বিশেষ সাক্ষাৎকার : মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম-সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী দৃঢ় করতে হবে

এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরবর্তী সময়ে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগ দেন।


পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে তিনি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের পরিচালক, দেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান এবং ২০০৭-০৯ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন মোস্তফা হোসেইন

কালের কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের দায় ও ব্যর্থতা কী?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সফল নয়-এ কথা সরকার নিজেই স্বীকার করেছে। মূল কথা হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রভাব কতটা কার্যকর। আমি মনে করি, বাজারমুখী অর্থনীতিতে চাহিদা ও সরবরাহ মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে আমাদের সংযোগ আছে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গেও। বহির্বিশ্বের পণ্যের সঙ্গে আমাদের পণ্যের দামের সম্পর্ক আছে। বাইরে পণ্যের দাম বাড়লে তার প্রভাব সহজেই আমাদের এখানেও পড়বে।
কালের কণ্ঠ : কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমলে আমাদের এখানে তার প্রভাব পড়ে না কেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : হ্যাঁ, এমন একটা অভিযোগ আছে। আমি সরকারে থাকাকালে বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ করেছিলাম। কয়েকটি পণ্যের সঙ্গে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। যেমন-তেল, চিনি ও ডাল। এসব পণ্যের সঙ্গে বাইরের দামের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ।
কালের কণ্ঠ : এমন পরিস্থিতিতে সরকার কী করতে পারে?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : এ পরিস্থিতিতে সরকারকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি বাজারে ম্যানিপুলেশন থেকে থাকে, তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালেই সুফল আসবে না। গোয়েন্দা বিভাগকে কাজে লাগাতে হবে। দেখতে হবে কেউ গুদামজাত করছে কি না। তারপর অ্যাকশনে গেলে ফল পাওয়া যাবে ভালো। ভোক্তা পর্যায়েও সচেতনতা তৈরি করতে হবে; তা প্রতিরোধ স্পৃহার মতো হতে পারে। যেমন ন্যায্যমূল্যের বেশি দিয়ে আমরা পণ্য ক্রয় করব না। এমন ব্যবস্থা গুদামজাতকারীকে দমিয়ে দিতে পারে। কারণ, একজন ব্যবসায়ী অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাঁর পণ্য গুদামজাত করে রাখতে পারেন না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, সরকারকে বিকল্প সরবরাহ চ্যানেল বের করতে হবে। সে ক্ষেত্রে টিসিবির প্রসঙ্গ আসতে পারে। তবে আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে। খুব একটা সুখকর নয় সেই অভিজ্ঞতা। তবে আরেকটা কাজ করা যায়, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহকর্মীদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা। এতে কিছুটা কাজ হতে পারে।
কালের কণ্ঠ : বলা হয়ে থাকে, সিন্ডিকেটের হাতে বাজার জিম্মি। বিশেষ করে পাঁচটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের হাতে নিত্যপণ্যের বাজার কুক্ষিগত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : কয়েকটি পণ্য আছে, যেগুলোর আমদানিকারকের সংখ্যা কম। পাঁচ থেকে ১০ জন ব্যবসায়ী আমদানি করে থাকেন। তাঁদের ব্যাপারে অভিযোগের প্রসঙ্গটি তলিয়ে দেখার জন্য আমি দায়িত্বে থাকাকালে সিপিডিকে গবেষণার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল। সেখানে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ পায়নি তারা। আমি মনে করি, সেগুলো নিশ্চিত হওয়ার জন্য সরকারের গবেষণা করার প্রয়োজন আছে। দেখতে হবে আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে আমাদের এখানকার দাম কেমন। আমদানিকারকের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়। সে উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। ব্যাপারটা এত সহজ নয়। একটা অসুবিধা হচ্ছে, এসব পণ্য আমদানি করতে গেলে বেশি পরিমাণ আমদানি করতে হয়। অনেক বেশি অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
কালের কণ্ঠ : এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তো সহযোগিতা করতে পারে?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : ব্যাংক কিন্তু নতুন গ্রাহককে বড় অঙ্কের ঋণ দিতে চায় না। তারা দেখে আমদানিকারকের ঋণ পরিশোধের খতিয়ান কেমন। নতুনদের ব্যাংক ঋণ দিতে উৎসাহবোধ করে না। ব্যাংক তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করবে-এটাই স্বাভাবিক।
