একটি আদর্শ কর্মমুখর দিন by ফিউশন রহমান
সকাল ৮: ৩০ ঘুম থেকে জাগরণ।
সকাল ৮: ৪৫ কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি—গোসল করব, নাকি করব না?
সকাল ৮: ৫০ মনে হচ্ছে করা উচিত।
সকাল ৯: ১৫ আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছাড়ার প্রস্তুতি।
সকাল ৮: ৪৫ কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি—গোসল করব, নাকি করব না?
সকাল ৮: ৫০ মনে হচ্ছে করা উচিত।
সকাল ৯: ১৫ আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছাড়ার প্রস্তুতি।
সকাল ৯: ২০ মেইল চেক।
সকাল ৯: ২০ আবার মেইল চেক।
সকাল ৯: ৩০ উমমম...এক কাপ চা খেলে মন্দ হতো না...
সকাল ৯: ৪৫ চা পান পর্ব।
সকাল ১০: ০০ চেক মেইল।
সকাল ১০: ০৫ আবার মেইল চেক। কী অদ্ভুত কাণ্ড, একটি মেইলও আসেনি! দুনিয়ার মানুষজন সব মরে গেল নাকি!
বেলা ১০: ২০ হঠাৎই একরাশ হতাশার পাশাপাশি নিঃসঙ্গতা এসে গ্রাস করে নিল মনপ্রাণ।
বেলা ১১: ০০ বস ইতিমধ্যে অফিসে এসে উপস্থিত। লক্ষণ ভালো নয়।
বেলা ১১: ৩০ আরে ধুর, সবকিছুর দায়িত্ব আমাকেই কেন নিতে হবে? আমি ছাড়া অফিসে আর লোক নেই? যত্তসব ফালতু!
বেলা ১১: ৩৫ অবশেষে একজনকে পাওয়া গেল সামনে।
বেলা ১১: ৪০ এই এদিকে আসো, এই যে দেখছ ফাইল, এটা নিয়ে যাও এক্ষুনি। আর মনে রেখো, কাজ চাই খুব তাড়াতাড়ি। কোনো অজুহাত নয়।
বেলা ১১: ৪৫ এখনই অর্জিত দোষ চাপানোর জন্য কাউকে ধরা জরুরি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আশপাশে কেউ নেই। যা হোক, ফাইলের স্তূপটা একবার নেড়েচেড়ে নেওয়া দরকার।
দুপুর ১২: ০০ নাহ্, মনমেজাজ ভালো নেই। লাঞ্চের আগে আর কোনো কাজ নয়।
দুপুর ১২: ৩০ লাঞ্চের প্রস্তুতি।
দুপুর ১: ০০ লাঞ্চ সম্পন্ন।
দুপুর ১: ১০ যাই, একটা বিড়ি টেনে আসি। ওহ্ গড, এই মরার অফিসে একটা বিড়ি টানার সুযোগও নেই।
দুপুর ১: ৩৫ হুমমম...এবার কাজে ফেরা দরকার।
দুপুর ১: ৫০ মনমেজাজ ভালোই বলা যায়। ফেসবুকে একবার ঢুঁ মারা দরকার। সকাল থেকে কয়টা ফ্রেন্ডস রিকোয়েস্ট জমেছে কে জানে!
বেলা ২: ৩০ লাঞ্চের পর এই এক সমস্যা—খালি ঘুম ঘুম লাগে। অবশ্য মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করা যায় না।
বেলা ২: ৪৫ তার চেয়ে চা পান পর্বটা সেরে নেওয়া যাক।
বেলা ৩: ০০ সহকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কোম্পানির সাম্প্রতিক দুরবস্থা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা। সহকর্মীদের অদক্ষতা ও অলসতাই যে এ জন্য মূলত দায়ী, সে ব্যাপারে অনুসন্ধানী মতামত প্রকাশ।
বিকেল ৪: ০০ তথাকথিত সমস্যা নিয়ে সহকর্মীর প্রবেশ।
বিকেল ৪: ১১ নিজেকে অসম্ভব রকমের ব্যস্ত রাখার অব্যাহত চেষ্টা।
বিকেল ৪: ১২ ব্যাটা যায়নি। তার সমস্যা নাকি খুব গুরুতর। স্টুপিড কোথাকার!
