপাতালের শর্ট স্টে ইউনিটের প্রধান আজহারুল ইসলাম খান বলেন, ‘হঠাৎ গরম পড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অনিরাপদ পানি ও বাসি খাবার এর জন্য দায়ী।’
গতকাল বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ি, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, রিকশার ভিড় হাসপাতালের ফটকে। রোগীদের স্থান সংকুলানের জন্য ফটক পর্যন্ত বিশাল তাঁবু টানানো হয়েছে। রোগী নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘণ্টায় ৩০ জনের বেশি রোগীর নাম, ঠিকানাসহ নানা তথ্য লিখতে হিমশিম খাচ্ছেন। যেসব রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ, তাদের নিবন্ধন ছাড়াই সরাসরি শয্যায় নিয়ে শিরায় স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
বিকেল চারটার দিকে গোলাপবাগ থেকে ১০ মাসের সোহরাবকে নিয়ে ভর্তির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তার মা। বললেন, ‘বাচ্চাটা পাঁচ-ছয়বার পাতলা পায়খানা করছে, বমি করছে। তাই নিয়া আসছি।’ নানা বয়সের রোগী এলেও শিশুর সংখ্যাই বেশি দেখা গেল।
আজহারুল ইসলাম খান জানান, রাজধানীর বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, তেজগাঁও ও গাজীপুরের টঙ্গী থেকে বেশি রোগী আসছে। রোগীদের ৮০ শতাংশ ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে চলে যায়। এখানে বিনা মূল্যে চিকিৎসা করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষ বাড়লেও সেই অনুপাতে নিরাপদ পানির সরবরাহ নেই। গরম পড়ায় এবং লোডশেডিং বেশি হওয়ায় খাবার দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় মানুষ পানি ফোটাতে পারে না। ডায়রিয়ার প্রকোপের এসবই কারণ।
আইসিডিডিআরবির উপনির্বাহী পরিচালক আব্বাস ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা তৈরি আছি।’
জানা গেছে, একসঙ্গে দুই হাজার রোগীর চিকিৎসার প্রস্তুতি কলেরা হাসপাতালের আছে। গত কয়েক দিনে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ৩০ জন নার্স, আটজন পোর্টার (যাঁরা রোগী ট্রলিতে করে নিয়ে যান), ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ছয়জন চিকিৎসক মূল দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। স্যালাইন তৈরির স্থানও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী ও টঙ্গীতে তিনটি ডায়রিয়া চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এসব কেন্দ্রে কারিগরি সহায়তা ও সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে আইসিডিডিআরবি। আইসিডিডিআরবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব এলাকা থেকে রোগী আসতে অনেক সময় লাগে। রোগী যেন পথে মারা না যায়, সে জন্য এসব এলাকায়ই চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার কথা ভাবা হচ্ছে।’ গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, মিরপুর থেকে বেশি রোগী আসত। মিরপুরে সরকারের সহায়তায় ২০০৯ সালে কেন্দ্র খুলেছে আইসিডিডিআরবি। এর পর থেকে ওই এলাকা থেকে মহাখালীতে রোগীর চাপ কমেছে।
করণীয়: এ ধরনের পরিস্থিতিতে নাগরিকের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশিষ্ট পুষ্টি বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, ফোটানো পানি পান করতে হবে। থালা-বাসন ও হাত-মুখ ধোয়ার পানিও সমান বিশুদ্ধ হতে হবে। হাত না ধুয়ে খাওয়া যাবে না। হোটেল, পান ও চায়ের দোকানে নোংরা পানি ব্যবহার করা হয়, এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। তিনি বলেন, দুধ আছে এমন খাবার সহজে নষ্ট হয়। শিশুকে মায়ের দুধই খাওয়াতে হবে। এই সময় ঘরে কয়েক প্যাকেট স্যালাইন রাখা ভালো।
এ অবস্থায় সরকারের করণীয় সম্পর্কে এস কে রায় বলেন, সরকার চট করে সবাইকে নিরাপদ পানি দিতে পারবে না। কিন্তু তথ্য দিতে পারবে। ডায়রিয়া থেকে দূরে থাকার উপায় সরকার টিভি ও রেডিওতে এ সময় বারবার প্রচার করতে পারে। স্যালাইন তৈরির পদ্ধতিও গণমাধ্যমে প্রচার করতে পারে।