কালের কণ্ঠ : রোজা শুরু হওয়ার আগে ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, রমজানে দ্রব্যের মূল্য বাড়াবেন না। কিন্তু রমজান শুরু হওয়ার পর দেখা গেল, বাজার ধাই ধাই করে বেড়ে চলেছে। এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : কয়েকটি কারণ হতে পারে। ব্যবসায়ীরা যা বলেছেন তা শুধু মুখের কথা। অন্যদিকেও ভাবতে হবে। ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু স্তর আছে। পাইকারি, খুচরা, মিলার কিংবা আমদানিকারক ইত্যাদি। প্রশ্ন হচ্ছে, আলোচনায় যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা কিন্তু সব কিছু নন। তাঁরা যদি আন্তরিকও হয়ে থাকেন, তার পরও তাঁদের কথামতো কাজ চলবে-এমনটা না-ও হতে পারে। সব জায়গা নিয়ন্ত্রণ করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমদানিকারক-পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে কিছুটা সুফল পাওয়া যাবে। বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। এই যেমন ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে কিছুটা সুফল পাওয়া গেছে। শক্ত আইন করে কিংবা জেলে পাঠিয়ে কিছু হবে না। তবে আইন ভঙ্গকারীর বিচার হোক-এটাও কাম্য।
কালের কণ্ঠ : কেউ কেউ মনে করেন, সিন্ডিকেট প্রথা প্রতিরোধের জন্য সরকারি মালিকানাধীন উৎপাদনব্যবস্থা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে একসময়ের কসকরের মতো ট্রেডিং ব্যবস্থাও থাকা প্রয়োজন। আপনি কী মনে করেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেছি। তবে এখানে একটা কথা কিন্তু থেকেই যায়। আমাদের দেশের সরকারি কয়টা প্রতিষ্ঠান সততার সঙ্গে কাজ করে। কসকর সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা আছে। ১৯৭৩-৭৪ সালের কথা। আমি তখন একটি জেলার প্রশাসক। ওই সময়ই টিসিবির মাল ঢাকায় বিক্রি করে দিয়ে আসত অনেকেই। এমন দুজনকে খোলা বাজার থেকে দ্রব্য ক্রয় করে তারপর ক্রেতাদের মধ্যে বিতরণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সরকারকে দিয়ে ব্যবসা করানো এত সহজ নয়। এবারের কথাই চিন্তা করুন না। টিসিবির মাধ্যমে ছোলা বিতরণের ব্যবস্থা করা হলো। কিন্তু অভিযোগ উত্থাপিত হলো সেই ছোলা পচা।
কালের কণ্ঠ : টিসিবিকে কি কোনোভাবেই যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে না?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : আমার আমলের একটি অভিজ্ঞতার কথা বলছি। চেষ্টা করলাম টিসিবির মাধ্যমে ভোজ্য তেল আমদানি করে বাজার সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা হবে। কিন্তু যে দর পাওয়া গেল, তাতে দেখা গেল প্রাইভেট ব্যবসায়ীদের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ কী? তারা বলল, প্রাইভেট ব্যবসায়ীরা অসততার আশ্রয় নেয়। আমরা সেটা পারব না। এটা একটা উদাহরণ। আসলে প্রাইভেট ব্যবসার ক্ষেত্র আরো বাড়াতে হবে। আমদানিকারকের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
কালের কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করা হয় সর্বত্র। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : দুটো জিনিস দেখতে হবে। সাপ্লাই চেইনে কতজন মধ্যস্বত্বভোগী রয়েছে। একটি স্তর থেকে অন্য স্তরে যেতে কত পার্সেন্ট মার্জিন নিচ্ছে। এগুলো তদন্ত করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাদের বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেমন ধরুন, চট্টগ্রামে ক্রুড অয়েল আমদানি হচ্ছে, সেটা রিফাইন হচ্ছে কুমিল্লায়। এর একটা চেইন আছে। একজন কৃষক যে কৃষিপণ্যটি দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন, তা ভোক্তা পর্যায়ে পেঁৗছাতে পেঁৗছাতে দাম ১০ টাকাও হয়ে যায়। কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পেঁৗছাতে দাম দ্বিগুণ হয়ে যায় স্বাভাবিকভাবে।
কালের কণ্ঠ : একদিকে জ্বালানির দাম বাড়ানো, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি-এটা পরস্পরবিরোধী প্রক্রিয়া নয়? এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে দ্রব্যমূল্য বাড়বে না?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : খুব পরস্পরবিরোধী মনে হয় না। দাম তো বাড়াতেই হবে। ৪৬ হাজার কোটি টাকা এডিপির বাজেট। সরকারের ঋণের পরিমাণ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তার মানে উন্নয়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকা থাকবে এই হিসাব করলে। মোট কথা ভর্তুকি কমাতে হবে সরকারকে, এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা যদি দীর্ঘমেয়াদি উন্নতি চাই, তাহলে এটা করতেই হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রচুর অর্থ দরকার। জ্বালানির দাম বাড়ানোর মাধ্যমে ভর্তুকি কমিয়ে আনা সম্ভব। আপনি বলেছেন মূল্যবৃদ্ধি হবে। উৎপাদন ব্যবস্থায় বিদ্যুতের জন্য কত পার্সেন্ট ব্যয় করতে হয়। মূল্যবৃদ্ধি শুধু বিদ্যুতের জন্য হচ্ছে, এটা সর্বোতভাবে ঠিক নয়। বিদ্যুতের জন্য ৩-৪ শতাংশ ব্যয় বাড়তে পারে। নিশ্চয়ই ২০ শতাংশ নয়। তবে পরিবহনব্যয় কমানোর বিষয়টি গুরুত্বসহ চিন্তা করতে হবে।