বিকেল ৪: ১৫ অসম্ভব ব্যস্ততা থেকে খানিকটা ছুটি নিয়ে ব্যাটার দিকে একবার তাকানো মনে হয় দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক হবে।
বিকেল ৪: ৫০ না, কোনো সমাধান মেলেনি। কিন্তু সত্যিই ওই ব্যাটার ওপর ভীষণ রাগ লাগছে—কোথাকার কীসব সমস্যায় অহেতুক আমাকে জড়াল।
বিকেল ৪: ৫৫ পার্শ্ববর্তী একটি কক্ষে বসের আকস্মিক সফর। ‘না, এ হতে পারে না। অফিসের কাজে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা না থাকলে...’, ক্ষোভমিশ্রিত স্বরে সহকর্মীর উদ্দেশে উচ্চমাত্রার ধ্বনি বিতরণ।
বিকেল ৫: ০০ বস অবশেষে নিজের কক্ষে ফিরে গেলেন। সাময়িক উদ্বেগের অবসান।
বিকেল ৫: ০৫ সহকর্মীর উদ্ভূত সমস্যার জন্য অফিসের গবেষণা বিভাগকে দায়ী করে অভিমত প্রকাশ।
বিকেল ৫: ১০ ই-মেইল চেক। ইয়েস! অবশেষে একটি মেইল দেখা যাচ্ছে ইনবক্সে।
বিকেল ৫: ১৩ যদিও মেইলটি একটি মামুলি কৌতুক নিয়ে, পুরোনো তো বটেই। তবু নাই মামার চেয়ে কানাও ভালো।
বিকেল ৫: ১৫ টেবিলের ওপরে আঙুলের সাহায্যে তবলাবাদনের মৃদু চেষ্টা।
বিকেল ৫: ২০ অফিস ত্যাগ।
সন্ধ্যা ৭: ২৬ টেলিভিশনটা ছেড়ে দেখা যেতে পারে। এক চ্যানেলে উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর, আরেক চ্যানেলে বরবটির পুষ্টিগুণ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র। ওদিকে আবার সিটিএন চ্যানেলে চলছে ১৯৮২ সালে নির্মিত এক সাদাকালো ছবি রসের বাইদানি। যত্তসব!
রাত ৮: ৩০ উঁহু, দেখার মতো একটা অনুষ্ঠানও যদি থাকত! কেবলই সময়ের অপচয়। সবখানেই অপচয়। মানুষ দিন দিন আরও বেশি অলস হয়ে উঠছে, দায়িত্ববোধ নেই কারও মাঝে। মাঝে মাঝে ভাবি, কী হবে এই বাংলাদেশের। হায়!
রাত ৮: ৪৫ খিদেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। একে আর বাড়তে না দেওয়াই ভালো।
রাত ৯: ৩০ রাতের খাবারের পালা সম্পন্ন।
রাত ১২: ৪৫ এতক্ষণে টিভিতে একটা ভালো অনুষ্ঠান পাওয়া গেল দেখার মতো।
রাত ১: ৪৬ রাত অনেক হয়ে গেল। এবার ঘুমোতে যাওয়া উচিত। সামনে আসছে কঠিন দিন।
সকাল ৯: ২০ আবার মেইল চেক।
সকাল ৯: ৩০ উমমম...এক কাপ চা খেলে মন্দ হতো না...
সকাল ৯: ৪৫ চা পান পর্ব।
সকাল ১০: ০০ চেক মেইল।
সকাল ১০: ০৫ আবার মেইল চেক। কী অদ্ভুত কাণ্ড, একটি মেইলও আসেনি! দুনিয়ার মানুষজন সব মরে গেল নাকি!
বেলা ১০: ২০ হঠাৎই একরাশ হতাশার পাশাপাশি নিঃসঙ্গতা এসে গ্রাস করে নিল মনপ্রাণ।
বেলা ১১: ০০ বস ইতিমধ্যে অফিসে এসে উপস্থিত। লক্ষণ ভালো নয়।
বেলা ১১: ৩০ আরে ধুর, সবকিছুর দায়িত্ব আমাকেই কেন নিতে হবে? আমি ছাড়া অফিসে আর লোক নেই? যত্তসব ফালতু!
বেলা ১১: ৩৫ অবশেষে একজনকে পাওয়া গেল সামনে।
বেলা ১১: ৪০ এই এদিকে আসো, এই যে দেখছ ফাইল, এটা নিয়ে যাও এক্ষুনি। আর মনে রেখো, কাজ চাই খুব তাড়াতাড়ি। কোনো অজুহাত নয়।
বেলা ১১: ৪৫ এখনই অর্জিত দোষ চাপানোর জন্য কাউকে ধরা জরুরি। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আশপাশে কেউ নেই। যা হোক, ফাইলের স্তূপটা একবার নেড়েচেড়ে নেওয়া দরকার।
দুপুর ১২: ০০ নাহ্, মনমেজাজ ভালো নেই। লাঞ্চের আগে আর কোনো কাজ নয়।
দুপুর ১২: ৩০ লাঞ্চের প্রস্তুতি।
দুপুর ১: ০০ লাঞ্চ সম্পন্ন।
দুপুর ১: ১০ যাই, একটা বিড়ি টেনে আসি। ওহ্ গড, এই মরার অফিসে একটা বিড়ি টানার সুযোগও নেই।
দুপুর ১: ৩৫ হুমমম...এবার কাজে ফেরা দরকার।
দুপুর ১: ৫০ মনমেজাজ ভালোই বলা যায়। ফেসবুকে একবার ঢুঁ মারা দরকার। সকাল থেকে কয়টা ফ্রেন্ডস রিকোয়েস্ট জমেছে কে জানে!