হাসপাতালের শর্ট স্টে ইউনিটের প্রধান আজহারুল ইসলাম খান বলেন, ‘হঠাৎ গরম পড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অনিরাপদ পানি ও বাসি খাবার এর জন্য দায়ী।’
গতকাল বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ি, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, রিকশার ভিড় হাসপাতালের ফটকে। রোগীদের স্থান সংকুলানের জন্য ফটক পর্যন্ত বিশাল তাঁবু টানানো হয়েছে। রোগী নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘণ্টায় ৩০ জনের বেশি রোগীর নাম, ঠিকানাসহ নানা তথ্য লিখতে হিমশিম খাচ্ছেন। যেসব রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ, তাদের নিবন্ধন ছাড়াই সরাসরি শয্যায় নিয়ে শিরায় স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
বিকেল চারটার দিকে গোলাপবাগ থেকে ১০ মাসের সোহরাবকে নিয়ে ভর্তির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তার মা। বললেন, ‘বাচ্চাটা পাঁচ-ছয়বার পাতলা পায়খানা করছে, বমি করছে। তাই নিয়া আসছি।’ নানা বয়সের রোগী এলেও শিশুর সংখ্যাই বেশি দেখা গেল।
আজহারুল ইসলাম খান জানান, রাজধানীর বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, তেজগাঁও ও গাজীপুরের টঙ্গী থেকে বেশি রোগী আসছে। রোগীদের ৮০ শতাংশ ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে চলে যায়। এখানে বিনা মূল্যে চিকিৎসা করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষ বাড়লেও সেই অনুপাতে নিরাপদ পানির সরবরাহ নেই। গরম পড়ায় এবং লোডশেডিং বেশি হওয়ায় খাবার দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় মানুষ পানি ফোটাতে পারে না। ডায়রিয়ার প্রকোপের এসবই কারণ।
আইসিডিডিআরবির উপনির্বাহী পরিচালক আব্বাস ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা তৈরি আছি।’
জানা গেছে, একসঙ্গে দুই হাজার রোগীর চিকিৎসার প্রস্তুতি কলেরা হাসপাতালের আছে। গত কয়েক দিনে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ৩০ জন নার্স, আটজন পোর্টার (যাঁরা রোগী ট্রলিতে করে নিয়ে যান), ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ছয়জন চিকিৎসক মূল দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। স্যালাইন তৈরির স্থানও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী ও টঙ্গীতে তিনটি ডায়রিয়া চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। এসব কেন্দ্রে কারিগরি সহায়তা ও সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে আইসিডিডিআরবি। আইসিডিডিআরবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব এলাকা থেকে রোগী আসতে অনেক সময় লাগে। রোগী যেন পথে মারা না যায়, সে জন্য এসব এলাকায়ই চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার কথা ভাবা হচ্ছে।’ গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, মিরপুর থেকে বেশি রোগী আসত। মিরপুরে সরকারের সহায়তায় ২০০৯ সালে কেন্দ্র খুলেছে আইসিডিডিআরবি। এর পর থেকে ওই এলাকা থেকে মহাখালীতে রোগীর চাপ কমেছে।
করণীয়: এ ধরনের পরিস্থিতিতে নাগরিকের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশিষ্ট পুষ্টি বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস কে রায় প্রথম আলোকে বলেন, ফোটানো পানি পান করতে হবে। থালা-বাসন ও হাত-মুখ ধোয়ার পানিও সমান বিশুদ্ধ হতে হবে। হাত না ধুয়ে খাওয়া যাবে না। হোটেল, পান ও চায়ের দোকানে নোংরা পানি ব্যবহার করা হয়, এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। তিনি বলেন, দুধ আছে এমন খাবার সহজে নষ্ট হয়। শিশুকে মায়ের দুধই খাওয়াতে হবে। এই সময় ঘরে কয়েক প্যাকেট স্যালাইন রাখা ভালো।
এ অবস্থায় সরকারের করণীয় সম্পর্কে এস কে রায় বলেন, সরকার চট করে সবাইকে নিরাপদ পানি দিতে পারবে না। কিন্তু তথ্য দিতে পারবে। ডায়রিয়া থেকে দূরে থাকার উপায় সরকার টিভি ও রেডিওতে এ সময় বারবার প্রচার করতে পারে। স্যালাইন তৈরির পদ্ধতিও গণমাধ্যমে প্রচার করতে পারে।
No comments