ধর্ম-মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
সৃষ্টির সেরা ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ তথা মানবজাতির জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণকে কেন্দ্র করেই জীবনঘনিষ্ঠ ধর্ম ইসলামের সবকিছু আবর্তিত। আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টির পর তাকে জ্ঞানের বদৌলতে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং মানুষের ভেতর থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। পৃথিবীতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ও জীবন
পরিচালনার জন্য যেসব প্রয়োজনীয় বিষয়ে আধুনিক জ্ঞান থাকা দরকার, সেগুলো আয়ত্তের ব্যাপারে ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বিশ্বমানবতার কল্যাণে সেসব জ্ঞান-বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা থেকে অতল সাগরের তলদেশ পর্যন্ত হোক না কেন, ইসলাম সর্বদাই সমাজজীবনে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কর্মধারাকে উৎসাহিত করেছে ও বিপুলভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা সৎ কর্মে পরস্পর প্রতিযোগিতা করো।’ (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ৪৮)
মানবজীবনে বিভিন্ন দিকদর্শন আছে, যেগুলো মানবসৃষ্ট জ্ঞান দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয়। মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বস্তুগত, জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক প্রভৃতি বিভিন্ন দিক রয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ বিভিন্ন জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির দাপটে মাটির তৈরি মানুষ মহাকাশ থেকে শুরু করে সমুদ্রের তলদেশেও প্রবেশ করেছে। তাই মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের পাশাপাশি যান্ত্রিক তথা প্রযুক্তিগত জ্ঞানার্জন একই সঙ্গে অত্যাবশ্যক। একবিংশ শতকে পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী করতে হলে এবং ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণীকে দুনিয়ার সব মানুষের কাছে সহজে প্রচার, প্রসার ও পৌঁছাতে হলে, এমনকি ইসলামের উত্তরণ দেখতে হলে মুসলমানদের বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তির জ্ঞান আয়ত্ত করতে হবে। বান্দার প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় নিয়ামত হলো তিনি তাকে বিদ্যা-বুদ্ধি শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। পবিত্র কোরআন হলো জ্ঞান-বিজ্ঞানের সুউচ্চ মিনার, মানুষের জীবন চলার পাথেয়। জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম। তাই তো দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জনের জন্য তাগিদ দিয়ে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর বিদ্যা অর্জন ফরজ।’ (ইবনে মাজা)
তবে কেউ যদি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য অকল্যাণকর কোনো কাজ করে কিংবা জনগণের সঙ্গে ধোঁকা-প্রতারণা ও অনৈতিকতার আশ্রয় নেয়, ইসলাম সে ক্ষেত্রে কঠোর বিধান আরোপ করেছে। পবিত্র কোরআনে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে, ‘কেউ কোনো সৎ কাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে এবং কেউ কোনো অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিফল দেওয়া হবে।’ (সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১৬০) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ এবং তাদের হীনতা আচ্ছন্ন করবে, আল্লাহ হতে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত: ২৭)
বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগের উন্নতি ও অগ্রগতিতে কম্পিউটার একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রচলনের ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যের ক্ষেত্রে এক বিরাট বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বর্তমান অবাধ তথ্যপ্রবাহের জন্য কম্পিউটার একটি অত্যন্ত জরুরি এবং কার্যকর উপাদান। আধুনিক সমাজনীতিতে ব্যবহূত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কৃত প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার তথ্যপ্রযুক্তিকে গ্লোবাল ভিলেজ এবং ডিজিটাল বিশ্বে পরিণত করেছে। কম্পিউটার বিজ্ঞানের অমূল্য দান। ধর্মপ্রাণ মানুষ এটা ভালো কাজে ব্যবহার করতে পারে এবং আবার কেউ ধর্ম-কর্ম ভুলে খারাপ কাজেও ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু কম্পিউটারের তো কোনো দোষ নেই। কম্পিউটার মানুষের তৈরি মানুষের উপকারের একটি অন্যতম যন্ত্র। বর্তমানে কম্পিউটারের অবদান প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরাজমান। দেশের বেকারত্ব দূরীকরণসহ সব কাজের জন্য আজকাল কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মক্তব বা মসজিদ চত্বরে যদি সুলভে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে সবাই অনেক লাভবান হবে।