বেলা ২: ৩০ লাঞ্চের পর এই এক সমস্যা—খালি ঘুম ঘুম লাগে। অবশ্য মানসিক সুস্থতার জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করা যায় না।
বেলা ২: ৪৫ তার চেয়ে চা পান পর্বটা সেরে নেওয়া যাক।
বেলা ৩: ০০ সহকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কোম্পানির সাম্প্রতিক দুরবস্থা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা। সহকর্মীদের অদক্ষতা ও অলসতাই যে এ জন্য মূলত দায়ী, সে ব্যাপারে অনুসন্ধানী মতামত প্রকাশ।
বিকেল ৪: ০০ তথাকথিত সমস্যা নিয়ে সহকর্মীর প্রবেশ।
বিকেল ৪: ১১ নিজেকে অসম্ভব রকমের ব্যস্ত রাখার অব্যাহত চেষ্টা।
বিকেল ৪: ১২ ব্যাটা যায়নি। তার সমস্যা নাকি খুব গুরুতর। স্টুপিড কোথাকার!
বিকেল ৪: ১৫ অসম্ভব ব্যস্ততা থেকে খানিকটা ছুটি নিয়ে ব্যাটার দিকে একবার তাকানো মনে হয় দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক হবে।
বিকেল ৪: ৫০ না, কোনো সমাধান মেলেনি। কিন্তু সত্যিই ওই ব্যাটার ওপর ভীষণ রাগ লাগছে—কোথাকার কীসব সমস্যায় অহেতুক আমাকে জড়াল।
বিকেল ৪: ৫৫ পার্শ্ববর্তী একটি কক্ষে বসের আকস্মিক সফর। ‘না, এ হতে পারে না। অফিসের কাজে একাগ্রতা ও নিষ্ঠা না থাকলে...’, ক্ষোভমিশ্রিত স্বরে সহকর্মীর উদ্দেশে উচ্চমাত্রার ধ্বনি বিতরণ।
বিকেল ৫: ০০ বস অবশেষে নিজের কক্ষে ফিরে গেলেন। সাময়িক উদ্বেগের অবসান।
বিকেল ৫: ০৫ সহকর্মীর উদ্ভূত সমস্যার জন্য অফিসের গবেষণা বিভাগকে দায়ী করে অভিমত প্রকাশ।
বিকেল ৫: ১০ ই-মেইল চেক। ইয়েস! অবশেষে একটি মেইল দেখা যাচ্ছে ইনবক্সে।
বিকেল ৫: ১৩ যদিও মেইলটি একটি মামুলি কৌতুক নিয়ে, পুরোনো তো বটেই। তবু নাই মামার চেয়ে কানাও ভালো।
বিকেল ৫: ১৫ টেবিলের ওপরে আঙুলের সাহায্যে তবলাবাদনের মৃদু চেষ্টা।
বিকেল ৫: ২০ অফিস ত্যাগ।
সন্ধ্যা ৭: ২৬ টেলিভিশনটা ছেড়ে দেখা যেতে পারে। এক চ্যানেলে উচ্চাঙ্গসংগীতের আসর, আরেক চ্যানেলে বরবটির পুষ্টিগুণ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র। ওদিকে আবার সিটিএন চ্যানেলে চলছে ১৯৮২ সালে নির্মিত এক সাদাকালো ছবি রসের বাইদানি। যত্তসব!
রাত ৮: ৩০ উঁহু, দেখার মতো একটা অনুষ্ঠানও যদি থাকত! কেবলই সময়ের অপচয়। সবখানেই অপচয়। মানুষ দিন দিন আরও বেশি অলস হয়ে উঠছে, দায়িত্ববোধ নেই কারও মাঝে। মাঝে মাঝে ভাবি, কী হবে এই বাংলাদেশের। হায়!
রাত ৮: ৪৫ খিদেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। একে আর বাড়তে না দেওয়াই ভালো।
রাত ৯: ৩০ রাতের খাবারের পালা সম্পন্ন।
রাত ১২: ৪৫ এতক্ষণে টিভিতে একটা ভালো অনুষ্ঠান পাওয়া গেল দেখার মতো।
রাত ১: ৪৬ রাত অনেক হয়ে গেল। এবার ঘুমোতে যাওয়া উচিত। সামনে আসছে কঠিন দিন।
No comments