সিরিয়ায় অর্থ ও অস্ত্রের জোগান বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার
সহিংসতায় জর্জরিত সিরিয়ায় অর্থায়ন ও দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিক্ষোভকারীদের ওপর সিরীয় সরকারের দমনাভিযানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীন ভেটো দেওয়ার পর ওয়াশিংটন এই অঙ্গীকার করল।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নিরাপত্তা বাহিনী গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীদের ওপর নৃশংস অভিযান যথারীতি অব্যাহত রেখেছে। গতকাল সোমবার সকালে হোমস শহরে এমনই এক অভিযানে নিহত হয়েছে অন্ততপক্ষে অর্ধশত লোক। দেশটির প্রধান সরকারবিরোধী গ্রুপ সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল এ কথা জানিয়েছে।
বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়াতে গত রোববার সাংবাদিকদের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রচেষ্টা চালাব। এ ছাড়া এই দুইয়ের মধ্যে যা আমাদের হাতে রয়েছে, সেটা যত দূর সম্ভব কঠোর করার ব্যবস্থা নেব।’ তিনি আরও বলেন, সিরিয়ার সরকারের যুদ্ধতৎপরতায় ভূমিকা রেখে যাওয়া অর্থের উৎস ও অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দিতে এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ও ডেমোক্রেটিক পার্টির সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো লিবারম্যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির চেয়েও আরেক ধাপ এগিয়ে সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা বিবেচনার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও চীন নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার চিন্তা থেকে যদি সরে না আসে, তবে সিরিয়ার বিরুদ্ধে কিছুই করার নেই—আমাদের এমন কথায় বিশ্ব সায় দেবে না।’ সিনেটর লিবারম্যান বলেন, ‘আর তাই আমরা কী করতে পারি, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করা উচিত, বিশেষত আরব লিগকে সঙ্গে নিয়ে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আরব লিগ এরই মধ্যে ফ্রি সিরিয়ান আর্মিকে (সিরিয়ার পক্ষত্যাগী সেনাদের দল) সমর্থন দেওয়া শুরু করেছে।’লিবারম্যান আরও বলেন, সিরীয় বিদ্রোহীদের চিকিৎসাসামগ্রী থেকে শুরু করে গোয়েন্দা ও শত্রুপক্ষের অবস্থানের ওপর কড়া নজরদারি-সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমিক সমর্থন দেওয়া যেতে পারে। এরপর স্বাভাবিকভাবেই তাদের অস্ত্রের জোগান দেওয়ার বিষয়টি চলে আসতে পারে।
গত শনিবার নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আল-আরাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের প্রধান বুরহান ঘালিউন বিদ্রোহীদের অস্ত্র-সহায়তা দেওয়াবিষয়ক আলোচনা এড়িয়ে চলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, ‘সিরীয় জনগণকে রক্ষা’ করতে ‘যদি অপরিহার্য’ হয়, তখনই কেবল এ ধরনের সহায়তার বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
দলত্যাগী সেনাদের জোট ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বলেছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীনের ভেটোর পর এখন বাশার আল-আসাদ সরকারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে সশস্ত্র লড়াই ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই। রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান।
No comments