আজকের পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাবের আদান-প্রদান করে থাকে। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষাবিষয়ক নানা তথ্য অনায়াসেই জানতে পারছে। সর্বোপরি মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে, যা সত্যিই জনকল্যাণকর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজ্ঞানের এ বিস্ময়কর আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসার নামে চরম ধোঁকাবাজি ও প্রতারণার বিশাল ফাঁদ পেতে বসেছে। আর দেশের অপরিণামদর্শী তরুণ ও বেকার যুবসমাজ সেই ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের মহামূল্যবান সময় অযথা নষ্ট করছে। প্রতারক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ও পর্নো ছবির সাইটগুলো তাদের সামনে লোভনীয় আকারে তুলে দিচ্ছে। নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে দেশের তরুণ যুবসমাজ। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
ইন্টারনেটসহ নানা ধরনের তথ্য ও প্রযুক্তির বহুমাত্রিক সুফলের পরিবর্তে আজকাল একশ্রেণীর ধোঁকাবাজ প্রতারকের কারণে দেশের মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না। তাই মানুষের দোরগোড়ায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার নানা কার্যক্রম ভেস্তে যাচ্ছে। এভাবেই সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত ধোঁকাবাজি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্যতম প্রতারণা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কূট ষড়যন্ত্র তার উদ্যোক্তাদেরই পরিবেষ্টন করে।’ (সূরা আল-ফাতির, আয়াত: ৪৩) বিভিন্ন রকমের অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে সবাইকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য হোক বা গোপন হোক, অশ্লীল আচরণের ধারেকাছেও যাবে না।’ (সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১৫১) আর প্রতারক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে নবী করিম (সা.) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘মিথ্যাবাদী প্রতারক ব্যবসায়ীরা হাশরের দিন বদকারদের দলে থাকবে।’ (তিরমিযি)
তাই ধর্মপ্রাণ জনগণের সার্বিক কল্যাণে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির প্রকৃত সুফল পেতে হলে প্রয়োজন সবার ঐকান্তিক ও সামগ্রিক প্রচেষ্টা। এর জন্য প্রয়োজনে মানবকল্যাণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট আইনকানুন ও নীতিমালা প্রণয়নের কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ বাঞ্ছনীয়।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
মানবজীবনে বিভিন্ন দিকদর্শন আছে, যেগুলো মানবসৃষ্ট জ্ঞান দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয়। মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বস্তুগত, জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক প্রভৃতি বিভিন্ন দিক রয়েছে। একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ বিভিন্ন জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির দাপটে মাটির তৈরি মানুষ মহাকাশ থেকে শুরু করে সমুদ্রের তলদেশেও প্রবেশ করেছে। তাই মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের পাশাপাশি যান্ত্রিক তথা প্রযুক্তিগত জ্ঞানার্জন একই সঙ্গে অত্যাবশ্যক। একবিংশ শতকে পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী করতে হলে এবং ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণীকে দুনিয়ার সব মানুষের কাছে সহজে প্রচার, প্রসার ও পৌঁছাতে হলে, এমনকি ইসলামের উত্তরণ দেখতে হলে মুসলমানদের বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তির জ্ঞান আয়ত্ত করতে হবে। বান্দার প্রতি আল্লাহর সবচেয়ে বড় নিয়ামত হলো তিনি তাকে বিদ্যা-বুদ্ধি শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। পবিত্র কোরআন হলো জ্ঞান-বিজ্ঞানের সুউচ্চ মিনার, মানুষের জীবন চলার পাথেয়। জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম। তাই তো দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জনের জন্য তাগিদ দিয়ে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর বিদ্যা অর্জন ফরজ।’ (ইবনে মাজা)