কালের কণ্ঠ : অতিরিক্ত দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভেজাল। ভেজাল বন্ধ করতে সরকারের পদক্ষেপ কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : এ বিষয়ে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে মনে হয়। তবে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, যাতে সাপ্লাই চেইনে কোনো অসুবিধা সৃষ্টি হয়। আবার ভেজালবিরোধী অভিযানও চালু রাখতে হবে।
কালের কণ্ঠ : ব্যক্তির ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের সংগতি রাখতে করণীয় কী হতে পারে বলে মনে করেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : ব্যক্তির ক্রয়ক্ষমতা কোত্থেকে আসে? উৎপাদন কেমন, প্রবৃদ্ধি কেমন-এই তো! তবে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে। ক্রয়ক্ষমতা অবশ্যই বাড়ছে। এই যে ৬.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, সেদিকে আমাদের দেখতে হবে। ৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হলেও ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। উৎপাদনের দিকে তাকালে দেখবেন, কৃষি খাতে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। গ্রামীণ ক্ষেতমজুরদের বেতন-মজুরি অনেক বেড়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় সবাই সম্পৃক্ত হতে পারে না। আমাদের জনসংখ্যা এত বেশি যে সবাইকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয় না। ওই সব মানুষকে মূল্যস্ফীতি ভোগান্তিতে ফেলে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে। সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবলয় তৈরি করতে হবে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে তুলনামূলক বাজেট কমেছে। আরেকটা বিষয়, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যাতে দুর্নীতি কম হয়। হোসেন জিল্লুর রহমান এ নিয়ে গবেষণা করেছেন। খাদ্যমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে।
কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে চলছে। অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন। ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নেতিবাচক মনে হচ্ছে। রেমিট্যান্স কমে গেছে। অদূর ভবিষ্যতে এটা বাড়বে বলে মনে হয় না। বৈদেশিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলেও ডিসভার্সমেন্ট কমে গেছে। ১২ বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে আছে। কিন্তু সেভাবে ডিসভার্সমেন্ট নেই। অন্যদিকে আমদানির চাহিদা বাড়ছে। ওভার ইনভয়েস হচ্ছে কি না দেখতে হবে। বিশ্ববাজারে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, তার সঙ্গে আমাদের সামঞ্জস্য আছে কি না দেখতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় ভালো। তার পরও সরকারকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। ঋণের বৃদ্ধির হার ৩৩ শতাংশ। এতে তারল্যসংকট তৈরি হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ১৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ গুনতে হচ্ছে। সরকারকে বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সরকারকে কঠোর কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এতে সাময়িক জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে পারে।
কালের কণ্ঠ : শেয়ারবাজারের অস্থিরতা কিছুটা কাটলেও মাঝেমধ্যেই ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : আমাদের দেশের শেয়ারবাজারের গতি ব্যাখ্যা করা কঠিন। বড় একটা দরপতন হয়েছিল। এটা ছিল অবশ্যম্ভাবী। সপ্তাহখানেক আগে বাড়ল। সেটা অস্বাভাবিক ছিল না। দু-একটি নতুন ইস্যু এসেছে। ছয় হাজার ৫০০ লেবেলে ওঠা স্বাভাবিক। এটা বিপজ্জনক নয়। গত কয়েক দিন যেভাবে দরপতন হলো, এটাকেও আবার যুক্তিতে মেলানো যায় না। দেখতে হবে, অন্য কোনো কারসাজি আছে কি না। এটা তো গুজবভিত্তিক মার্কেট। বিনিয়োগকারীদের অত্যন্ত সাবধানী হতে হবে। আমাদের এখানে ইনডেঙ্ বাড়লে সবাই কিনতে চায়। আবার যখন পতন হতে থাকে, তখন ছেড়ে দিতে চায়। তবে কম্পানি সম্পর্কে অবগত হয়ে কেনা উচিত। আমরা কিন্তু এর উল্টো করি। বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর বিশ্লেষণ হওয়া দরকার। আসলে তেমন কোনো বিশ্লেষণ হয় না।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম : আপনাকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.