পুঁজিবাজারের বিভিন্ন সূচক ফিরে যাচ্ছে কয়েক বছর আগের স্থানে
শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটে চলেছে। গতকাল রোববার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। দিনের শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক প্রায় ৬ শতাংশ বা ২২৯ পয়েন্ট কমেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক কমেছে পাঁচ শতাংশ বা ৫৬৯ পয়েন্ট।
বাজারের এই ব্যাপক দরপতনে মূল্য-আয় অনুপাতের (পিই রেশিও) বিবেচনায় ২০০৪ সালের এপ্রিলের অবস্থানে ফিরে গেছে প্রধান শেয়ারবাজার। ২০০৪ সালের এপ্রিল শেষে ডিএসইতে শেয়ারের গড় মূল্য-আয় অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ২৩। আর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেষে গতকাল সেটি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩-এ।
এ ছাড়া সাধারণ সূচকের বিবেচনায় ২০০৯ সালের নভেম্বরের প্রথমার্ধের অবস্থানে ফিরে গেছে ডিএসই। ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ছিল তিন হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বরে দেশের শেয়ারবাজারে টেলিকম খাতের একমাত্র কোম্পানি হিসেবে গ্রামীণফোন তালিকাভুক্ত হয়। আর ওই দিনই ডিএসইর সূচক বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ১৪৮ পয়েন্টে। এরপর থেকে চলতি মাসের আগ পর্যন্ত ডিএসইর সূচক কখনোই চার হাজার পয়েন্টের নিচে নামেনি। গতকাল রোববার ডিএসইর সাধারণ সূচক আরও কমে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৬১৬ পয়েন্টে।
যদিও ২০০৪ ও ২০০৯ সালের তুলনায় বাজারের নতুন কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা অনেক বেড়েছে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে যা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। কেন এমনটি হচ্ছে তাও বলা মুশকিল। তাই আমি মনে করি, বাজার ঘিরে কোনো ধরনের চক্রান্ত বা কারসাজির ঘটনা ঘটছে কি না, সেটি এসইসিকে ভালোভাবে খতিয়ে দেখা দরকার।’
মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘এ অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ না বাড়লে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা আর বিনিয়োগের সাহস পাবেন না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছু তারল্যসংকট আছে এ কথা ঠিক। রাইট শেয়ার ইস্যু বা বিকল্প পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো সেই সংকট কিছুটা হলেও দূর করতে পারে।’
মির্জ্জা আজিজের মতে, বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু নীতি-সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে যেসব ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমনকি বিমা কোম্পানির মালিকেরাও শেয়ারবাজারে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন, সেটিও হচ্ছে না।
বিক্ষোভ-প্রচেষ্টা: দরপতনের একপর্যায়ে গতকাল বেলা দেড়টার দিকে একদল বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলের ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তা পণ্ড করে দেয়। পরে সেখান থেকে পুলিশ বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমানসহ আরও কয়েকজনকে আটক করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকেরা খবর সংগ্রহের চেষ্টা করলে সাদা পোশাকধারী নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এর প্রতিবাদে উপস্থিত সাংবাদিকেরা ডিএসই ভবনের সামনের সড়কে বেশকিছু সময় অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এ সময় ওই সড়কে যান-চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় সাংবাদিকেরা তাঁদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
বাজার পরিস্থিতি: গতকাল ডিএসইতে ২৫৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ বা ২৪৭টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র নয়টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটি কোম্পানি শেয়ারের দাম। দিন শেষে ঢাকার বাজারে প্রায় ২১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ৪৩ কোটি টাকা বেশি।
চট্টগ্রামের বাজারের সার্বিক মূল্যসূচক গতকাল দিন শেষে নেমে এসেছে প্রায় ১০ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে। সিএসইতে এই দিন ১৮৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ বা ১৮৩টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে কেবল দুটির দাম। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা বেশি।
এ ছাড়া সাধারণ সূচকের বিবেচনায় ২০০৯ সালের নভেম্বরের প্রথমার্ধের অবস্থানে ফিরে গেছে ডিএসই। ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ছিল তিন হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে। ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বরে দেশের শেয়ারবাজারে টেলিকম খাতের একমাত্র কোম্পানি হিসেবে গ্রামীণফোন তালিকাভুক্ত হয়। আর ওই দিনই ডিএসইর সূচক বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ১৪৮ পয়েন্টে। এরপর থেকে চলতি মাসের আগ পর্যন্ত ডিএসইর সূচক কখনোই চার হাজার পয়েন্টের নিচে নামেনি। গতকাল রোববার ডিএসইর সাধারণ সূচক আরও কমে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৬১৬ পয়েন্টে।
যদিও ২০০৪ ও ২০০৯ সালের তুলনায় বাজারের নতুন কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা অনেক বেড়েছে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে যা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। কেন এমনটি হচ্ছে তাও বলা মুশকিল। তাই আমি মনে করি, বাজার ঘিরে কোনো ধরনের চক্রান্ত বা কারসাজির ঘটনা ঘটছে কি না, সেটি এসইসিকে ভালোভাবে খতিয়ে দেখা দরকার।’
মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘এ অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ না বাড়লে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা আর বিনিয়োগের সাহস পাবেন না। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছু তারল্যসংকট আছে এ কথা ঠিক। রাইট শেয়ার ইস্যু বা বিকল্প পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো সেই সংকট কিছুটা হলেও দূর করতে পারে।’
মির্জ্জা আজিজের মতে, বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু নীতি-সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে যেসব ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এমনকি বিমা কোম্পানির মালিকেরাও শেয়ারবাজারে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন, সেটিও হচ্ছে না।
বিক্ষোভ-প্রচেষ্টা: দরপতনের একপর্যায়ে গতকাল বেলা দেড়টার দিকে একদল বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলের ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তা পণ্ড করে দেয়। পরে সেখান থেকে পুলিশ বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমানসহ আরও কয়েকজনকে আটক করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকেরা খবর সংগ্রহের চেষ্টা করলে সাদা পোশাকধারী নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এর প্রতিবাদে উপস্থিত সাংবাদিকেরা ডিএসই ভবনের সামনের সড়কে বেশকিছু সময় অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এ সময় ওই সড়কে যান-চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় সাংবাদিকেরা তাঁদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
বাজার পরিস্থিতি: গতকাল ডিএসইতে ২৫৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ বা ২৪৭টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র নয়টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটি কোম্পানি শেয়ারের দাম। দিন শেষে ঢাকার বাজারে প্রায় ২১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ৪৩ কোটি টাকা বেশি।
চট্টগ্রামের বাজারের সার্বিক মূল্যসূচক গতকাল দিন শেষে নেমে এসেছে প্রায় ১০ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে। সিএসইতে এই দিন ১৮৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ বা ১৮৩টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে কেবল দুটির দাম। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা বেশি।
No comments