তবে কেউ যদি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য অকল্যাণকর কোনো কাজ করে কিংবা জনগণের সঙ্গে ধোঁকা-প্রতারণা ও অনৈতিকতার আশ্রয় নেয়, ইসলাম সে ক্ষেত্রে কঠোর বিধান আরোপ করেছে। পবিত্র কোরআনে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে, ‘কেউ কোনো সৎ কাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে এবং কেউ কোনো অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু তারই প্রতিফল দেওয়া হবে।’ (সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১৬০) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ এবং তাদের হীনতা আচ্ছন্ন করবে, আল্লাহ হতে তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত: ২৭)
বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগের উন্নতি ও অগ্রগতিতে কম্পিউটার একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রচলনের ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যের ক্ষেত্রে এক বিরাট বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বর্তমান অবাধ তথ্যপ্রবাহের জন্য কম্পিউটার একটি অত্যন্ত জরুরি এবং কার্যকর উপাদান। আধুনিক সমাজনীতিতে ব্যবহূত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কৃত প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার তথ্যপ্রযুক্তিকে গ্লোবাল ভিলেজ এবং ডিজিটাল বিশ্বে পরিণত করেছে। কম্পিউটার বিজ্ঞানের অমূল্য দান। ধর্মপ্রাণ মানুষ এটা ভালো কাজে ব্যবহার করতে পারে এবং আবার কেউ ধর্ম-কর্ম ভুলে খারাপ কাজেও ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু কম্পিউটারের তো কোনো দোষ নেই। কম্পিউটার মানুষের তৈরি মানুষের উপকারের একটি অন্যতম যন্ত্র। বর্তমানে কম্পিউটারের অবদান প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরাজমান। দেশের বেকারত্ব দূরীকরণসহ সব কাজের জন্য আজকাল কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মক্তব বা মসজিদ চত্বরে যদি সুলভে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে সবাই অনেক লাভবান হবে।
আজকের পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাবের আদান-প্রদান করে থাকে। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষাবিষয়ক নানা তথ্য অনায়াসেই জানতে পারছে। সর্বোপরি মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে, যা সত্যিই জনকল্যাণকর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজ্ঞানের এ বিস্ময়কর আবিষ্কারকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসার নামে চরম ধোঁকাবাজি ও প্রতারণার বিশাল ফাঁদ পেতে বসেছে। আর দেশের অপরিণামদর্শী তরুণ ও বেকার যুবসমাজ সেই ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের মহামূল্যবান সময় অযথা নষ্ট করছে। প্রতারক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ও পর্নো ছবির সাইটগুলো তাদের সামনে লোভনীয় আকারে তুলে দিচ্ছে। নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার হচ্ছে দেশের তরুণ যুবসমাজ। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
ইন্টারনেটসহ নানা ধরনের তথ্য ও প্রযুক্তির বহুমাত্রিক সুফলের পরিবর্তে আজকাল একশ্রেণীর ধোঁকাবাজ প্রতারকের কারণে দেশের মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না। তাই মানুষের দোরগোড়ায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার নানা কার্যক্রম ভেস্তে যাচ্ছে। এভাবেই সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত ধোঁকাবাজি ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্যতম প্রতারণা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কূট ষড়যন্ত্র তার উদ্যোক্তাদেরই পরিবেষ্টন করে।’ (সূরা আল-ফাতির, আয়াত: ৪৩) বিভিন্ন রকমের অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে সবাইকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য হোক বা গোপন হোক, অশ্লীল আচরণের ধারেকাছেও যাবে না।’ (সূরা আল-আনআম, আয়াত: ১৫১) আর প্রতারক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে নবী করিম (সা.) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘মিথ্যাবাদী প্রতারক ব্যবসায়ীরা হাশরের দিন বদকারদের দলে থাকবে।’ (তিরমিযি)
তাই ধর্মপ্রাণ জনগণের সার্বিক কল্যাণে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির প্রকৃত সুফল পেতে হলে প্রয়োজন সবার ঐকান্তিক ও সামগ্রিক প্রচেষ্টা। এর জন্য প্রয়োজনে মানবকল্যাণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট আইনকানুন ও নীতিমালা প্রণয়নের কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ বাঞ্ছনীয়।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
No comments